বিরোধীদের একজোট হয়ে লড়াইয়ের জন্য কোমর বাঁধার পরামর্শ দিলেন কংগ্রেস প্রধান সনিয়া গান্ধী

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: পাখির চোখ ২০২৪। নজরে উত্তরপ্রদেশ সহ বেশ কয়েক রাজ্যের বিধানসভা ভোট। বিরোধীদের একজোট হয়ে লড়াইয়ের জন্য কোমর বাঁধার পরামর্শ দিলেন কংগ্রেস প্রধান সনিয়া গান্ধী। পরিকল্পনা একযোগে বিজেপি তথা এনডিএ-এর বিরোধীতার কথা বলেন তিনি।

    দেশব্যাপী বিজেপি বিরোধী জোট পোক্ত করতে তৃণমূল সুপ্রিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ ১৯ দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ দিন ভার্চুয়াল বৈঠক করেন সনিয়া গান্ধী। সেখানেই তিনি বিরোধী ঐক্যের বার্তা দিয়েছেন। বলেছেন, “যুক্তির উপর ভিত্তি করে পরিকল্পনা করতে হবে। প্রাদেশিক বৈরতা দূরে সরিয়ে এক জোট হয়ে বিজেপি বিরোধিতা করতে হবে। দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের মূল্যবোধ, সংবিধানের নীতি এবং বিধানগুলিতে বিশ্বাসী এক সরকার গঠনের লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।”

    পেগাসাস ইস্যুতে সরগরম হয়েছে সদস্য সমাপ্ত সংসদের বাদল অধিবেশন। পেগাসাস ইস্যুতে তদন্ত ও সরকারের জবাবদিবি চেয়ে অনড় ছিল বিরোধী দলগুলো। পাল্টা তা না দিতে রাজি হয়নি সরকারপক্ষ। এই টানাপোড়েনের মাঝেই বিরোধীদের চেঁচামিচি, প্রতিবাদের মধ্যেই অবশ্য বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাস করিয়েছে সরকার পক্ষ। যা বিরোধী শিবিরের কণ্ঠরোধ বলেই তুলে ধরেছে কংগ্রেস, তৃণমূল, ডিএমকে, শিবসেনা সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। এদিনের বৈঠকে সনিয়া গান্ধী তাঁর বক্তব্যেও গেরুয়া সরকারের এই আচরণের নিন্দা করা হয়। একই সঙ্গে বাদল অধিবেশজুড়ে সংসদের উভয় কক্ষের অভ্যন্তরে ও বাইরে বিরোধীদের একজোট হয়ে সরকার বিরোধীতারও প্রশংসা করেছেন তিনি।

    এপ্রসঙ্গে কংগ্রেস সভানেত্রী বলেছেন, “জনসাধারণের স্বার্থবাহী জরুরী বিষয় নিয়ে সংসদে আলোচনা ও বিতর্ক করতে সরকার পক্ষের অনীহা তার অহংকারী সত্ত্বার পরিচয়। তাসত্ত্বেও এই অধিবেশন বিরোধীদের এককাট্টা হওয়ার নজির হিসাবে ধরা থাকবে। অধিবেশন কক্ষে কীভাবে প্রতিবাদ হবে তা বিভিন্ন বিরোধী দলের নেতৃত্ব পরিকল্পনা ও সমন্বয় করে স্থির করেছেন।”

    কংগ্রেস প্রধানের দাবি, ওবিসিদের অধিকার রক্ষার স্বার্থে সংবিধান সংশোধন বিল পাসে বিরোধী দলগুলো এই অধিবেশনে সরকার পক্ষকে সমর্থন করেছে। অর্থাৎ তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে, দেশের স্বার্থবাহী বিভিন্ন সিদ্ধান্তে বিরোধিরা শাসকের পাশেই রয়েছে। দায়িত্বশীল বিরোধীতাই তাঁদের উদ্দেশ্য।

    সনিয়া গান্ধীর মতে, এবার সংসদের মধ্যে বিরোধী জোটের ঐক্য ছিল নজরকাড়া, কিন্তু বৃহত্তর রাজনৈতিক লড়াই তার বাইরে। বিজেপি বিরোধীতায় পথ যে অনেক লম্বা ও তার পরিকল্পিত প্রস্তুতি প্রয়োজন সেই বার্তাই দিলেন কংগ্রেস প্রধান।

    ১৫ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয় এই ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দিতে। মমতা-সোনিয়া ছাড়াও উপস্থিত উদ্ধব ঠাকরে ও এম কে স্ট্যালিন, শরদ পাওয়ার, হেমন্ত সোরেনরা। যোগ দেন বাম নেতা সীতারাম ইয়েচুরিও। কিন্তু উল্লেখযোগ্যভাবে বৈঠকে অনুপস্থিত সমাজবাদী পার্টির প্রতিনিধি। ফলে বিরোধী ঐক্য বাস্তবে কতটা সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।