উঃ চব্বিশ পরগনা জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদের উদ্যোগে বারাসতে অরন্য সপ্তাহ উদযাপন

রেশমিকা ইয়াসমিন, বারাসাত ; পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অরন্য সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা বার্তায় বলেন প্রাকৃতিক সম্পদ ও জীব-বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ আমাদের প্রিয় বাংলা। রাজ্য সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় রক্ষিত হচ্ছে প্রাকৃতিক সম্পদের এই অতুলনীয় ভাণ্ডার অরণ্য রক্ষা ও বনসৃজনের মধ্যে দিয়ে বৃদ্ধি করা হচ্ছে সবুজের আচ্ছাদন। ‘সবুজশ্রী’-র মত বিভিন্ন পরিবেশবান্ধব কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে ত্বরান্বিত হচ্ছে রাজ্যবাসীর আর্থসামাজিক বিকাশ।

    পরিকল্পিত সবুজায়ন ও জীব বৈচিত্রের সংরক্ষণই প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে প্রতিরোধ করে। এই লক্ষ্যে রাজ্যের তটভূমিতে রোপণ করা হয়েছে ২০ কোটি ম্যানগ্রোভ চারা এই জৈব আচ্ছাদন আগামীদিনে ‘আমফান’, ‘ফণী’, ‘ইয়াস’, ‘রেমাল’-এর মতো ঘূর্ণিঝড়ের ভয়ঙ্কর রোষ থেকে বাংলাকে রক্ষা করবে। জলবায়ু পরিবর্তনকে সামাল দিতে রূপায়িত হতে চলেছে ৮০০ কোটি টাকার বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ প্রকল্প।
    এরই সঙ্গে, বন্যজন্তুর আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সুরাহা দিতে, প্রাণহানির ২৪ ঘন্টার মধ্যে মৃতের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। নিহত ব্যক্তির পরিবারের এক জনকে বনদপ্তরে নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের গাঁঙ্গুটিয়া ও ভুটিয়াবস্তির পরিবারদের ১৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে বাইরের ‘বনছায়া’ গ্রামে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গে জঙ্গলমহল ও অন্য জেলাগুলিতে হাতিদের লোকালয়ে চলে আসার প্রবণতাকে কমাতে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ।
    আমরা বিশ্বাস করি, ঐতিহ্যময় অরণ্যকে রক্ষা করতে, বন্যপ্রাণকে বাঁচিয়ে রাখতে আর অরণ্য ও মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে আরও নিবিড় করে তুলতে আমাদের এই সকল উদ্যোগ নিশ্চয় সফল হবে। তাই আসুন, আসন্ন বনমহোৎসব উদ্‌যাপনের প্রাক্কালে, সকলে মিলে আরও একবার সবুজের শপথ নিই, বাংলাকে আরও শ্যামল, আরও সুন্দর, আরও সমৃদ্ধশালী করে তোলার অঙ্গীকার গ্রহণ করি।
    বনমোহৎসবে মহাসমারোহে উদযাপন করলো উঃ চব্বিশ পরগনা জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদের বন ও ভূমি স্থায়ী সমিতি। বৃহস্পতিবার বারাসত শহর লাগোয়া সত্যভারতী বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি,গাছ বিতরণ ও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও ট্যাবলো সহযোগে অসাধারণ মনোঞ্জ পরিবেশ তৈরি করে যা নজরকাড়ে পথচলিত মানুষের। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানের তাৎপর্য তুলে ধরেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্রী নারায়ন গোস্বামী। তিনি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন উক্ত দপ্তরের আধিকারিক ও কর্মাধ্যক্ষ একেএম ফারহাদ কে। বিধানসভায় সরকার পক্ষের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ বলেন বনমোহৎসবের মধ্যে দিয়ে গাছের প্রতি নিবিড় সম্পর্ক তৈরি হয়।তাই পরিবেশ বাঁচাতে এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে। উক্ত কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলাশাসক ডঃ আরাক্ষা ভাস্কর, জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি বীনা মন্ডল, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সচিব ডঃ প্রিয়দর্শিনী মল্লিক,মধ্যমগ্ৰাম পুরসভার চেয়ারম্যান নিমাই ঘোষ, মুখ্য বনাধিকারী শ্রী অভিজিৎ কর,অতিরিক্ত বনাদিকারিক আকিব আলম,বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌর সুন্দর গোস্বামী সহ বিভিন্ন ধর্মীয় গুরু, বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকা ছাত্র ছাত্র-ছাত্রী প্রমুখ।
    অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন জেলা পরিষদের বন ও ভূমি স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ একেএম ফারহাদ। তিনি বলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় প্রতি বছরের ন্যায় এবারও অত্যন্ত সফলভাবে সকলের সহযোগিতায় সম্পন্ন হলো। তিনি বলেন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে সবুজায়নের লক্ষ্যে বছর পর গাছ রোপনের সাথে সাথে সেগুলির পরিচর্যায় নিয়মিত বনকর্মীরা খোঁজখবর রেখে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী ভাবনাকে পাথর করে আমরা সুন্দরবনের বাদামন অঞ্চলে জীব বৈচিত্র রক্ষা করতে অভিনব পদ্ধতিতে কাজ করে যাওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে জেলায় ইকো আরবান ভিলেজ ইকো টুররিজিন পার্ক ভেষজ উদ্ভিদ বিভূতিভূষণ অভয়ারণ্য সহ যে সমস্ত ঐতিহ্যমন্ডিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য গুলি আছে তাকে আরো বেশি সৌন্দর্যজন এর মধ্যে দিয়ে পরিবেশকে বাঁচিয়ে রাখাই মূল লক্ষ্য। অনুষ্ঠানটি সর্বাঙ্গীণ সুন্দর করে তুলতে যেভাবে দপ্তরের আধিকারিক মন সহায়ক কর্মী সহ সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা পাওয়া গেছে এর জন্য বন ও ভূমি দপ্তর অত্যন্ত কৃতজ্ঞ বলে কর্মাধ্যক্ষ ফারহাদ জানায়।