দেনার দায়ে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী আলু ব্যবসায়ী

দেনার দায়ে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী আলু ব্যবসায়ী

     

     

    আব্দুল হাই, বাঁকুড়াঃ বাঁকুড়া জেলার জয়পুর ব্লকে দেনার দায়ে আত্মঘাতী হলেন বংশীবদন ঘোষ (৬০) নামে এক আলু ব্যবসায়ী। তিনি জয়পুর থানার বৈতল এলাকার জরকা গ্রামের বাসিন্দা। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বংশীবদন ঘোষ সম্মানীয় এবং আবেগপ্রবণ মানুষ ছিলেন। এবছর আলুর দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকার সময় বেশি দামে আলুর বন্ড কেনার পর হঠাৎ করে বাজারে আলুর দাম নীচে নেমে যাওয়ায় তাঁকে বিপুল পরিমাণ লোকসানে আলু বিক্রি করে দিতে হয়েছে। আর তাতেই তিনি একটা মোটা অংকের দেনায় পড়ে যান। মহাজনদের কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়ে আলুর বন্ড কেনার পর আড়ৎদারদের কাছে কম দামে আলু ছেড়ে দিতে হয়েছে। তাই একদিকে যেমন মহাজনরা ক্রমাগত টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিল তেমন আলু ক্রেতাদের থেকেও সম্পূর্ণ টাকা আদায় করতে পারছিলেন না। এই দুই সাঁড়াশি চাপে পড়ে তিনি কিছুদিন যাবৎ মানসিকভাবে কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তারই জেরে শুক্রবার ৫ ই ফেব্রুয়ারি জরকা গ্রামে নিজের আলু গোডাউনে কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে স্থানীয়দের অনুমান। এদিন সকালে বংশীবাবুর কীটনাশক খাওয়ার কথা জানাজানি হওয়ার পরেই তাঁকে তাঁর আত্মীয়রা বিষ্ণুপুর হাসপাতালে নিয়ে আসার কিছু সময় পরেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। এদিন বংশীবদন ঘোষের ভাইপো অমিত ঘোষ বলেন ‘এবছর জেঠুর আলুর ব্যবসায় প্রচুর লোকসান হয়েছে। বেশি দামে কিনে কম দামে বিক্রি করতে হয়েছে। মহাজনরা বারবার এসে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। এবার যাঁদের কাছে উনি টাকা পেতেন তাঁরাও টাকা দিচ্ছি বলে দিনের পর দিন ঘুরাচ্ছিল। জেঠুর সম্প্রিতি বড় একটা অপারেসন হয়েছে। দেনার কথা আমাদের কিছুই জানান নি। আজ সকালে নিজের দোকানে গিয়ে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আমরা সেটা জানতে পেরেই ওনাকে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে নিয়ে আসি। কিন্তু সেখানে আনার কিছুক্ষণ পরেই জেঠু মারা যান’।

    হাসপাতালে দাঁড়িয়ে বংশীবাবুর এক সহ-ব্যবসায়ী অনাতন মাইতি জানান ‘বংশীবাবু অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন। কম দামে আলু বিক্রি করার জন্য অনেক টাকা দেনার দায়ে পড়ে গিয়েছিল। এই ঘটনার খবর পেয়ে জয়পুর থানার পুলিশ পৌঁছায়। কি কারণে মৃত্যু হলো তা তদন্ত শুরু করেছেন পুলিশ।