হরিশচন্দ্রপুরে আবার দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেল এক চালক

 
হরিশ্চন্দ্রপুর,মহ নাজিম আক্তার,২৭ নভেম্বর: আবার বড়সড়ো দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেলো এক গাড়ী চালক। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল রাত নটা নাগাদ হরিশ্চন্দ্রপুর কলেজ মোড় এলাকায়। গাড়ি চালক জানান, রাত ন’টা নাগাদ তুলসিহাটা থেকে বাড়ি ফেরার পথে হরিশ্চন্দ্রপুর কলেজ মোড়ে পি ডব্লিউ ডি’র বড় বড় পাথর রাস্তার ধারে পড়ে থাকার কারণে নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে বিপরীতমুখী গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। যদিও হতাহতের কোনো খবর নেই। প্রায় এক মাস ধরে শীত শুরু হয়েছে তার ফলে সন্ধ্যা হতেই ঘন কুয়াশায় ঢেকে যায় রাস্তা। এর ফলে ঘটছে দুর্ঘটনা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় গত ২০ নভেম্বর হরিশ্চন্দ্রপুর-২ নং ব্লকের বিডিও প্রীতম সাহার গাড়ির সঙ্গে এক স্কুল ভ্যানের গাড়ির ধাক্কায় আহত হয় পাঁচ খুদে বড়ুয়া। তা সত্ত্বেও হরিশ্চন্দ্রপুর পুলিশ প্রশাসনের কোনো হেলদোল নেই।গাড়ি চালক জানান ,কোথাও বাণিজ্যিক ভাবে বা কোথাও সরকারি পি ডব্লিউ ডি’র উদ্যোগে হরিশ্চন্দ্রপুর ও তুলসিহাটা এলাকায় রাস্তার ওপর বালি,পাথরের মত রাস্তা ও বাড়ির নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখার প্রবণতা বাড়ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।এর জেরে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। তাই হরিশ্চন্দ্রপুর বাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।এর জন্য এলাকাবাসীরা প্রশাসনের নজরদারির অভাবকে দায়ী করেছেন।হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ প্রশাসন অবশ্য এই অভিযোগ মানতে চাননি।

হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয় কুমার দাস বলেন, “রাস্তার ওপর সরকারি বা বেসরকারিভাবে বালি, পাথরের মত নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখার প্রবণতা বন্ধে মাঝেমধ্যে প্রচার চালান হয়। ওই ব্যাপারে ফের সচেতনতা বাড়াতে প্রচারাভিযান চালানো হবে। তাতে কাজ না হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে বালি, পাথর বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে। স্কুল ভ্যানের সঙ্গে বিডিও’র গাড়ির সংঘর্ষের পরের দিন অর্থাৎ ২১ নভেম্বর পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনবহুল এলাকা, স্কুল এলাকা ও চৌমাথার মোড়ে গাড়ি নিয়ন্ত্রণের জন্য অত্যাধুনিক স্পিড ব্রেকার বসানো হয়েছে। আশা করি এরপর থেকে এলাকায় দুর্ঘটনা কমবে।’

বাসিন্দাদের অভিযোগ হরিশ্চন্দ্রপুর ও তুলসিহাটা এলাকায় রাস্তার ধারে পি.ডব্লিউ.ডি,র কর্মকর্তারা বড় বড় পাথর ফেলে রাখায় সমস্যা বাড়ছে। যাতায়াতে দুর্ভোগ বাড়ছে। হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় ৮১ নং জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলছে। তাই রাস্তার ওপরে বালি, পাথর স্তূপাকার হয়ে রয়েছে।

হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দারা জানান, রাস্তার ওপর বালি, পাথর ফেলে রাখায় মোটরবাইক, ছোট গাড়ি চালক ও সাইকেল আরোহীরা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছেন। ছোটখাটো দুর্ঘটনাও হয়েছে। তারপরেও প্রশাসনের কোনো হেলদোল নেই। তুলসিহাটা ও মস্তান রোড এলাকায় রাস্তার ধারে নয়, সরাসরি রাস্তা উপরেই চলছে ব্যবসা। ইট, বালি, স্টোনচিপসের ব্যবসার জেরে দুর্ঘটনার ছবিটা নতুন নয়। কিন্তু তাতে কী! দুর্ঘটনার পর দু-একদিন একটু সামলে চলা ব্যস, ফের আগের অবস্থাই বহাল হয়ে যায়। রাস্তার উপরে,ধারে ফেলে রাখা পাথর, বালি, স্টোনচিপসের জেরে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। যানচালক থেকে পথচারী সকলেরই অভিযোগের আঙুল পুলিশ-প্রশাসনের দিকে। যদিও এ ধরনের অভিযোগ ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ প্রশাসন।

প্রশাসন কর্তাদের বার বার বিষয়টি জানানো হয়েছে।কিন্তু ব্যবস্থা যে নেওয়া হয়নি তা রাস্তায় ঘুরলেই বোঝা যায়। স্থানীয় এক দোকানদার জানান, দিন কয়েক আগে এমনই পাথর ছিটকে জখম হয়েছে একটি বাচ্চা ছেলে। তা ছাড়া মোটরবাইক নিয়েই কয়েকজন পিছলে গিয়েছে। সাবধান না হলেই ঘটছে দুর্ঘটনা।

স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘ব্যবসার কাজে আমাকে প্রতিদিনই মোটরবাইক নিয়ে চাচোল, তুলসিহাটা কুশিদা যেতে হয়। বালি এবং নুড়ি পাথরে চাকা পিছলে পড়ে গিয়েছি দু’বার।’’ সমস্যা কেবল বাইক বা সাইকেল আরোহীদের নয়, অ্যাম্বুল্যান্স, বাসেরও। দিনের বেলায় তবু চোখে দেখা যায়, রাতের অন্ধকার রাস্তায় পিচের রঙের সঙ্গে পাথরের রং মিশে যাওয়ায় অনেক সময় ঠাহর করা যায় না। ফলে দুর্ঘটনা ঘটে।