|
---|
নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: ২৭ জুলাই, দুপুর ১টা নাগাদ বেনিয়াপুকুর থানায় একটা খবর আসে পার্ক সার্কাস স্টেশনের কাছে একটি ছোট্ট মেয়েকে নাকি উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরতে দেখা গেছে। মেয়েটির বয়স বড়জোর ৪-৫ বছর। বোঝাই যাচ্ছে, কোনভাবে পথ হারিয়ে এইখানে এসে পড়েছে সে।
খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান বেনিয়েপুকুর থানার মহিলা সাব ইনস্পেকটর মিনু সোনার। ভয়ে কান্নাকাটি করে তখন রীতিমতো চোখ-মুখ ফুলিয়ে ফেলেছে ছোট্ট মেয়েটি। সান্নো বেগম নামের স্থানীয় এক মহিলাই এতক্ষণ কোনও মতে সামলে রেখেছিলেন তাকে। সান্নো বেগমের সাহায্যেই মেয়েটিকে বেনিয়াপুকুর থানায় নিয়ে আসেন সাব ইনস্পেকটর মিনু সোনার।
এরপর টফি-চকোলেট দিয়ে মেয়েটির সঙ্গে ভাব জমানোর চেষ্টা শুরু হয়। খানিক পরে কিছুটা শান্ত হয় সে। গল্পের ছলেই তার নাম, তার বাবা-মায়ের নাম আর ঠিকানা জানতে চাইছিলেন বেনিয়াপুকুর থানার অফিসারেরা। কথায়-কথায় সে জানায়, তার নাম জোয়া খাতুন। তার বাবা এবং মায়ের নাম সে বলে, যথাক্রমে জাভেদ এবং জুলি। বাড়ি কোথায় জিজ্ঞেস করলে বিশেষ কিছু বলতে পারেনি ছোট্ট মেয়েটি।
দ্রুত আশপাশের অঞ্চলে খোঁজখবর শুরু করেন বেনিয়াপুকুর থানার অফিসারেরা। মেয়েটির ছবি তুলে দেখানো হয় স্থানীয় লোকজনদের। জিজ্ঞাসাও করা হয় অনেককেই। একটি ছোট্ট মেয়ে যে নিরুদ্দেশ হয়েছে, সেই খবর মুখে-মুখে ছড়িয়ে দেওয়াই ছিল মুখ্য উদ্দেশ্য।
এই পরিকল্পনা খেটেও যায় দারুণভাবে। প্রতিবেশীদের মারফত খবর পেয়ে মাত্র দেড় ঘন্টার মধ্যেই জোয়ার মা-বাবা ছুটে আসেন বেনিয়াপুকুর থানায়। মহঃ জাভেদ এবং রুসি পারভিন ওরফে জুলি। নিজের বাবা-মায়ের নাম ভুল বলেনি ছোট্ট মেয়েটি।
তিলজলা থানার অন্তর্গত তপসিয়া রোডে বাড়ি জাভেদ এবং রুসির। সেদিন সকালে কোনও এক ফাঁকে তপসিয়া রোডের বাড়ির বাইরে চলে এসেছিল সে। তারপর পথ হারিয়ে ঘুরতে ঘুরতে চলে এসেছিল পার্ক সার্কাস স্টেশনের কাছে। স্থানীয়রা মিলে বেনিয়াপুকুর থানায় খবর না দিলে বড় কোনও বিপদ হতে পারত।
সমস্ত নথিপত্র খুঁটিয়ে দেখে জোয়াকে তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন বেনিয়াপুকুর থানার অফিসারেরা।
ছবি থাকল বেনিয়াপুকুর থানার পুলিশের এবং বাবা-মায়ের সঙ্গে ছোট্ট জোয়ার । ছবিতে বাঁ দিক থেকে, কনস্টেবল মনুশ্রী কৈবর্ত, সাব ইনস্পেক্টর মিনু সোনার ও সুমিত কুমার শর্মা এবং মাঝে মা-বাবার সঙ্গে জোয়া।