শততম বর্ষ বন্দি বিদ্রোহী কবি নৈহাটি স্টেশনে

আয়ুব আলি,নতুন গতি : ২৩শে নভেম্বর ১৯২২, কাজী নজরুল ইসলাম ঐদিন কুমিল্লায় গ্রেপ্তার হলেন। কলকাতায় এনে কবিকে ২৫শে নভেম্বর চিফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট সুইন হো’র আদালতে হাজির করানো হল। ১৬ ই জানুয়ারি ১৯২৩ নজরুলের এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। তাঁকে আলিপুর সেন্ট্রাল জেল এ পাঠানো হয়। তিন মাস পরেই ১৪ ই এপ্রিল ১৯২৩ কতৃপক্ষ নজরুলকে অকস্মাৎ হুগলী জেলে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেন। বন্দি কবিকে ১৪ ই এপ্রিল তারিখে রেলগাড়িতে ভায়া নৈহাটি স্টেশন হুগলী জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। নৈহাটি স্টেশনে কবির যাত্রাবিরতি নানাদিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। বিদ্রোহী কবিকে সেদিন বন্দি অবস্থায় পুলিশের হেফাজতে কড়া নজরদারীর মধ্যে নৈহাটি স্টেশনে কাটাতে হয়। বিশ্রামকালে তাঁকে ঘিরে ছিল সশস্ত্র পুলিশ তথা সাধারণ কনস্টেবল সহ একজন গোয়েন্দা ও একজন সার্জেন্ট। রাস্তায় নিয়ে আসার পথে বন্দি কবির কোমরে দড়ি ও হাতে হাতকড়ি পরানো ছিল। বিশ্রামকালে বাইরে তখন বহু মানুষ দ্রুত জড়ো হন। তাদের কন্ঠে কবির নামে জয়ধ্বনি। কবির পরনে ছিল ডোরাকাটা হাফ- পাঞ্জাবি ও ইজের। কাঁধে ডোরাকাটা গামছা। কবির বিচারকের রায় অনুযায়ী তখন বিশেষ শ্রেণীর কয়েদীর মর্যাদা লাভের অধিকারী। তাই নৈহাটি স্টেশন থেকে সাধারন কয়েদীর ঐ পোষাক পরে তিনি রেলগাড়িতে হুগলী যেতে রাজি হলেন না। ভয়ে ও গোলমালের আশঙ্কায় কতৃপক্ষ বাধ্য হয়ে নৈহাটি স্টেশনে কবিকে সাধারন পোষাক পরার অনুমতি দেন। বিশ্রামকালে কবি পোশাক বদল করেই অবশেষে হুগলী জেলের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। ‌‌ নৈহাটি স্টেশনে নজরুলের পুলিশ পাহারায় বিশ্রাম ও অবস্থানের পুন্য স্মৃতি জড়িত ঐতিহাসিক ১৪ ই এপ্রিল ১৯২৩ দিনটিকে আজ ১৪ ই এপ্রিল ২০২৩ শততম দিনে নৈহাটি জি আর পি এস – এ বর্তমান ভারপ্রাপ্ত ইন্সপেক্টর বাসুদেব মল্লিক মহাশয়ের উদ্যোগে নজরুল প্রেমী সাংবাদিক আয়ুব আলি র সহযোগিতায় শতবর্ষ কে স্মরণ ও স্রদ্ধার এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নজরুল চর্চা কেন্দ্র (বারাসাত ) র সভাপতি অধ্যক্ষ ড়: শেখ কামাল উদ্দিন, ছায়ানট (কলকাতা)র দেবযানী চৌধুরী,নৈহাটি স্বাধীনতা দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি শ্রী পরেশনাথ সরকার,নৈহাটি অগ্নিবীণা সাংস্কৃতিক সংগঠন এর সম্পাদক চিরন্তন দে, শিবদাসপুর মানব চেতনা ওয়েলফেয়ার সমিতির সম্পাদক সাবিরুল গনি সহ অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা।