তাবরেজ আনসারীকে পিটিয়ে হত‍্যার দায়ে গ্ৰেফতার ৫ ও সাসপেন্ড ২ পুলিশ আধিকারিক

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক : ঝাড়খণ্ডে তাবরেজ আনসারীকে পিটিয়ে খুনের দায়ে এখনও পর্যন্ত ৫ জনকে গ্ৰেফতার করা হয়েছে এবং সাসপেন্ড করা হয়েছে ২ পুলিশ আধিকারিককে। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে চন্দ্রমোহন ওরাও ও বিপিন বিহারী নামের ওই পুলিশ আধিকারিককে বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত বাকি দোষীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে সূত্রের খবর।

    ঘটনার সূত্রপাত, গত মঙ্গলবার বাইক চুরির অভিযোগে ২৪ বছরের তবরেজ আনসারিকে আটক করে জনতা। তবরেজ জামশেদপুর থেকে বন্ধুদের সঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ি থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে তাঁকে আক্রমণ করে জনতা। এমনটাই দাবি তাঁর এক আত্মীয়ের। তাঁকে একটি পোস্টে বেঁধে, সাত ঘণ্টা ধরে প্রবল মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সেখানেই অচৈতন্য হয়ে পড়লে, তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় জনতা। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।

    তবরেজের পরিবারের লোকজনদের অভিযোগ, হাসপাতালে তবরেজের ঠিকঠাক চিকিৎসা হয়নি। পুলিশকে এ নিয়ে অনুরোধ করেও লাভ হয়নি। এমনকী, তাঁর সঙ্গে কাউকে দেখাও করতে দেয়নি পুলিশ। তাঁকে দিয়ে জোর করে ‘জয় শ্রীরাম’ ও ‘জয় হনুমান’ বলানো হয়েছে বলেও অভিযোগে জানিয়েছে তাঁর পরিবার। পরিবারের তরফে এই ঘটনায় জড়িত সকলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের আর্জি জানানো হয়।

    তবরেজের স্ত্রী শাহিস্তা পরভিনের অভিযোগ, ‘ওকে নির্দয়ের মতো মারা হয়েছে, কারণ ও মুসলিম তাই। আমার কেউ নেই। কোনও শ্বশুর-শাশুড়িও নেই। আমি কী করে বাঁচব? ন্যায়বিচার চাই।’
    এই ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দার মুখে পড়ে, পুলিশ কর্তব্যে ত্রুটির কথা মেনে নেয়। একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT)-ও গঠন করা হয়েছে।

    হায়দরাবাদের রাজনীতিক তথা সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়াইসি এই ঘটনাকে নিয়ে টুইট করে জানান, ‘সব রকমের গণহত্যাই দেখা যাচ্ছে। প্রথমে এক মুসমিলকে গোপ্রেমীরা হত্যা করল। এর পর শুরু হল সবচেয়ে হাস্যকর অজুহাত, গোমাংস ভক্ষণ, চুরি, চোরাচালান ও লাভ জিহাদ। ‘সব কা বিকাশ’-এর জন্য আমরা ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে খুন হয়ে যেতে পারি!’

    যদিও ঝাড়খণ্ডের মন্ত্রী সিপি সিংহের বক্তব্য, গণপিটুনিকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে না ফেলাই ভালো। এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে বিজেপি, আরএসএস, ভিএইচপি ও বজরং দলকে যুক্ত করা। তাঁর কথায়, ‘এটাই এখন ট্রেন্ড।