|
---|
আজিজুর রহমান,গলসি : আবহাওয়ার জেরে আগে পরপর তিন সিজেন প্রকৃতির মারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন গলসির চাষিরা। ফলে চাষিদের ভাঁড়াল একপ্রকার শূন্য হয়ে গিয়েছিল। এবারে গত মাসে ধানের গাছে শিষ দেখে একটু হাসি ফুটেছিল তাদের মুখে। তবে তাও আর স্থায়ী হল না। কয়েকদিনেই মাঠের পর মাঠ জমি ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। আর এতেই মাথায় হাত পরেছে চাষিদের। এমন টাই জানিয়েছেন গলসি এলাকার চাষিরা। স্থানীয় চাষি অমিতাভ সাধু বলেন, কিছুদিন আগে অকাল বৃষ্টির পর থেকেই জমিতে শোষক পোকার উপদ্রব বেড়ে যায়। যার জেরে ধানের গাছের রস শুকিয়ে গিয়ে পচন ধরেছে গোড়াতে। খোসার ভিতর খুললেই বেরিয়ে আসছে মরা কালচে চাল। কোনকোন শিষে আবার ধান শুকিয়ে গিয়ে ধুসর হয়ে গেছে। এলাকার একরের পর একর জমির এমন হাল দেখে হতাস তিনি। উৎপল রায় নামে আর এক চাষি বলেন, ছয় বিঘা জমি চাষ করেছিলেন। সব জমিতেই।শোষক পোকা লেগে ধান নষ্ট করে দিয়েছে। চাষে তার খরচ হয়েছিল আটচল্লিশ হাজার টাকা। বর্তমানে তার ত্রিশ বস্তা ধান হবে। যা সহায়ক মুল্যে বিক্রি করলে ত্রিশ হাজার টাকা পাবে। দেখিল তার আঠারো হাজার টাকা লোকসান হবে। সাথে নিজের পারিশ্রমিক আছে। তারদাবী সরকার যদি কিছু না করে তাহলে তাদের এলাকার বহু চাষি মাঝ মাঠে মারা যাবে। রাজেন্দ্র মাহুলী নামে এক ভাগ চাষি বলেন, পাঁচ বস্তা বিঘা হিসেবে তিন বিঘা জমি ভাগে চাষ করেছেন। ধান ভালোই ফলেছিল। কিছুদিন আগে হঠাৎ বৃষ্টি হবার পর থেকেই তার সর্বনাশ হয়েছে। আছমকা পোকার উপদ্রব বেড়ে গেছে। এখন যা ধান আছে তা বাড়ির লোকদের নিয়েই কাটছেন। এমন অবস্থায় বিঘাপ্রতি তিনি পাঁচ ছয় বস্তা ধান পাবে। তাতে জমি মালিককে কি দেবে আর নিজে কি খাবে। তিনি তো উপরওয়ালার দোহায় দিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলেন, এবারও তার মারের আমরা শেষ হয়ে গেলাম। পরপর চার সিজেন এমনই হচ্ছে। তবে এবার চাষ করা ছেড়ে দিয়ে ওন্য কাজ করবো। গলসির চাষিরা এখন সরকারি সাহায্যের আশায় দিন গুনছে। ইতিমধ্যেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতির কথা জেলায় জানানো হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এবারেও যে চাষিদের পাকা ধানে মই মরেছে এমনটা বলাই যায়।