|
---|
নতুন গতি নিউজডেস্ক: ঈইংলিশ বাজার ও ওল্ড মালদা পৌরসভার ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে সাহাপুর নিকটবর্তী রায়পুর গ্রাম। ওই গ্রামের আম বাগানে ভিন্ন জায়গা থেকে এসে বসবাস করছেন কয়েকটি যাযাবর পরিবার। তারা প্রধানত স্থায়ীভাবে কোথাও বসবাস করেন না। এক জায়গায় সর্বাধিক দুই মাস পর্যন্ত বসবাস করেন। কিন্তু দেশজুড়ে লক ডাউন চলার কারণে তারা আটকে পড়েছে এবং প্রায় তিন মাস ধরে আম বাগানে পলিথিনের কুঁড়ে ঘরে বসবাস করছেন। যদি ও তাদের কাছে পলিথিনের ঘরে বসবাস করা স্বাভাবিক কারণ তারা জানালেন বাপ- দাদা থেকে শুরু করে সকলেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এমনি ভাবেই বসবাস করেছেন। তবে তারা ভিখারী নয়। তারা প্রধানত কাজকর্ম করে জীবন-জীবিকা অর্জন করেন। তাদের প্রধান কাজকর্ম হল তেল-তাবিজ ও নানা ধরনের জরিবুটি বিক্রি করে জীবনজীবিকা নির্বাহ করা এবং মহিলারা কান পরিষ্কার ও নখ কেটে অতিরিক্ত আয় করেন। কিন্তু লকডাউনের ফলে তাদের জীবন জীবিকা পুরোপুরি ভাবে বন্ধ ও কোন উপার্জন নেই। তাদের কাছে সরকারি কোন নথিপত্র না থাকায় রেশনের চাল ও নানা সরকসরি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাদের মধ্যে অধিকাংশই সরকারি সুযোগ সুবিধা প্রত্যাশা করেন না ও অবগত নন। তাই তাদের বর্তমানে পুরোপুরি নির্ভর করতে হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গুলোর ওপর। তারা জানালেন প্রায় দুই মাস ধরে নানা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে সহযোগিতা করছেন। বর্তমানে প্রায় 16 টি যাযাবর পরিবার রয়েছে ও কয়েকটি পরিবারের সদস্য সংখ্যা দশ জনেরও বেশি। একটি মাত্র পলিথিন এর নিচে গাদাগাদি করে সর্বক্ষণ বসবাস করছেন আম বাগানের নিচে। ঝড়, ঝঙ্কার, তুফান অথবা আম ফানের মত বিধ্বংসী বিপর্যয়েও তারা গাছের নিচে পলিথিনের কুঁড়ে ঘরেই ছিলেন। বংশ পরম্পরা বসবাস করার কারণেই নানা ধরনের বিপর্যয়, বৃষ্টিবাদল প্রভৃতি তাদের নিত্যসঙ্গী। তাই তাদের কঠিন পরিস্থিতিতেও ভয় লাগে না বলে অভিমত প্রকাশ করেন বানজারাদের একজন সদস্য। ষোলটি পরিবারে রয়েছে অসংখ্য শিশু, যাদের বয়স কয়েক মাস থেকে কয়েক বছর। গত কয়েকদিন আগে সবার খবরের জেরে জানতে পারেন পরিবার গুলোর কথা মালদা জেলা আওয়াজ কমিটি ও এসো বন্ধু হই সংস্থার সদস্যগণ। আজকে মালদা জেলা আওয়াজ কমিটির সম্পাদক অধ্যাপক ডঃ মুহাম্মদ ইসমাইল ও উপদেষ্টা কমিটির সদস্য নইমুদ্দিন সেখ সহ এসো বন্ধু হও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদিকা শ্রাবণী পাল ও সভাপতি শ্রীমন্ত মৈত্রের নেতৃত্বে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে তুলে দেন ঐ অসহায় যাযাবর গরিব পরিবার গুলোর হাতে। খাদ্য সামগ্রী হিসাবে তুলে দেওয়া হয় চাল, ডাল, আলু, সোয়াবিন, মাস্ক, সাবান, দুধের প্যাকেট, বিস্কিটের প্যাকেট প্রভৃতি।বর্তমান পরিস্থিতির কাছে হার মেনে একজন সদস্য জানান তারাও সরকারি সহযোগিতা পেলে স্হায়ী ভাবে বসবাস করেন এবং ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা করিয়ে ব্যবসা, বাণিজ্য, চাকরি জন্য উৎসাহিত করবেন। অধ্যাপক ডঃ ইসমাইল জানান প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিঙ্গানের যুগে তেল, তাবিজ, জড়িবুটির বাজার না থাকায় সংসার চালানোর আয় হয় না এবং বর্তমানে তাদের মধ্যে বহু পরিবার ভ্যান, রিক্সা, আটো প্রভৃতি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
মৈত্র বাবু বলেন, সরকারি তরফে উদ্যোগ নিয়ে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা ও আবাস যোজনার আওতায় তাদের স্হায়ী গৃহ দেওয়া দরকার।