|
---|
শরিফুল ইসলাম, নদীয়া: দলীয়স্তরেই সর্বজন গ্রাহ্য প্রার্থী খুঁজতে সময় চলে যাওয়ায় এমনিতে প্রার্থী ঘোষণায় বিড়ম্বনা। সম্ভাব্য দীর্ঘ তালিকার মধ্য থেকে অনেক কে বাদ দেওয়ার পর শেষমেশ রানাঘাটে মুকুট মণি অধিকারী এবং কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে কল্যাণ চৌবের নাম ঘোষণা করেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।
দলীয় সূত্রের খবর, জেলার দুটি আসনকে পাখির চোখ ধরে নিয়ে এগোলেও প্রার্থী নিয়ে কোথাও অসন্তুষ্টি, কোথাও, বা আইনি জটলা বিজেপির যেন পিছু ছাড়ছে না।
দলের অন্দরে তো বটেই এমনকি কৃষ্ণনগর লোকসভার অভ্যন্তরে গ্রাম থেকে শহর, সর্বজন শ্রদ্ধেয় এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশীতিপর সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়ের (জুলু বাবু) পরিবর্তে কল্যাণ চৌবে কে প্রার্থী করায় দলের ভিতরে ভিতরে গুঞ্জন চলছিলই।
যদিবা, সেক্ষেত্রে, কেন্দ্রীয় বিজেপির স্বতন্ত্র গোপন রিপোর্টের দোহায় দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে দল।
এবার আবার, রানাঘাট কেন্দ্রের বিজেপির ডাক্তার প্রার্থী মুকুট মণি অধিকারী কে কেন্দ্র করে বিপাকে দল।
জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের করুন সূত্রে জানা যায়, যেহেতু , ২০১৬’র জন-স্বাস্থ্য সম্পর্কিত মেডিকেলের নিয়ম অনুযায়ী বাদকুল্লা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্তব্যরত অবস্থায় পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ হয় নি, সেই প্রেক্ষিতে মুকুট মণির ইস্তফার বিষয় টি রাজ্য স্বাস্থ্য ভবন না মঞ্জুর করে দিয়েছেন।
স্বাস্থ্য ভবন থেকে কমিশনারের প্রেরিত চিঠিটি, মঙ্গলবার নদীয়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারীকের মাধ্যেমে বিজেপির জেলা নেতৃত্বের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পর পরই দলীয় স্তরে জল ঘোলা শুরু হয়ে যায়।
বিজেপি সূত্রের খবর, বিষয় টি নিয়ে তাঁরা ইতিমধ্যে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন।
জেলা বা রাজ্য নেতৃত্ব যতই দাবি করুন দলীয় প্রচারে কোনো আলস্য নেই, বা প্রার্থী নিয়েও দলে কোনো সমস্যা নেই তবুও , ঘোষিত ডাক্তার প্রার্থী বা ক্রীড়াবিদ প্রার্থীকে নিয়ে প্রচারে যে একটা অনিশ্চয়তার ছায়া তৈরি হচ্ছে, এটা এই ক’দিনেই স্পষ্ট ,মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।
এদিকে, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব , নদীয়ার আসন দুটিতে যাঁকে মূল ভরসা করে এগিয়েছিলেন, হাতের তালুর মতন চেনা জেলায়, আইনগত কারণে ঢুকতেই পারছেন না বঙ্গবিজেপির সেই কান্ডারী মুকুল রায়।
ইতিমধ্যে, বিজেপির দুই ঘোষিত প্রার্থী কে নিয়ে নির্বাচনী প্রচারের দৌড়ে বিজেপির জেলা থেকে শীর্ষ নেতৃত্ব মুখে যাই-বলুন, কার্যত বেশ খানিকটা পিছিয়ে পড়েছেন, আলোচনাটা দলেরই এক অংশের।
তাই, অগ্রিম সমীক্ষা নয়, নদীয়ার আসন দুটি সঙ্গে নিয়ে বিজেপির দিল্লি অভিযান আদৌ সম্ভব কি না তার জন্য আপাতত আগামী মে’ তেইশ পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হচ্ছে।
আজ, রানাঘাট সংরক্ষিত কেন্দ্রের রাজ্য শাসক দলের প্রার্থী তৃণমূলের রূপালী বিশ্বাস কৃষ্ণনগর জেলা নির্বাচন আধিকারিকের করণে তাঁর প্রার্থী পদ মনোনয়নের আবেদন পত্র জমা দিলেন।
রূপালী দেবীর সঙ্গে ছিলেন রাজ্য তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক, শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য, দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি রানাঘাটের বিধায়ক বর্ষীয়ান শংকর সিংহ, মন্ত্রী রত্না ঘোষ কর, জেলা সভাধিপতি রিক্তা কুন্ডু, নিমাই বিশ্বাস, সুব্রত কর ও অন্যান্য জেলা নেতৃত্ব।
রানাঘাট কেন্দ্রের তৃণমূলের প্রার্থী রূপালী বিশ্বাসের সমর্থনে এদিন শান্তিপুর সহ অপর ছটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে কাতারে কাতারে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কর্মী সমর্থক, অনুরাগী জেলা নির্বাচন আধিকারিকের করণের সম্মুখে হাজির ছিলেন।
রাজ্য যুব তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক অরিন্দম ভট্টাচার্য জানালেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সার্বিক উন্নয়নের নিরিখে জেলার দুটি আসন তো বটেই আমাদের লক্ষ্য রাজ্যে বিয়াল্লিশে বিয়াল্লিশ।
উল্লেখ্য, এদিন রূপালীর সঙ্গেই মনোনয়ন পেশ করেন কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের তৃণমূলের অপর প্রার্থী মহুয়া মৈত্র।