সরকারি হোমে দুয়ারে সরকার পরিষেবা দিলেন বিডিও

সেখ সামসুদ্দিন, ৮ এপ্রিলঃ কলনবগ্রামের নিবেদিতা ভবন, স্বধার গৃহ, একটি সরকারি হোম। যেখানে বর্তমানে ১৯ জন আবাসিক রয়েছেন। এখানে ৬৯ বছরের ময়না মাইতি যেমন আছেন, আছে পাঁচ বছরের পার্বতী মাঝি। এদের কার কোথায় বাড়ি অনেকেরই জানা নেই। কেউ এসেছে ঝাড়খন্ড থেকে, তো কেউ এসেছে ঊড়িষ্যা থেকে। অনেকেই বহু বছর ধরে এই হোমে আছে। কিন্তু এরা প্রায় সকলেই সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত। আজ যেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দুয়ারের সরকার বুথে বুথে গিয়ে মানুষের কাছে সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দিচ্ছে, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে নিবেদিতা হোমের আবাসিকরা বঞ্চিত থেকে গেছে।

    এবার এই আবাসিকদের সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দিতে দুয়ারের সরকার গেল হোমে। মেমারি-১ ব্লকের বিডিও মহঃ আলি ওয়ালি উল্লাহ নিজে উদ্যোগ নিয়ে আজ স্পেশাল দুয়ারের সরকার – মোবাইল ক্যাম্প নিয়ে হাজির হন নিবেদিতা হোমে। বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি আধিকারিক, ব্যাঙ্কের কর্মী সহ অন্যান্য কর্মীদের নিয়ে বিডিও সকাল সকাল হোমের দরজায় কড়া নাড়েন। তারপর নিজে সারাদিন বসে থেকে হোমের আবাসিকদের সরকারি পরিষেবা দিতে যথাসাধ্য চেষ্টা করেন।
    এদিন পুজা মাঝি, পার্বতী মাঝি সহ ছয় জনের ব্যাঙ্ক এক্যাউন্ট খোলার বন্দোব্যস্ত করা হয়। ময়না মাইতি, সুমিত্রা চৌধুরীরা বয়ষ্ক ভাতার জন্য আবেদনপত্র জমা করেন, সবিতা দাস সহ ছয় জনের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদনপত্র জমা নেওয়া হয়, ১৮ জনের খাদ্যসাথীর আওতায় আসার জন্য রেশন কার্ডের ব্যবস্থা করা হয়। বিডিও সহ সরকারি আধিকারিকদের নিজেদের হোমে দেখতে পেয়ে আবাসিকরা যেমন খুশি হলেন, ঠিক তেমনি খুশি হলেন এই হোমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী চম্পা মুদি এবং কাউন্সিলার তনুশ্রী হেমব্রম। চম্পা মুদি বলেন, আমাদের এই হোমের আবাসিকদের জন্য আমরা মেমারি-১ বিডিও স্যারকে দরবার করেছিলাম, যাতে এরা দুয়ারে সরকারের সফলতা পায়। উনি নিজে উদ্যোগ নিয়ে আজ এসে যতগুলো সম্ভব সেই পরিষেবাগুলি পাবার জন্য ব্যবস্থা করেন। এতে তারা খুশি, ব্লক প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান। এই সমস্ত পরিষেবাগুলি এরা খুব তাড়াতাড়ি হাতে পেয়ে যাবেন বলে জানান মেমারি-১ ব্লকের বিডিও ডা. আলি মহঃ ওয়ালি উল্লাহ। তিনি আরও জানান, ‘হোমের পক্ষ থেকে সরকারি পরিষেবা পাবার জন্য আবেদন করেছিলেন। কিছু কিছু পদ্ধতিগত সমস্যা থাকার জন্য সব পরিষেবা দেওয়া সম্ভবপর হয়ে উঠছিলো না। এখন যতগুলি প্রকল্পে সুবিধা পাবার যোগ্য হলো সেইগুলি ব্যবস্থা করা হয়। জেলাশাসকের নির্দেশ মোতাবেক আজ স্পেশাল দুয়ারে সরকার টিম নিয়ে এখানে এসেছিলাম। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি এরা সরকারি পরিষেবাগুলির সুফল পাবেন।’