বামপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী শ্রীলেখা মিত্র এবার বাম শিবিরের ওপর বেজায় চটলেন

নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক: অভিনেতা রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর এবার বাম শিবিরের ওপর বেজায় চটলেন শ্রীলেখা মিত্র। একুশের বিধানসভা ভোটের সময় থেকেই যে কোনও রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে তিনি বেজায় সরব। বিরোধীপক্ষ সবুজ-গেরুয়া কোনও শিবিরকেই ছেড়ে কথা বলেন না অভিনেত্রী। আদ্যোপান্ত বামপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী সেই অভিনেত্রীই কিনা এবার সিপিএম ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিলেন।

    কিন্তু কেন? আসলে সোমবার সন্ধেবেলা সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ বিজেপির এক তারকা সদস্য রূপা ভট্টাচার্য এবং সদ্য বিজেপি-ত্যাগী অনিন্দ্য পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যাদবপুরে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছেন। শুধু তাই নয়, সেই ছবি শেয়ারও করেছেন। উপলক্ষ্য ছিল যাদবপুর শ্রমজীবী ক্যান্টিনের ৫০০ দিন উপলক্ষে মিছিলে হাঁটায যাতে কিনা যোগ দিয়েছিলেন রূপা-অনিন্দ্যও। আর তাতেই সিনে ইন্ডাস্ট্রির প্রযোজক রানা সরকার খানিক রসিকতা করেই প্রশ্নবাণ ছুঁড়েছেন যে, “এ কী রূপা ভট্টাচার্যও সিপিএম হয়ে গেল নাকি?” তাতে শতরূপের সরস উত্তর- “হ্যাঁ। এবার তুমিও হয়ে যাও।” সিপিএম নেতার সঙ্গে বিজেপি তারকা সদস্যের সেই ছবি ভাইরাল হতে সময় নেয়নি। রাহুলের মতো শ্রীলেখা মিত্রের নজরেও এসেছে। আর সেই প্রেক্ষিতেই রেগে গিয়েছেন টলিউড নায়িকা।

    শ্রীলেখার সাফ মন্তব্য, “নিজেকে কমিউনিস্ট বলার মতো অত সাহস আমার নেই, তবে হ্যাঁ সারা জীবন ধরে বামপন্থা রাজনৈতিক মতাদর্শেই বিশ্বাসী করে এসেছি। অন্য দলের থেকেও যোগ দেওয়ার প্রস্তাব এসেছিল। শুধু তাই নয়, ভোটে লড়ার জন্য টিকিটের প্রলোভনও দেখানো হয়েছিল। সেই প্রস্তাব লুফে নিলে হয়তো জীবনটা আরও সহজ হয়ে যেত, তাই নয় কী! তবে সেসব না করে নিজের রাজনৈতিক মতাদর্শেই অটুট থেকেছি। কোনওরকম অভিযোগ ছাড়াই ভোটের সময় যখন যেরকম প্রয়োজন সিপিএমের জন্য প্রচার করে গিয়েছি।”

    এরপরই রাগের কারণ ব্যক্ত করলেন শ্রীলেখা। বললেন, “ইডাস্ট্রির বেশ ক’জন জানি না কেন, কোন মতাদর্শের ভিত্তিতে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিল, তারাই জানে হয়তো…! তাদের মধ্যে কেউ ভোটের টিকিট পেয়েছে, বাকিরা, অর্থাৎ ‘মানুষের জন্য কাজ করতে চাওয়া’ তারকারা গেরুয়া শিবিরে বাতিলের খাতায় রয়ে গিয়েছে। তাদের মধ্যে ক’জনকে আবার এখন সিপিএমের মঞ্চেও দেখা যাচ্ছে। এবার সেই সমস্ত মানুষগুলিকে যদি দলে টানা হয়, তাহলে ধরে নিচ্ছি আমরা উদার। কিন্তু এমনটা ঘটলে আমি সিপিএমের সঙ্গে সমস্তরকম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করব।”

    পাশাপাশি অভিনেত্রী এও উল্লেখ করলেন যে, “অনেক অপমান আর কষ্ট নিয়েই বলছি। এই মানুষগুলোই প্রকাশ্যে আমাদের অনেক অপমান করেছে। আমাকে কখনও ‘ছিপিএম’ বলেছে, আবার কখনও বা ‘ছিলেখা’ তকমা সেঁটেছে। শুধু তাই নয়। প্রকাশ্যে আইনি নোটিস ধরানোর হুমকিও দিয়েছিল। তাই, ওই মানুষগুলোর সঙ্গে একই মঞ্চে কখনও দাঁড়াবো না। ভীষণ আঘাত পেয়েছি। অপমানিত বোধ করছি, দুঃখিত।”