|
---|
মনোয়ার হোসেন : বর্ধমানের উপকণ্ঠে আলিশা বাসস্ট্যান্ডের কাছে বৈকুণ্ঠ পুর ২ এর অন্তর গত, চাঁদশোনা গ্রামের (মৌজা হাটসিমুল J L 81) সুপ্রাচীন ৫০০ বছরের পুরাতন এক গম্বুজ ও চার মিনার বিশিষ্ট মুঘল স্থাপত্যের নিদর্শণ, যা আজ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে, তার কথা বলবো। মসজিদ টি মুঘল স্থাপত্যের নিদর্শণ দেখলে ই বোঝা যায়, মুঘলদের সময়কার পারস্যর গোল গম্বুজ, খিলেনের কাজ, মিনার, ছোটো ছোটো ইট, চুন সুরকির গথনি, ও চুন সুরকির প্লাস্টার, এবং মাটি থেকে অন্তত ২০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত ছিল, যাতে দুর থেকে মসজিদ টি দেখতে পাওয়া যায়,।
বর্তমান অবস্থান একেবারে DVC (বর্তমানে LBMC অর্থাৎ left Bank main canal) এর উত্তর পাড়ে(২৩৭৮ থেকে ২৪২৭ চেনের মাঝা মাঝি, পামরাহ্ ও হাট শিমুল গ্রামের সংযোগ স্থল, রাম নারায়ণ গোস্বামী সেতুর কাছাকাছি প্রাচীন মসজিদ টি অবস্থিত), এর আগেও ১৯৭৮,২০০০, সালে বন্যায় মসজিদে জল ঢুকে অনেক ক্ষতি করেছিল, এছাড়া প্রতি বর্ষাতে ই ভাঙ্গনে ক্ষতি করছে, সেচ দপ্তর প্রাচীন, হেরিটেজ, ঐতিহাসিক মসজিদ টির রক্ষনা বেক্ষণের কোনো বন্দবস্তা করছে না, LBMC ঔ খানে জরুরী ভিত্তিতে বোল্ডার পিচিং করে দিলে , প্রাচীন স্থাপত্য টা বাঁচানো সম্ভব হবে,
মসজিদে দক্ষিণ দিকের জায়গাটি১৯৫২ সাল থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত DVC খাল খনন করা হয়, ১৯৫৩ সালে দূর্গাপুরব্যারেজ এর কাজ শেষ হয়, এবং হাজার 1964- 65 সাল থেকে এই খাল দিয়ে হুগলি জেলাকে চাষের জল দেয়া শুরু হয়,এই মসজিদ টি কে রেখে খাল খনন করার সময়ে সমগ্র গ্রাম বাসীকে, দূরে কোথাও সরিয়ে দেওয়া হয!
মসজিদে উত্তরে বিশাল বিশাল FCI এর গোডাউন আছে ,CS রেকর্ড এ মসজিদে মতোয়ালী সৈয়দ মোহাম্মদ মুসা পিতা হাফেজ গোলাম রব্বানী, নামে ছিলো, তিনি ১৯১৪ সালে , বর্তমান fci এর মালিক রণধীর ভুতুরিয়া র দাদুর বাবা (প্রপিতামহ) চাঁদমল ভূতুরিয়া কে ৩৩.৯৮একর(১০২ বিঘা) বিক্রয় করেন ৫০০ শত টাকায়, এদের পূর্ব পুরুষ গঙ্গারাম ভূতুরীয়া প্রায় ৩৫০ বছর আগে, গ্রাম- লাডলু, জেলা- নগর, যোধপুর থেকে বর্ধমান আসেন ভাগ্য অন্বেষণে, তারা ৩৫০ বছর ধরেই মসজিদ টি দেখেছেন, তাদের ও সামান্য জমি ছিলো, চাঁদ শোনা তে, পরে এই সম্পত্তি ক্রয় করেন,
রণধীর ভুটুরিয়া জানালেন যে ১৮৭৭ সালে fci কে ভাড়া দেবার জন্য গোডাউন এর কাজ শুরু করেন, তখন ৪০০ মুসলীম রাজ মিস্ত্রি, শ্রমিক কাজ করতো, তিনি সংস্কার করে দিয়েছিলেন , নামাজ আদায় করার জন্য,৭৯ তে কাজ শেষ হলে মসজিদ ফের বন্ধ হয়ে যায়,২০১১ সালে একজন মুসলীম কে নামজ ও আজান দেওয়ার জন্য রাখেন ও ধুপ ও লাইট এর ব্যাবস্থা করে দেন কিন্তু কিছু দিন) মাস পরে লোকটি চলে যায়, ফের বন্ধ হয়ে যায় মসজিদটি,
এই মসজিদ টি ওয়াকফ বোর্ড এর অন্তর্গত এর EC নম্বর ৬৭২৪, সম্পত্তি প্রচুর বিক্রি হয়েছে ১০২ বিঘা,সরকার DVC র জন্য নিয়েছে কয়েক শ বিঘা, বাকি সম্পত্তি বেদখল হয়েছে, সব থেকে আশ্চর্য্য বিষয় গোটা গ্রাম বিলীন হয়ে গিয়েছিল, এক ঘড় ও মুসলিম/মানুষ ছিলোনা কেনো? গ্রামের নাম – পীর সাহেব এর নাম অনুযায়ী হযরত চাঁদ শা, এর নামে চাঁদশোনা গ্রাম, এবং বর্ধিষ্ণু মুসলীম প্রধান গ্রাম ছিলো
সব থেকে মর্মান্তিক ঘটনা ১৯১৪ সালে সৈয়দ মোহাম্মদ মুসা , সম্পত্তি হস্তান্তর করে দিয়ে , একা ই থাকতেন চাঁদশোনা গ্রামে, একাই আজান দিয়ে নামাজ আদায় করতেন, স্ত্রী, সন্তান রা বর্ধমানের পালসিট এলাকায় উঠে যান, তাদের কয়েক জন উত্তরাধিকারী অখনো জীবিত আছে, ওয়াকফ বোর্ড এর মধামে জানতে পারলাম কিন্তু যোগাযোগ করতে পারিনি,