|
---|
নিজস্ব প্রতিবেদক:- জমি মাফিয়া’ শব্দের দাপট এবং দামামা কোনওভাবেই যাতে আর শিলিগুড়ি শহরে শোনা না যায় সেজন্য তৎপর পুলিশ। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক বৈঠকে বলেছেন, “অপরাধের সঙ্গে যুক্তদের কোনওভাবেই যাতে রেয়াত না করা হয় সেজন্য পদক্ষেপ করতে।” এক্ষেত্রে রাজনৈতিক রং যেন দেখা না হয় সেজন্যও নির্দেশ দেন মমতা। এরপরেই ধরপাকড় শুরু হয়েছে শিলিগুড়িতে। জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ির একাধিক থানায় ‘জমি মাফিয়া’-দের নামে জমা পড়েছে চুরি চুরি অভিযোগ। আর অভিযোগগুলির প্রেক্ষিতেই তদন্তে নেমেছে পুলিশ। অভিযোগকারীদের একাংশের কথায়, নদীর চর, সরকারি জমি দখল করে নকল কাগজ বানিয়ে তা সাধারণ মানুষদের বিক্রি করার ক্ষেত্রে একটি চক্র কাজ করছে। শিলিগুড়ির আনাচ কানাচ যাতে এই জমি মাফিয়াদের হাত থেকে মুক্ত হয় সেজন্য তৎপর পুলিশ।সম্প্রতি শিলিগুড়িতে জমি দখল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশকে নির্দেশ দেন জমি দখল এবং অবৈধ ভাবে জমি যারা বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে। সেই নির্দেশ পাওয়ার পরেই এই প্রক্রিয়া শুরু করেছে থানাগুলি। গত কয়েকদিনে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় বেআইনিভাবে জমির কারবারিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে প্রায় ৫০ জনকে গ্রেফতার করেছে বিভিন্ন থানা। এরমধ্যে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি বিধানসভা এলাকায় মূলত জমি দখলের ঘটনা সবথেকে বেশি, জানা গিয়েছে এমনটাই। জমি দখল রুখতে এনজেপি, ভক্তিনগর থানা এই বিধানসভা এলাকায় বিশেষ পুলিশি নজরদারি শুরু হয়েছে।যদিও এই গ্রেফতারি প্রসঙ্গে তোপ দেগেছেন BJP বিধায়ক শিখা চ্যাটার্জি। বেআইনি জমি বিক্রির মামলায় ধৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি। তাঁর কথা, “যাঁদের দোষ নেই তাঁদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। অথচ বেআইনিভাবে জমির কারবারে যুক্ত রাঘববোয়ালদের ধরা হচ্ছে না। যারা প্রকৃত জমি মাফিয়া তাদের ধরা হচ্ছে না। খেটে খাওয়া মানুষকে ধরা হচ্ছে।” অন্যদিকে, দু’দিন আগে অংশুমান বিশ্বাস নামক এক ব্যক্তি জমি দখলের অভিযোগে এনজেপি থানায় অভিযোগ করেন। তাঁর অভিযোগপত্রে CPIM নেতা জীবেশ সরকারের নাম রয়েছে বলে সূত্রের খবর। বর্তমানে জীবেশ সরকার বামফ্রন্টের রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য। ঘটনার পর চক্রান্ত ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটে যান CPIM নেতৃত্বে।এই ঘটনার নেপথ্যে তৃণমূলের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন বামফ্রন্টের জেলা সম্পাদক। এদিকে এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান অলক চক্রবর্তী জানান, এই ঘটনার তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। কেউ অভিযোগ জানালে তা পুলিশ খতিয়ে দেখবে।তবে রাজনৈতিক তরজার মধ্যে জমি মাফিয়াদের রুখতে সক্রিয় পুলিশ। এই প্রসঙ্গে শিলিগুড়ির এসিপি রাজেন ছেত্রী জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার পর ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে ৪০ জন জমির অবৈধ কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। লাগাতার অভিযান ও গ্রেফতারি চলছে।