ভিনরাজ্যে আর না, নিজ জন্মস্থানে অটো চালিয়ে পরিবারের মুখে হাসি ফোটাচ্ছেন সেলিম

নিজস্ব সংবাদদাতা, নতুন গতি, মোথাবাড়ি: ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়ে সেখানকার মালিকপক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সরকারের চক্ষুসূল হওয়ার পাত্র নন বছর সাঁইত্রিশের সেলিম শেখ। আর ভিনরাজ্যে কাজে নয়। কিনে ফেলেছেন আস্ত একটি অটো। আর লকডাউন শিথিল হতেই নেমে পড়েছেন রাস্তায়। যা রোজগার হচ্ছে, তাতে বেশ চলে যাচ্ছে তাঁর। নিজের সংসারকে রেখে অন্যপ্রান্তে থাকা আর নয়। পরিবারের দুশ্চিন্তা আর তাড়া করে বেড়ানোর কোনও প্রশ্নও নেই। এখন পরিবারের পাশে সময়। তাঁর দেখানো পথে আসতে চাইছেন অন্যান্য পরিযায়ী শ্রমিকেরা। স্বাধীনভাবে তাঁরা রোজগার করতে চান।

    সেলিমের বাড়ি মোথাবাড়ি থানার বাঙ্গিটোলা এলাকার পাঁচকড়িটোলা গ্রামে। ১৯৯৯ সালে গঙ্গার ভাঙ্গনে ভিটেমাটি ও সর্বস্ব হারিয়ে বাড়ি করেন এই পাঁচকড়িটোলা গ্রামে। ভিনরাজ্যে মজুরের কাজ করছিলেন তিনি। লকডাউনের পূর্বেই ফিরে এসেছেন বাড়িতে। তিনি স্বনির্ভর হয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চান। তিনি অটো কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করতেই তাঁকে অটো কিনতে অনুপ্রেরণা ও সাহায্য করেছেন মোথাবাড়ি বিধানসভার তৃণমূল কংগ্রেসের কো-‌চেয়ারম্যান তথা সমাজসেবী মোহা: নজরুল ইসলাম। সেলিমের কথায়, অথোরাইজড চিঠির দরকার, তা দেওয়ার পাশাপাশি সেলিমের পাশে দাঁড়িয়েছেন নজরুল ইসলাম। সেলিম বলেন, আমি এখানে ওখানে ঘুরে নতুন অটো পেতে হিমসিম খায়। এ দরজা ও দরজা ঘুরি। ‘‌এখন অটো কিনে আমি স্বাধীনভাবে রোজগার করতে পারছি। কোনও ভয় পিছু তারা করে বেড়াচ্ছে না। নিজের জন্মস্থানে থাকার আলাদাই আনন্দ রয়েছে। ভিনরাজ্যে ইতিপূর্বে কাজ করতে গিয়েছিলাম। বাড়িতে এসেই স্বাধীনভাবে কাজ করার সংকল্প গ্রহণ করি। নজরুল ইসলামের সহযোগিতা অবদান কখনো ভূলব না “এদিকে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‌আমি চাই সেলিমের মতো অন্যরাও নিজেদের বাড়িতে থেকে রোজগার করুক। সেলিম যখন প্রস্তাব দেয়, আমি উৎসাহের সঙ্গে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছি। সেলিমের মতো অন্যান্য যুবক ও শ্রমিকেরা উৎসাহ দেখালে আমি ওঁদের পাশে থাকবো। আমি চাই কাজ পেয়ে প্রত্যেকে স্বনির্ভর হোক ও পরিবারের মুখে হাসি ফোটাক’‌ এখন পঞ্চানন্দপুর, বাঙ্গিটোলা, গীতামোড় কালিয়াচক প্রভৃতি রুটে সেলিমের অটো গাড়ি চলছে। নিজেই বসছেন চালকের আসনে। এখন দিনে ২০০-‌৪০০ টাকা আয় হয়। আজ নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে খুব খুশি। ৪ ছেলে-‌মেয়ে নিয়ে চাপমুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করতে চান সেলিম। মোথাবাড়ি থানা এলাকার কয়েক হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ভিনরাজ্যে মজুরের কাজ করেন। সেলিম এখন তাঁদের কাছে আইকন। শ্রমিকদের অনেকেই এখন সেলিমের মতো কাজ করতে চান। অনেকে ইতিমধ্যে সেলিমের পরামর্শ নেওয়ার জন্য যোগাযোগও করেছেন।