রাষ্ট্রবিজ্ঞান শূন্য, জীবন বিজ্ঞান শূন্য,অঙ্ক এক, ইংরেজি দুই অন্যত্র চলে গেলেন একসাথে পাঁচ জন শিক্ষক ও একজন গ্রন্থাগারিক

মতিয়ার রহমান : মুরারই বিধানসভার কলহপুর এইচ এম কে এইচ হাই মাদ্রাসা ( উচ্চ মাধ্যমিক)র ছাত্র ছাত্রী সংখ্যা দুই হাজারের বেশি। শিক্ষক শিক্ষিকা মাত্র বাইশ জন।আজ ট্রান্সফার নিয়ে চলে গেলেন পাঁচ জন শিক্ষক ও একজন গ্রন্থাগারিক। উল্লেখ্য যে, দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার একমাত্র উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এই কলহপুর এইচ এম কে এইচ হাই মাদ্রাসা (উচ্চ মাধ্যমিক)। শিক্ষক অভাবে ধুঁকছে ঐতিহ্যবাহী স্কুল নন্দীগ্রাম হাই স্কুল। একাদশ দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়াবেন কে? একমাত্র ভরসা মুরারই কবি নজরুল কলেজ। অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া এলাকায় যাতায়াতের জন্য একমাত্র যান টোটো। যাতায়াত ভাড়াই পঞ্চাশ টাকা। টিফিন খরচা তো আছেই।অপারগ বাবা মা তাই বাধ্য হয়েই ছেলেদের বাইরে দূরে কাজের সন্ধানে পাঠাতে বাধ্য হচ্ছেন। এমন কত কথা উঠে এল আজ অব্যাহতি কালিন স্কুল ছেড়ে যাওয়া শিক্ষকদের বিদায়ী সংবর্ধনা সভায়।

    সভায় বিদায়ী শিক্ষক মহম্মদ আলমগীর, আশরাফ আলী,খাইরুল বাসার,ওদুদ হাসান, রাহিল আব্বাস ও গ্রন্থাগারিক দেবযানী দত্তের হাতে কলহপুর মাদ্রাসার পক্ষ থেকে মানপত্র সহ একগুচ্ছ উপহার সামগ্রী তুলে দেন সম্মানীয় প্রধান শিক্ষক গোলাম সরওয়ার,পরিচালন সমিতির সম্পাদক আবুল কালাম, সহকারী শিক্ষক ও প্রাক্তন শিক্ষক মশাইরা। মঞ্চে বক্তব্য রাখেন রামপুরহাট কোর্টের আইনজীবী আব্দুল হাসিব, বিশিষ্ট কবি সম্পাদক ও সুসংগঠক গল্পকার কুদ্দুস আলি, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক এনামুল হক, প্রাক্তন টিচার ইন চার্জ ও পরিচালন সমিতির সদস্য জনাব আতাহারুল হক,বিশিষ্ট সমাজসেবী ও শিক্ষক মদন মোহন ঘোষ প্রমুখ।
    সকাল সাড়ে এগারোটায় রবীন্দ্র নজরুল মঞ্চে অব্যহতি কালীন বিদায় সংবর্ধনা শুরু হয়।
    একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী সুলতানা জিনাতয়ারা রহমান বিদায়ী শিক্ষকদের হাতে সুদৃশ্য স্মারক সম্মাননা সনদ তুলে দেয়। পরপর প্রতিষ্ঠানের বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্র ছাত্রীদের পক্ষ থেকেও বিদায়ী শিক্ষকদের হাতে উপহার সামগ্রী তুলে দেয়া হয়। সভায় সভাপতির ভাষণে প্রধান শিক্ষক গোলাম সরওয়ার মাদ্রাসার সাবজেক্ট টিচারের বিষয়ে সভার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এই সঙ্কটের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সাহস নিয়ে তাঁর প্রাণের প্রতিষ্ঠানের উত্তরোত্তর সাফল্য অর্জনের দিকে এগিয়ে যেতে সকলের ভালোবাসা ও সহযোগীতা কামনা করেন।
    বিদায়ী শিক্ষকদের পক্ষে রাহিল আব্বাস বলেন যে, না ডাকলেও প্রাণের টানে প্রেমের টানে বেহায়ার মতো তিনি বারবার ফিরে ফিরে আসবেন এখানে। সকলের উদ্দেশ্যে বলেন যে, এই প্রতিষ্ঠানটির সুনাম সুখ্যাতি যেন নষ্ট না হয়। বর্তমান শিক্ষকদের সবাই সবাইকে সঙ্গে নিয়ে পথ চলার পরামর্শ দেন তিনি।খাইরুল বাসার সহ বাকিরা শিক্ষার্থীদের অসুবিধা যেন না হয় সে বিষয়ে মত দেন।
    দুটো ফেজে সম্পন্ন এই অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বাংলা ভাষার দুই সুশিক্ষিকা স্বপ্না পাত্র এবং হাবিবা খাতুন। আংশিক সময়ের সঞ্চালনায় ছিলেন মতিয়ার রহমান।
    প্রধান শিক্ষক ও
    বিদায়ী শিক্ষকদের পক্ষ থেকে আগত অতিথিদের অভ্যর্থনা ও দ্বিপ্রহরের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। উপস্থিত ছাত্র ছাত্রীদের জন্যও ক্যাডবেরি ও দুপুরের খাবার ব্যবস্থা ছিল।