“শরিফা বাদ” মুঘল সাম্রাজ্যে বর্ধমানের প্রাচীন নাম

শেখ মনোয়ার হোসেন,বর্ধমান,২৫সেপ্টম্বর : “শরিফা বাদ” মুঘল সাম্রাজ্যে বর্ধমানের প্রাচীন নাম, এই শহরের আনাচে-কানাচে, কোনায় কোনায়, ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মোঘল স্থাপত্যের অনেক নিদর্শন। যেমন” শরিফা বাদের” অন্যতম প্রাচীন মুসলিম জনবসতির অন্যতম বাঁকা নদীর দক্ষিণ তীরে শেখ মনোয়ার হোসেন , বর্ধমান, ২৫ সেপ্টেম্বর : “ইসলামা বাজার” যা পরবর্তীকালে অপভ্রংশ হয়ে” ইছলা বাজারে “পরিণত হয়েছে। এই ইসলামা বাজারে বা ইছলা বাজারে বর্তমানে তিনটি মসজিদ দেখতে পাওয়া যায়। এই মসজিদটি বাঁকা নদের দক্ষিণে অর্থাৎ আগে যেটাকে কাঠেরপুল বলা হতো, তারই 30 মিটার দূরত্বে অবস্থিত “মসজিদে তাহির”এটি আরবি শব্দ এর অর্থ খাঁটি /পবিত্র মসজিদ। স্থাপিত ১১১০ হিজরী অর্থাৎ ১৬৮৮ খ্রিস্টাব্দ। নির্মাতা – ভারত সম্রাট আওরঙ্গজেব।
মসজিদের গঠন প্রণালী মুঘল স্থাপত্যের অন্যান্য মসজিদের মতনই গম্বুজ, মিনার, খিলেন এর কাজ, চুন সুরকি দেয়াল। মসজিদটি বর্তমানে রাস্তার ওপর থেকে দেখা যায় না ,সামনে সব দোকান হয়ে গেছে, একটি ছোট আড়াই ফুটের রাস্তা দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করতে হয়। অপরূপ সৌন্দর্য মসজিদ ,একটি গম্বুজ ও চারটি মিনার, মসজিদে প্রবেশ করার মুখে মসজিদের দরজার মাথায় একটি ফার্সি কালো কোষ্ঠী পাথরের ফলকে মসজিদের নির্মাণকাল প্রতিষ্ঠাতার নাম লেখা আছে। মসজিদের দক্ষিণে দেওয়ালে জানলার উপরে আরেকটি ফার্সি ফলক আছে সেখানেও নির্মাণকাল ১১১০ হিজরী ও নির্মাতা ভারত সম্রাট আওরঙ্গজেব খোদাই করা আছে কষ্টি পাথরের উপরে। জীবনে অনেক পাথরের ফলক দেখেছি, এত বছর পরও এত সুন্দর অক্ষরে লেখা “কোরিওগ্রাফ” যা দেখলে অভিভূত হয়ে পড়তে হবে। বর্তমানে মসজিদের সমস্ত সম্পত্তি বেদখল হয়ে গেছে শুধুমাত্র মসজিদটি অক্ষত আছে। মৌজা ইছলাবাদ JL -75 পরিমাণ ৩৪ শতক দাগ নাম্বার ২৪৬। ওয়ার্ড নাম্বার ১১। E C নম্বর 15621.সম্রাট আওরঙ্গজেবের জন্ম 3 নভেম্বর 1618 ,মৃত্যু 3 মার্চ 1707, এই মসজিদ নির্মাণ 1688 খ্রিষ্টাব্দ। এই মসজিদ ২০১৩ সালে নতুন করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও মেরামত করে ৭৫ বছর পর জনগণের জন্য খুলে দেয়া হয়।বর্তমান মজিদ কমিটির সম্পাদক হাজী হবিবুর রহমান ও সভাপতি হাজী ইয়াসিন। এলাকায় মুসলিম জনবসতি নেই। ইছলা বাজারের অন্য পাড়া থেকে কয়েকজন এসে নামাজ আদায় করেন, এবং প্রতি শুক্রবার বর্ধমান কোর্ট কমপাউন্ড থেকে বেশ কিছু আইনজীবী এখানেই নামাজ আদায় করেন।