করোনার থাবায় বন্ধ হলো স্কুল, নেতা-মন্ত্রীদেরই কাঠগড়ায় দাঁড় করালো অষ্টম শ্রেণীর পড়ুয়া

করোনার থাবায় বন্ধ হলো স্কুল, নেতা-মন্ত্রীদেরই কাঠগড়ায় দাঁড় করালো অষ্টম শ্রেণীর পড়ুয়া

    নতুন গতি প্রতিবেদক : নির্বাচনকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে শিকেয় উঠেছে করোনা বিধি। সচেতনতা নেই কোনো নেতা মন্ত্রীদের মধ্যেও। জমায়েত হচ্ছেন মানুষ। মাস্ক পরতেও দেখা যাচ্ছে না অনেককে। সে কারণেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। রাজ্যের বিভিন্ন স্তরের নেতা মন্ত্রী সহ সমস্ত মানুষ অসচেতন ও করোনাকে অবজ্ঞার চোখে দেখছেন বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

    কিছুদিন আগে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের স্টেট ব্যাঙ্কের সার্ভিস ম্যানেজার করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। এবার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ল হরিশ্চন্দ্রপুর পিপলা উচ্চ-বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক,একজন ক্লার্ক সহ স্কুলের ক্যাজুয়াল শিক্ষক। যা নিয়ে রিতিমত উদ্বেগে রয়েছে পড়ুয়া ও অভিভাবক, স্থানীয়দের মধ্যে অপরদিকে হরিশ্চন্দ্রপুর হাইস্কুল এবং হরিশ্চন্দ্রপুর কীরণবালা স্কুল চত্বরে দেখা যাচ্ছে অন্য চিত্র। মাস্ক ছাড়াই আসছে পড়ুয়ারা, দেওয়া হচ্ছে চাল ডাল। এই বিষয়ে এক ক্ষুদেকে প্রশ্ন করা হলে, সে উত্তর দেয়, তারা বড়োদের দেখেই তো শিখবে। নেতা-মন্ত্রীরা মাস্ক না পরলে তারা পরবে কেন? যদিও নেতারা এই প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

    স্কুল পড়ুয়া সোনু সাহা বলে, “বড়ো বড়ো নেতা মন্ত্রীরা তো মাস্ক পরেনা আমরা পরে কী করবো? বড়োরাই পরেনা, আমরা তো তাদের দেখেই শিখবো।”

    হরিশ্চন্দ্রপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন বিষয়টা হচ্ছে শুধু স্কুল বললে ভুল হবে। সমগ্র রাজ্যেই লাগামছাড়া ভাবে মানুষ ঘোরাফেরা করছে। বিভিন্ন নেতা-মন্ত্রীদের মিটিং মিছিলে কোনো স্বাস্থ্য বিধি না মেনেই প্রচারে নামছে সব তাতে আশঙ্কায় ভূগছি। স্কুলেও নিয়ম বিধি বেশ কিছুসময় শিথিল হয়ে যাচ্ছে। আমার পার্শ্ববর্তী স্কুলে কয়েকজন শিক্ষক মহাশয় করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। যা পরিস্থিতি দেখছি তাতে স্কুল বন্ধ করে দেওয়া উচিত বলে মনে করছি।”যেভাবে নিঃশব্দে করোনা আবার তার থাবা বসাচ্ছে তাতে আগামী দিন খুব একটা সুখকর হবে না বলে জানাচ্ছে বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যে ভোটকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে আরও বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীরা। সাধারণ মানুষের কথা না ভেবে কোনো রকম সচেতনতা স্বাস্থ্য বিধি না মেনেই ভোটের প্রচার করছে, জনসভা করছেন সব। এতে হাজার হাজার মানুষের জীবন বিপন্ন হচ্ছে দিনের পর দিন।

    হরিশ্চন্দ্রপুর চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি ডাবলু রজক বলেন পিপলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক একজন ক্লার্ক সহ একজন কেজুয়াল শিক্ষক করোনা পজিটিভ। ঘটনার পর আতঙ্কে রয়েছে গোটা এলাকা। নির্বাচনের সময় আরও বেশি ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। প্রশাসনের কাছে আবেদন যাতে সমস্ত সুরক্ষার ব্যবস্থা করে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। আমার নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঠিক করবো যে কখন কীভাবে দোকান খুলবো কখন বন্ধ করব।”

    ক্রমশ আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় বিভিন্ন জায়গায় জারি হচ্ছে নাইট কার্ফু। কোথাও নিয়ম আরও কঠোর করা হচ্ছে। প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হওয়ার মানা করা হয়েছে, কিন্তু কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই পশ্চিমবঙ্গের নেতা মন্ত্রীদের। বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী ৪ সপ্তাহ খুব গুরুত্বপূর্ণ।