প্রনাম এ.বি.এ. গণি খান চৌধুরী

মালদা: কলকাতার মানুষ মেট্রো রেল পেয়েছে মালদা জেলার এই ছেলের জন্য।

    আজ তাঁর প্রয়াণ দিবস। ১৯৮২-১৯৮৪ সাল। গনি খান চৌধুরী তখন ভারতের রেল মন্ত্রী। প্রস্তাব করা হয়েছে ভারতের প্রথম কোন শহরে মেট্রো রেল হতে পারে। দক্ষিণের কিছু সাংসদ চিৎকার করে বলছেন সংসদের মধ্যেই। প্রথম মেট্রো চেন্নাইয়ে হওয়া উচিত। হঠাৎ সংসদের মধ্যে একটা গুরু গম্ভীর আওয়াজ গর্জে উঠল। তিনি মালদার সাংসদ ও রেলমন্ত্রী গনি খান চৌধুরী।

    সেদিন তিনি যুক্তি দেখিয়েছিলেন দক্ষিণে তখন পাওয়ার গ্রিড প্রকল্প চলছে। অতএব একই জায়গাতে পাওয়ার গ্রিড ও মেট্রো রেল হতে পারে না। সম্পুর্ন পাতাল রেল প্রোজেক্টটাকে তিনি নিয়ে চলে এলেন কলকাতাতে। মালদা জেলার এই ছেলে কলকাতা শহরকে সেদিন শিক্ষা দিয়েছিল। না পেলে ছিনিয়ে নিতে হয়। সেদিন সংসদ ভবন অবাক হয়ে দেখেছিল।

    গনি খানের বাবা বাহাদুর হায়াত খান চৌধুরী ছিলেন মালদার জমিদার। জেলার গরীব মানুষ তাঁকে ভগবান বলে মনে করত। আর সেই একই ধাতু দিয়ে যেন তৈরি হয়েছিলেন গনি খান। দরিদ্রের দুঃখ চোখে দেখতে পারতেন না। গনি খানকে ছোটো থেকে যাঁরা দেখেছেন তাদের মতে তিনি স্কুল জীবন থেকেই মানুষকে সাহায্য করতেন। বন্ধুদের নিয়ে গিয়ে হাসপাতাল পরিষ্কার করে দিয়ে আসতেন। আবার অনেক সময় স্কুলে চাঁদা তুলে বুভুক্ষদের খেতে দিয়ে আসতেন।

    জমিদারের ছেলের মানুষের জন্য মন কাঁদে। এটা মালদার মানুষ অন্য চোখে দেখেছিলেন। ফলে ভোট পড়ত তাঁকে দেখে। তিনি কোন চিহ্নে দাঁড়াচ্ছেন সেটা দেখে নয়। তিনি একটানা ৮ বার ভোটে জিতে সাংসদ হয়েছিলেন। কেউ তাঁর বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়ালে সে নিজেও জানত যে সে হেরে যাবে। সেই গনি খানকে আজকের আধুনিক মালদার রূপকার যেমন বলা চলে তেমনই কলকাতার মেট্রো রেল ও চক্ররেল তিনি উপহার দিয়েছিলেন তিলোত্তমাকে।