সুন্দরবনে বাঘের সঙ্গে দুঃসাহসীক লড়াইয়ে বিজয়ী এক বীরাঙ্গনার সম্বর্ধনা

১৫ অগাস্ট,২০২১,কলকাতা: স্বাধীনতা দিবসের ৭৫ তম বার্ষিকী উদযাপনে সেরাম থ্যালাসেমিয়া প্রিভেনশন ফেডারেশন আয়োজন করেছিল এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।শুরুতে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পীরা ও আমার দেশের মাটি,উঠো গো ভারতলক্ষ্মী।পরে সংস্থার পক্ষে বক্তব্য রাখেন সঞ্জীব আচার্য্য, সম্পাদক, সেরাম থ্যালাসেমিয়া প্রিভেনশন ফেডারেশন।তিনি বলেন,” আমাদের সংগঠনের লক্ষ্য হলো থ্যালাসেমিয়া মুক্ত দেশ গঠন করা।কোনো মায়ের কোলে যেন অকালে খালি না হয়ে যায় সেই উদ্যেশ্যে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে চলেছে আমাদের এই সংগঠন।” এরপর চিন্ময়ী ভারতমাতাকে নানা উপাচারে বরণ করা হয়।বেজে ওঠে ঢাক,শঙ্খের মঙ্গল ধ্বনিতে পুণ্য হয়ে ওঠে সভাগৃহ।এরপর একে একে নানা প্রান্তিক এবং খেটে খাওয়া মায়েদের হাতে বস্ত্র তুলে দেন চিন্ময়ী ভারতমাতা।

    তবে অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল এক হাড় হিম করা দুঃসাহসিক যুদ্ধের এক কাণ্ডারীকে সম্মাননা প্রদান।জ্যোৎস্না শী যিনি বাঘের মুখ থেকে তাঁর স্বামীকে ফিরিয়ে এনেছিলেন তাঁকে সম্মান প্রদান করা হয়।সংস্থার পক্ষে সম্মানের স্মারক তুলে দেন সঞ্জীব আচার্য্য।গত এপ্রিল মাসে সুন্দরবনের কুড়ি নম্বর জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন শঙ্কর শী এবং তাঁর স্ত্রী জ্যোৎস্না শী।অকস্মাৎ বাঘ ঝাঁপিয়ে পড়ে শঙ্কর বাবুর ঘাড়ে।উপস্থিত জ্যোৎস্না শী বাঘের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঘের কানের ভিতর হাত ঢুকিয়ে টান দিয়ে বাঘটিকে প্রতিনিয়ত আঘাত করতে থাকেন।অবশেষে তিনি তাঁর স্বামীকে বাঁচাতে সক্ষম হন।এই বীরাঙ্গনার পরিবারের সদস্যদের সংস্থার পক্ষ থেকে বিনা ব্যায়ে চিকিৎসার ব্যাবস্থার পাশাপাশি আর্থিক সহায়তাও করা হয়েছে।

    শ্যামবাজারে সেরামের নিজস্ব সভাঘরে এই অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সংস্থার উদ্যোগে কলকাতার বিভিন্ন ক্লাবে চলেছে দেশমাতৃকার আরাধনায় বস্ত্র বিতরণের কর্মসূচী,সঙ্গে থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষার জন্য প্রচুর কুপনও বিলি করা হয়।জ্যোৎস্না শী বললেন,” এখানে আসতে পেরে আমরা খুশী ।এই সহযোগিতা আমাদের পরিবারের ভীষণ কাজে দেবে বর্তমান পরিস্থিতিতে।অনটনের পরিবারে সেরাম থ্যালাসেমিয়া প্রিভেনশন ফেডারেশনের এই সাহায্যের জন্য সংস্থাকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।”