NRC ও CAB আতঙ্কে হৃদ আক্রান্ত, নার্সিংহোমে শয্যাসায়ী চাঁচলের বাসিন্দা

উজির আলী, নতুন গতি, চাঁচল:মালদহের চাঁচল ২ নং ব্লকের ধানগাড়া জিপির জিয়াগাছীর বাসিন্দা দিনমজুর আব্দুর রহমান (৫৫) বেশ কিছুদিন ধরেই দুশ্চিন্তায় ছিলেন। এনআরসি ও সি.এ.বি বিল সংক্রান্ত খবর, ভিডিয়ো দেখে নিজের ও পরিবারের সকলের নথি বারবার দেখছিলেন তিনি।

    সম্প্রীতি বুধবার রাজ্যসভায় পাশ হয়েছে নাগরিকত্ব বিল। এনিয়ে উত্তাল সারা দেশ। বিল পাশ হওয়াতে উঃপূর্ব ভারতে বিক্ষোভ, অবরোধের সাথে পশ্চিমবঙ্গেও ছোঁয়া লেগেছে।

    জানা যায়, নাগরিকত্ব বিল পাশ হওয়ার পরের রাতে গ্রামের একটি চায়ের দোকানে এই নিয়ে আলোচনার আসর হয়। চায়ের দোকানের আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন আব্দুর সাহেবও। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হৃদরোগে তক্ষনাৎ চায়ের দোকানে লুটিয়ে পড়েন ওই ব্যক্তি। মুহুর্তে স্থানীয়রা আব্দুর সাহেব কে চাঁচল সুপার ষ্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যায়।
    পরিবার সূত্রে খবর, আশঙ্কাজনক অবস্থা থাকায় শুক্রবার সকালে মালদার একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে নিয়ে যায় পরিবার। পরিবার জানায়, হৃদরোগের সাথে মস্তিষ্কে রক্ত জমেছে। নাসিং হোমের চিকিৎসক ওই ব্যক্তির আয়ু নির্ধারিত করছে বলে খবর। তবে ইশ্বরের কৃপায় যা হয়।

    পুত্র আব্দুল অকিল জানান, বাবা আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে উন্নত চিকিৎসার জন্যে এস.এস.কে.এম(পি.জি) কলকাতাতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। শনিবার কলকাতা যাত্রাকালে বহরম বিক্ষোভ প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। যানবাহন যানজোটের কারনে আবার ফিরে আসি মালদার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে। এখন ওখানেই চিকিৎসাধীন।

    পরিবারে রয়েছে তিন কন্যা ও তিন পুত্র সন্তান।বাবার অসুস্থতায় বিমর্ষে রয়েছেন তারা। স্ত্রী মার্জিনা বিবি বলেন, এন আর সি নিয়ে প্রায় আলোচনা করতেন বাড়িতে। পরিবারের সকলের নথি যাচাই করতেন। তবে সামীর ভোটার কার্ডে এ.বি রহমান ও আধার কার্ডে আব্দুর রহমান। তাই আতঙ্কে ছিলেন তিনি। পুত্ররা বাবাকে সান্ত্বনা দিতেন শুনেছি আমরা প্রায় সপ্তপুরুষ ধরে বসবাস করছি ভারতে, ভয় কিসের।
    তবে এমনটা আক্রান্তের সম্মুখীন হবে ভেবে উঠতে পারছে না পরিবার।
    পড়শি ইমরুল সেখ, গ্রামবাসী সহ পরিবারে দাবী, নাগরিকত্ব বিল পাশ হওয়া থেকে শুরু করে এন আর সি আতঙ্কের প্রভাব পরেছে আব্দুর রহমানের উপর।

    তবে এই আতঙ্কের থাবা বসিয়েছে মালদহ জেলার গ্রামাঞ্চল গুলিতেও দেখা দিচ্ছে। এনআরসি নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আগে বারবার জানিয়েছেন, শুক্রবার সংবাদ মাধ্যমেও বলেন এ রাজ্যে এনআরসি করতে দেওয়া হবে না, সি এ বি মানব না! সি এ বির বিরোধীতায় সোমবার থেকে পথে নামছেন মুখ্যমন্ত্রী বলে খবর।

    এন.আর.সি ও সি.ত্র.বি আতঙ্কে আক্রান্ত আব্দুর রহমানের বিষয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মহঃ জহির বলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই আতঙ্কে ছিলেন ওই ব্যক্তি। নথি সংশোধনে আমার কাছে বার বার আসছিলেন। এদিন শুনি সি এ বি বিল পাশ নিয়ে বৃহস্পতিবার এলাকার চায়ের দোকানে আলোচনার মাঝেই হৃদরোগ ও মস্তিষ্ক ঘাতনে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।