নাবালিকা পরিচারিকাকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠল সরাসরি কর্মী দম্পতির বিরুদ্ধে

নিজস্ব সংবাদদাতা; মালদা: ভিন রাজ্যের এক নাবালিকা পরিচারিকার ওপর নির্যাতনের অভিযোগ উঠল মালদা শহরের সরকারি কর্মী দম্পতির বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে ইংরেজবাজার থানার ১৮ নং ওয়ার্ডের রামকৃষ্ণপল্লী এলাকায়।

    শুক্রবার অত্যাচারিত ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করে ইংরেজবাজার মহিলা থানায় নিয়ে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এরপরই পুলিশের কাছে সরকারি কর্মচারী দম্পতির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।

    চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি সাহায্য নিয়ে পুলিশ আপাতত ওই নাবালিকাকে আদালতের মাধ্যমে সরকারি হোমে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে। পাশাপাশি অভিযুক্ত ওই দম্পতি ঘটনার পর থেকে পলাতক। তাদের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।

    নির্যাতিতা ওই নাবালিকা সোনেকা যাদব পুলিশ ও চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটিকে অভিযোগে জানিয়েছেন, তার বাড়ি আসামে। অভাবের সংসারে তাকে সামান্য টাকায় বিক্রি করে দিয়েছিল পরিবার। কয়েক মাস আগে মালদার অন্তরা ঠাকুর ও প্রবোধ ঠাকুর টাকা দিয়ে তাকে কিনে নিয়ে আসেন। মালদা শহরের রামকৃষ্ণপল্লী এলাকার বাসিন্দা ওই দম্পতি তাদের বাড়িতে এনে পরিচারিকার কাজ করাতেন। গত কয়েক মাস ধরে তার উপর মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন চালানো হচ্ছিল বলে অভিযোগ। সামান্য ভুল হলেও ধূপকাঠির ছ্যাঁকা থেকে  শুরু করে লাঠির বাড়ি সবই সহ্য করতে হচ্ছিল এই নাবালিকাকে। এই অত্যাচারের বিষয়ে কাউকে কিছু বললে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি পর্যন্ত দেয় ওই দম্পতি বলে অভিযোগ।

    প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই দম্পতি তাদের সন্তান দেখাশোনার জন্য এই নাবালিককে আসাম থেকে কয়েকমাস আগে নিয়ে আসে। নাবালিকা মেয়েটির বাবা নেই। মা পাঞ্জাবে রয়েছেন। আসামের এক বৃদ্ধা ঠাকুমার কাছে মানুষ হত মেয়েটি। কোন এক দালাল চক্রের মারফৎ মেয়েটিকে পায় ঠাকুর দম্পতি। রামকৃষ্ণপল্লীতে ফ্লাট বাড়িতে মেয়েটিকে নিয়ে আসেন ঠাকুর দম্পতি। বাড়ির পরিচারিকার কাজে নিয়োগ করেছিলেন তারা।

    নাবালিকা মেয়েটির অভিযোগ সপ্তাহে একদিন খাওয়ার দিত তাকে। বাড়ির যাবতীয় কাজ করাতো। আর কোন ক্রটি হলে কপালে জুটতো মার।

    স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মাঝে মধ্যেই কান্নার আওয়াজ কানে আসত। এদিন রক্তাক্ত অবস্থায় মেয়েটিকে রাস্তায় দেখতে পেয়ে চাইল্ড হেল্প লাইনে খবর দেওয়া হয়। এরপরই সত্যিটা বেরিয়ে আসে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ইংরেজবাজার মহিলা থানা ও চাইল্ড লাইন।

    পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, মেয়েটিকে সরকারী হোমে হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দেওয়া ওই দম্পতির খোঁজ চালানো হচ্ছে।