কৃষি বিল নিয়ে এবার বেসুরো রাজস্থানের রাষ্ট্রীয় লোকতান্ত্রিক পার্টি বিজেপির সঙ্গে জোট ভেঙে দেওয়ার হুমকি,সমর্থন আন্দোলনকে

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: কেন্দ্রের পাশ করা কৃষিবিলের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন উত্তর ভারতের কৃষকরা। বিরোধী দলগুলি কৃষক সমাজের তোলা দাবিগুলি সমর্থন করছে। এবার এই ইস্যুতে শাসক শিবিরেই মতভেদ। রাজস্থানে বিজেপির জোটসঙ্গী হনুমান বেনিওয়ালের রাষ্ট্রীয় লোকতান্ত্রিক পার্টি কেন্দ্র তিনটি কৃষি আইন প্রত্য়াহার না করলে বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক রাখার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে তারা বাধ্য হবে বলে জানিয়ে দিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে।
বেনিওয়াল এককালে বিজেপিতে ছিলেন। ২০১৮-র রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে নিজের দল গড়ে ২০১৯ এর লোকসভা ভোটের ঠিক মুখে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-তে সামিল হন। ২০১৯ এ তিনি নগৌর থেকে জয়ী হন। রাজস্থান বিধানসভা ভোটেও তাঁর দল তিনটি আসনে জেতে, কয়েকটি আসনে জোর টক্কর দেয়।
জাঠ নেতা বেনিওয়াল যেভাবে শাহকে এনডিএ-তে থাকবেন কিনা, তা ভেবে দেখবেন বলে জানিয়েছেন, তা থেকে ইঙ্গিত মিলছে, কেন্দ্রের বিজেপি জোটের কার্যকর করা তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষক বিক্ষোভ, প্রতিবাদ তাঁর দলকেও কতটা নাড়া দিয়েছে। ভারতের কৃষকরা এতদিন যেভাবে কয়েক দশকের পুরানো সরকার নিয়ন্ত্রিত কৃষিপণ্যের বাজারের মাধ্য়মে লেনদেন করে আসছিলেন, বিলের মাধ্যমে তার পাল্টা অবাধ বাজার তৈরি করে তার চেহারাটাই বদলে দেওয়া হবে। নয়া আইনে কৃষকদের তথাকথিত সরকার-নিয়ন্ত্রিত মান্ডি সিস্টেমের বাইরে অবাধে কৃষিপণ্য কেনাবেচার রাস্তা খুলে যাচ্ছে, বেসরকারি ব্যবসায়ীরা ভবিষ্যতের বিক্রির জন্য প্রচুর পরিমাণে নিত্য়প্রয়োজনীয় কৃষিপণ্য ঘরে মজুত রাখতে পারবে, চুক্তি চাষের নতুন নিয়মও চালু করা যাবে।

    প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহ কেন্দ্রের মন্ত্রীরা কৃষি আইন নিয়ে চাষিদের উদ্বেগ নিরসনে আশ্বাস দিচ্ছেন, এতে তাঁদের সামনে নতুন সুযোগের দরজা খুলে যাবে। কিন্তু রাস্তায় নামা কৃষক সমাজের নেতারা তাতে ভরসা পাচ্ছেন না। তাঁরা আইন প্রত্য়াহারের দাবিতে আন্দোলনে অনড়।
    এই প্রেক্ষাপটেই শাহকে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি একগুচ্ছ ট্য়ুইটে বেনিওয়াল জানিয়েছেন, কেন্দ্র দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে তাঁর দল জোটে থাকবে কিনা, ভাবতে বাধ্য হবে। প্রসঙ্গত, কৃষক ও যুবকরা তাঁর দলের সমর্থনের অন্যতম ভিত্তি।
    রাজস্থানের মুখ্যমন্রী অশোক গেহলত কৃষি আইন প্রত্যাহার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি পাঠানোর পরদিনই বেনিওয়াল মুখ খুললেন। স্বামীনাথন কমিটির সুপারিশগুলি কার্যকর করে দিল্লিতে কৃষকদের সঙ্গে সদর্থক মানসিকতা নিয়ে কেন্দ্র বৈঠকে বসুক, দাবি করেন তিনি। আগেই সম্প্রচারিত ভিডিও বার্তায় বেনিওয়াল সোস্যাল মিডিয়ায়, রাস্তায় নেমে আরএলপি তিনটি কৃষি আইনের প্রতিবাদ করেছে বলে জানান। বলেন, আজ শাহকে লিখেছি, আইনগুলি প্রত্যাহার না হলে আমরা এনডিএ-তে থাকার ব্যাপারে আবার ভাবব। আমরা কৃষকদের সঙ্গে আছি, প্রয়োজনে দিল্লিতে মিছিল করে যাব। প্রধানমন্ত্রী ও শাহের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে রাজধানীতে ধরনায় বসার জায়গা দেওয়া উচিত। কৃষকদের সঙ্গে কোনও খারাপ আচরণ করা হলে পুরো দেশের কৃষকরা দিল্লি ঘেরাও করতে পথে নামবেন।