সহবাসের পর অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীকে প্রত্যাখ্যান, এক দিনের মধ্যে চার্জশিট, নয় দিনের মধ্যে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড অপরাধীর

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক। ২৪ জুলাই, ঘড়ির কাঁটা তখন প্রায় রাত সাড়ে বারোটা ছুঁইছুঁই। উল্টোডাঙা থানায় এসে একটি গুরুতর অভিযোগ দায়ের করেন একজন মহিলা। জানান, তাঁর ১৭ বছরের নাবালিকা কিশোরীর সঙ্গে একাধিকবার সহবাস করেছে বিশ্বজিৎ দে নামের এক যুবক। ফলে গর্ভবতী হয়ে পড়ে সেই মেয়েটি। এই কথা জানার পরেই তার সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় বিশ্বজিৎ। অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটির কোনও দায়িত্ব নিতেই সে রাজি হয়নি।

    অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তদন্তে নেমে পড়ে সাব ইনস্পেকটর আরশাদ আলির নেতৃত্বে উল্টোডাঙা থানার বিশেষ টিম। একটি মোবাইল নম্বর বাদে বিশ্বজিৎ সম্পর্কে আর বিশেষ কোনও তথ্য সেদিন জানাতে পারেননি সেই মহিলা। তিনি শুধু জানতেন, বিশ্বজিতের বাড়ি রাজারহাটে। কিশোরী মেয়েটিকে নিজের প্রকৃত ঠিকানা কোনও দিন জানায়নি বিশ্বজিৎ। এমনকি, বিশ্বজিতের কোনও ছবিও ছিল না সেই মহিলা বা তাঁর মেয়ের কাছে।

    তথ্য বেশি না থাকায় প্রযুক্তির সাহায্য নিতে হয়। দ্রুতই বিশ্বজিতের একটি ছবি হাতে আসে তদন্তকারী অফিসারদের। সেই ছবি-সমেত খবর দেওয়া হয় সোর্সদের। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিশ্বজিতের আসল ঠিকানারও সন্ধান মেলে। রাত ২.০৫-এ রাজারহাটের বাড়ি থেকে বিশ্বজিৎকে গ্রেপ্তার করে উল্টোডাঙা থানার বিশেষ টিম। অভিযোগ পাওয়ার পর দেড় ঘন্টাও কাটেনি তখন।

    বিশ্বজিতের বিরুদ্ধে পকসো আইনে (Protection of Children from Sexual Offences Act) মামলা রুজু হয়। মেয়েটির মেডিক্যাল রিপোর্ট ও অন্যান্য তথ্যপ্রমাণ-সহ চার্জশিট জমা দেওয়া হয় মাত্র ১ দিনেই। হ্যাঁ, মাত্রা একদিনের মধ্যে! মাত্র ৬ দিনের ভিতরে শেষ হয় বিচার প্রক্রিয়াও।

    সেই মামলারই রায় বেরিয়েছে ২ অগস্ট। বিশ্বজিতের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন মাননীয় বিচারক। সঙ্গে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা। এই জরিমানার ৯০ শতাংশ টাকাই ক্ষতিপূরণ বাবদ যাবে মেয়েটির কাছে।

    এই কেসের তদন্তকারী অফিসার উল্টোডাঙা থানার সাব ইনস্পেকটর আরশাদ আলির অক্লান্ত পরিশ্রম ও তৎপরতায় অভিযোগ পাওয়ার মাত্র ৯ দিনের মধ্যেই শাস্তি সুনিশ্চিত হয়েছে অপরাধীর।