মৌপাল দেশপ্রাণ বিদ্যাপীঠের উদ্যোগে বাল্যবিবাহ বিষয়ক সচেতনতার বার্তা প্রচার

 

    নিজস্ব সংবাদদাতা, নতুন গতি, শালবনী :
    বাল্যবিবাহ রোধে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে উদ্যোগী হলো মৌপাল দেশপ্রাণ বিদ্যাপীঠ।করোনা আবহে নিউ নর্মালে অফিস আদালত, দোকানপাট খোলা থাকলেও, বিদ্যালয়ের অফিসিয়াল সমস্ত কাজকর্ম নিয়মিত চললেও পঠন পাঠন বন্ধ । স্বাভাবিক জীবন যাপনও ব্যাহত হচ্ছে । অনলাইন বা হোয়াটসঅ্যাপ ক্লাস করার মতো সঙ্গতি সবার নেই । আর এই পরিস্থিতিতে অনেক অভিভাবক তাদের অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের বিয়ে দিচ্ছেন । কখনও বা অভিভাবকদের এড়িয়ে বিয়ে করে নিচ্ছে কম বয়সী মেয়েরা ।সরকারী নিয়মকে কেবল বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছে তাই নয়, নিজেদের বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে অল্প বয়সী মেয়েরা । এই অশনি সংকেত রুখতে বাল্যবিবাহ রোধে প্রচার অভিযান শুরু করল শাশবনী ব্লকের মৌপাল দেশপ্রাণ বিদ্যাপীঠ । কন্যাশ্রী ক্লাবের সক্রিয়তা আছে, আছে প্রাক্তনীর নজরদারি । সেই নজরদারি এড়িয়ে অনেক ক্ষেত্রে অভিভাবকরা বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন নিজেদের কন্যা সন্তানদের । বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতি মিড-ডে মিলের প্রচার অভিযানের সঙ্গে পঠন পাঠন সংক্রান্ত ও বাল্যবিবাহ বিরোধী প্রচার অভিযান চালালো এলাকার অন্তত ২০টি গ্রামের ২৫-২৬টি জায়গায় । অভিভাবকরা কর্মসূচিটিকে স্বতস্ফূর্তভাবে গ্রহণ করেছেন, প্রশংসা করেছেন বিদ্যালয়ের এই সময়োপযোগী পদক্ষেপকে । অভিভাবক প্রতিনিধি নীলোৎপল সাউ বলেন, যে গ্রামে এমন ঘটনা ঘটেছে, সেই গ্রামগুলোকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি । চেষ্টা করেছি সমস্ত গ্রামে প্রচার করার । আশা করি ভবিষ্যতে সাড়া মিলবে এই উদ্যোগের ।

    অভিভাবক সুশান্ত ভুঁইঞা বলেন, শারীরিক দূরত্ব বিধি মেনে বিদ্যালয় প্রশাসনের এই ভূমিকা সত্যি প্রশংসনীয় । আশা করি সাফল্য আসবে ।অভিভাবক সচেতনতা খুব গুরুত্বপূর্ণ । প্রধান শিক্ষক ড. প্রসূনকুমার পড়িয়া জানান, আর্থিকভাবে ও শিক্ষাগতভাবে পশ্চাদপদ এই এলাকার মানুষের সচেতনতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেলেও অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার এমনকি বাল্যবিবাহের মতো সামাজিক পশ্চাদপদতাকে বজায় রাখার প্রবণতা এখনও একশ্রেণির মানুষের মধ্যে আছে । বিদ্যালয়ের নানা কর্মসূচি যেমন নাটক,গান ইত্যাদি পরিবেশনের ফলে বাল্যবিবাহের আনুপাতিক হার কমলেও এখনও অনেক সমস্যা আছে । আমার বিশ্বাস, প্রকৃত শিক্ষা দিয়ে মেয়েদের অধিকার রক্ষার দিকে অচিরেই এগিয়ে নিয়ে যাবো আমরা । এদিনের কর্মসূচিতে ব্লক প্রশাসনের পক্ষে অভিজিৎ দাস উপস্থিত ছিলেন। জেলা আইনী সচেতনতা বিভাগের সহযোগিতায় এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এদিন অভিভাবকদের মধ্যে বাল্যবিবাহ ও আইনী সচেতনতা বিষয়ক লিফলেট ও মাস্ক বিলি করা হয়।