প্রতি বছরের মত এবারও মাধ্যমিকে নজরকাড়া সাফল্য সেহারাবাজার রহমানিয়া আল আমিন মিশনের

এম এস ইসলাম, বর্ধমান : দরিদ্র ও সাধারণ পরিবারের সন্তান সফিকুল্লাহ মন্ডল মাধ্যমিকে ৬৪২ নাম্বার পেয়ে তাক লাগালো। সেহারা বাজার রহমানিয়া আলামিন মিশনে প্রথম থেকে পড়াশোনা করা অত্যন্ত মেধাবী সফিকুল্লাহ মন্ডল আশা ছিল এ বছর রাজ্যে র‍্যাঁক করবে কিন্তু দুই একটি সাবজেক্টে কম নাম্বার পাওয়ায় সেটা সম্ভব হয়নি। সাধারণ পরিবারের ছেলেদের নিয়ে গড়ে ওঠা সেহারাবাজার রহমানিয়া আল আমিন মিশন এবছর মাধ্যমিকে অসাধারণ ফলাফল করে রাজ্যজুড়ে সাড়া ফেলেছে।protiযেখানে অনেক নামী মিশন ৮০-৯০ শতাংশ নম্বর না পেলে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করে না, সেখানে এই প্রতিষ্ঠান সকল শ্রেণির ছাত্রদের সুযোগ দিয়ে বাস্তবে প্রমাণ করেছে অধ্যবসায় ও সঠিক দিশা থাকলে সাফল্য আসবেই।

    এই বছর মোট ৪৪ জন ছাত্র মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল এবং প্রত্যেকেই সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছে। প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ বছরে একটিও ছাত্র অকৃতকার্য হয়নি। এবারের পরীক্ষায় মিশনের প্রথম স্থান অধিকার করেছে সফিকুল্লাহ মন্ডল, যার প্রাপ্ত নম্বর ৬৪২। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে সেখ ওবায়দুল ইসলাম (৫৬৬ নম্বর) এবং তৃতীয় হয়েছে শেখ মিরাজ উদ্দিন, যার প্রাপ্ত নম্বর ৫২৭। সেহারা বাজার রহমানিয়া আল আমিন মিশনে সফিকুল্লাহ মন্ডল ৯০% বেশি নাম্বার পেয়েছে , তিনটি স্টার বাকি প্রত্যেকের প্রথম বিভাগে পাশ করেছে।

    প্রতিষ্ঠানের সম্পাদক হাজী কুতুব উদ্দিন বলেন, “আমরা সাধারণ পরিবারের ছাত্রদের নিয়ে কাজ করি। আমাদের শিক্ষকদের নিরলস পরিশ্রম ও ছেলেদের আত্মবিশ্বাসের ফলেই এই ধারাবাহিক সাফল্য সম্ভব হচ্ছে। অনেক ছাত্র আমাদের মিশন থেকে বেরিয়ে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও আইনজীবী হয়ে সমাজে সম্মান অর্জন করেছে।”

    তিনি আরও জানান, মিশনের লক্ষ্য শুধু ভালো রেজাল্ট নয়, বরং মূল্যবোধ ও চরিত্র গঠনের মধ্য দিয়ে একজন সৎ ও আদর্শ মানুষ গড়ে তোলা। এজন্যই এখানকার পরিবেশ অন্যরকম। ছাত্রদের পড়াশোনার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষা, নিয়ম-শৃঙ্খলা ও সামাজিক দায়িত্ববোধেও গুরুত্ব দেওয়া হয়।

    মিশনে প্রথম স্থান অধিকারী সফিকুল্লাহ মন্ডল জানিয়েছে, “আমি আরেকটু ভালো ফলের আশা করেছিলাম। তবুও আমি খুশি, কারণ এই ফলাফলের পেছনে আমাদের শিক্ষকদের অনেক অবদান আছে। আগামীতে আরও ভালো রেজাল্ট করব, এটাই আমার অঙ্গীকার।”

    এই সাফল্য শুধু একটি প্রতিষ্ঠানের নয়, বরং প্রমাণ করে দেয় যে সুযোগ ও উপযুক্ত দিকনির্দেশনা পেলে যেকোনো প্রান্তিক পরিবারের ছাত্রও সাফল্যের শিখরে পৌঁছাতে পারে। সেহারাবাজার রহমানিয়া আল আমিন মিশন সেই উদাহরণ হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।