সিরাজ মঞ্চ উদ্বোধন : ঐতিহ্য ও মানবিকতার মিলনোৎসব

সুবিদ আলি মোল্লা, নতুন গতি : গত ৯ ই আগস্ট, ২০২৫ ,শনিবার ছিল পবিত্র রাখি পূর্ণিমা ও আদিবাসী দিবস। এই পবিত্র দিন উপলক্ষে বাদুড়িয়া থানার অন্তর্গত,চাতরা অঞ্চলের ঘোষপুর গ্রামের দীনেশ স্মৃতি পাঠাগার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হল বহু প্রতীক্ষিত সিরাজ মঞ্চ উদ্বোধন অনুষ্ঠান। নবাব সিরাজউদ্দৌলার নামাঙ্কিত এই মঞ্চের উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে একসঙ্গে পালিত হয় রাখি বন্ধন, আদিবাসী দিবস ও বিশ্ব শান্তি দিবস—যা গোটা অনুষ্ঠানকে ইতিহাস, সংস্কৃতি ও মানবিকতার এক অনন্য উৎসবে পরিণত করে।

    অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নবাব সিরাজউদ্দৌলার অষ্টম বংশধর, প্রখ্যাত ইতিহাস গবেষক ও লেখক সৈয়দ মোহাম্মদ আজগর রেজা। আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাই কমিশনের প্রথম সচিব তারিক চয়ন, জাতীয় শিক্ষক ডঃ নিরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় ও শিক্ষক শ্রী প্রদীপ রক্ষিত। সকল অতিথি তাঁদের বক্তব্যে নবাব সিরাজউদ্দৌলার আত্মত্যাগ, ঐতিহাসিক শিক্ষা এবং বর্তমান প্রজন্মের সাংস্কৃতিক দায়িত্বের কথা উল্লেখ করেন।

    বারাসাত আকাদেমি অফ কালচার ও দীনেশ স্মৃতি পাঠাগারের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত
    এই অনুষ্ঠানের সকালে রাখি বন্ধনের মধ্য দিয়ে শুভ সূচনা হয়। সেখানে উপস্থিত সকলের হাতে ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির প্রতীক হিসেবে রাখি বাঁধা হয়। এরপর আদিবাসী দিবস উপলক্ষে স্থানীয় ও বহিরাগত আদিবাসী সম্প্রদায়ের শিল্পীরা পরিবেশন করেন মনোমুগ্ধকর সংগীত ও নৃত্য, যা দর্শকদের মুগ্ধ করে। পরবর্তী আকর্ষণ ছিল মসলন্দপুর ইমন মাইন সেন্টারের প্রযোজন মুকাভিনয়, রোবট। বিশ্ব শান্তি দিবসের প্রার্থনায় মিলেমিশে যায় সব ধর্ম, জাতি ও প্রজন্মের মানুষ।

    বারাসাত আকাদেমির সভাপতি তৈয়বউল ইসলাম বলেন, “নবাব সিরাজউদ্দৌলার নামের সঙ্গে এই মঞ্চ শুধু ইতিহাস নয়, আমাদের সাংস্কৃতিক চেতনাকেও এক নতুন দিশা দেবে। এই আয়োজনের মাধ্যমে আমরা অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের মধ্যে এক সেতুবন্ধন গড়ে তুলতে চাই।”

    দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে ছিল ইতিহাসচর্চা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও সৌহার্দ্যের আবহ। সিরাজ মঞ্চ উদ্বোধনের মাধ্যমে ঘোষপুরের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বারাসাত আকাদেমি হবে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনাকারী, যা আগামী দিনে নাটক, সংগীত, সাহিত্য, ইতিহাসচর্চা ও শিল্প—অর্থাৎ চিত্রশিল্পের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠবে—এমন প্রত্যাশাই ব্যক্ত করেছেন উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা।