|
---|
মহিউদ্দীন আহমেদ : পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের ছোড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে বসন্তকালের আগে, গ্রামরক্ষী বাহিনীর হেমন্তের শ্যামা পূজা উপলক্ষ্যে এদিন রক্তদানের আয়োজন করা হয়েছিল। পুলিশ কর্মীরা ছাড়াও এলাকার বহুমানুষ এদিন রক্তদান করেন। ৮৪ জন রক্তদাতা এদিনের শিবিরে রক্ত দেন। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশের ডিএসপি ডিএনটি সুব্রত মণ্ডল, আইসি আউশগ্রাম আব্দুল রব খান, আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার, ওসি ছোড়া ত্রিদিব রাজ, পদ্মশ্রী শিক্ষক সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়, বিশিষ্ট সমাজসেবী আব্দুল লালন সহ আরও অনেকে। এদিন রক্ত দাতাদের হাতে একটি করে চারা গাছ তুলে দেওয়া হয় ওসি ত্রিদিব রাজের পক্ষ্য থেকে।
সেইসঙ্গে তিন দিনের এই কালী পুজোর উৎসবে ৩০ টির মতো গাছ লাগানো হয় থানা এলাকায়। নরনারায়ণ ও দরিদ্রদের সেবা এবং পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র এলাকার দরিদ্রদের কম্বল, বস্ত্রও দান করা হয়।
সেইসঙ্গে সামনের শীতে আউশগ্রামের ছোড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের জঙ্গল এলাকায় যাতে পাতা ঝরার সময়ে কেউ যেন আগুন না লাগিয়ে দেয় জঙ্গলের এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়েও একটি সচেতনতা শিবির করা হয় এদিন। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ঘোষণা করা ছোড়া একটি প্রস্তাবিত থানা। যা পাণ্ডুরাজার ঢিবির ঐতিহাসিক নিদর্শন ক্ষেত্রের পাশে বারাসতের ডাঙায় ২০১২ সালে স্থাপিত হয়, নতুন বিল্ডিং করে। তার আগে প্রাচীন ফাঁড়িটি ছিল ফাঁড়ি জঙ্গল মৌজায়। পরে ১৯৮৮ সালে চলে আসে রামনগরে। সেখান থেকেই ২০১২ সালে আসে বারাসতের ডাঙায়। এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে থানা ঘোষণা না হলেও, থানার কাঠামো নিয়েই এটি একটি বৃহত্তর এলাকা নিয়ে চলে। অমরপুর জি পি, দেবশালা জি পি র একটা অংশ, রামনগর জি পি এবং ভেদিয়া জি পি র সম্পূর্ণ এলাকা এই তদন্ত কেন্দ্রের মধ্যে পরে। সেই ইতিহাসখ্যাত তদন্ত কেন্দ্রের
সেখানেই রয়েছে জন চিপের আমলের প্রাচীন কালী। একদা এই এলাকার দখলদারি ছিল জন চিপের অধীনে। তিনি বীরভূমের সুরুলের চিপকুঠিতে থাকতে থাকতেই গড়জঙ্গলের এই অংশের ক্ষমতায়ন ধরে রেখে ছিলেন শোনা যায়।
এবার প্রাচীন সেই শ্যামা পুজো উপলক্ষে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করল ছোড়া পুলিশ স্টেশন। পুলিশ ও গ্রাম রক্ষী বাহিনীর উদ্যোগে এই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। এদিনের এই রক্তদান শিবিরে উপস্থিত ছিলেন আউশগ্রাম বিধানসভার বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার,পূর্ব বর্ধমান জেলার ডি,এস,পি(ডিএনটি) সুব্রত মন্ডল, লেখক রাধামাধব মণ্ডল, আউশগ্রাম থানার আইসি আব্দুর রব খান, ছোড়া ফাঁড়ির ওসি ত্রিদিব রাজ, বিশিষ্ট সমাজসেবী শেখ আব্দুল লালনসহ এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। এদিনের এই শিবিরে পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে শতাধিক মানুষ রক্তদান করেন বলে জানা গিয়েছে। উদ্যোক্তাদের তরফ থেকে প্রত্যেক রক্তদাতার হাতে একটি করে গাছের চারা তুলে দেওয়া হয়। বিশিষ্ট অতিথিরা এদিন থানা চত্বরে বেশকিছু গাছের চারা লাগান।পাশাপাশি পুলিশের পক্ষ থেকে গাছ লাগানোর বার্তা দেওয়া হয় সাধারণ মানুষকে। এদিন বোলপুর ব্ল্যাড ব্যাংকের সহযোগিতায় এই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। বিশিষ্ট লেখক রাধামাধব মণ্ডল বলেন,আমরা জঙ্গল মহল এলাকার বাসিন্দা। আমার গ্রামের বাড়ি এমন এলাকায়। জঙ্গল বাঁচানোর জন্য পুলিশ, প্রশাসনের এমন অভিনব উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাতেই হয়। থানার ওসি র পক্ষ থেকে প্রত্যেক রক্তদাতাকে একটি করে গাছ লাগানোর বার্তা দেওয়া হচ্ছে,পাশাপাশি জঙ্গলে আগুন না লাগানোর বার্তা দেওয়া হলো এটা বিরাট উদ্যোগ। আমরা চাই এই আউশগ্রাম সবুজ অরণ্যে ভরে উঠুক। জঙ্গলে ময়ূরের সংখ্যা বেড়েছে। এবার একটু বনদপ্তর এগিয়ে এলেই হবে।