ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি ঘুরে দেখে মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন ‘৭৮ সালের চেয়েও অনেক বেশি জল’

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: ‘অনেক বন্যা দেখেছি। কিন্তু এবারের বন্যা সব কিছুকে ছাপিয়ে গেল। ‘৭৮ সালের চেয়েও অনেক বেশি জল।’ ঘাটাল শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আলমগঞ্জ বানেশ্বরতলায় ডুবে যাওয়া বাড়ি থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য সরকারি নৌকায় উঠতে উঠতে কথাগুলি বলছিলেন বছর ৭৬-এর কমলা দোলই। ঘাটালের অনেকেই বলছেন এ কথা। সোমবার ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি ঘুরে দেখে সে কথা বললেন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও। তাঁর কথায়, ‘ঘাটালে অনেকবার বন্যা পরিস্থিতি দেখতে এসেছি। এবার দেখছি ৭৮-সালের চেয়েও অনেক বেশি ভয়াবহ। অনেক বেশি জল।’

    এদিন স্পিড বোটে ঘাটালে বন্যা পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রও। মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের নৌকায় ছিলেন বিধায়ক অজিত মাইতি, দীনেন রায়, মমতা ভুঁইয়া-সহ ঘাটালের প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দোলুই, ঘাটাল ব্লক তৃণমূলের সভাপতি দিলীপ মাজি। মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রের সঙ্গে ছিলেন গড়বেতার বিধায়ক তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ হাজরা। ঘাটালের ময়রামুকুর মোড় থেকে নৌকা ও স্পিড বোটে জলবন্দি এলাকা আলাদা আলাদা ভাবে ঘুরে দেখেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী।

    ঘাটাল পৌরসভা এলাকা-সহ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে শুধু জল আর জল। নৌকা দেখেই চারদিক থেকে চিৎকার, ‘এদিকে, এদিকে।’ অধিকাংশ বাড়ির একতলা জলের তলায়। কেউ দোতলা, তিন তলায়, কেউ বা পরিবার নিয়ে ডুবে থাকা মাটির বাড়ির ছাউনির উপরে। চিৎকার করে কেউ বলছেন, ‘একটু জল দিয়ে যান। শুধু একটু খাবার জল।’ আবার কেউ বলছেন, ‘একটা ত্রিপল দিন। বাড়ির ছাদে খোলা আকাশের নিজে গোরু-ছাগলের সঙ্গে বাচ্চা নিয়ে কী ভাবে থাকব?’

    মন্ত্রী, জনপ্রতিনিধি, আধিকারিকদের সামনে পেয়ে কেঁদেও ফেললেন অনেকে। অনিমা পোড়ে, অঞ্জনা পোড়ে, গণেশ পোড়েদের সব কথা শুনলেন মন্ত্রীরা। নৌকায় করে নিয়ে যাওয়া ত্রাণ সামগ্রী, পানীয় জলের প্যাকেট এবং শুকনো খাবার তুলে দিলেন দুর্গতদের হাতে।

    ঘাটালে স্পিড বোটে চক্কর দিচ্ছেন এনডিআরএফ এর জওয়ানরা। কোনও বোটে বিডিও, কোনও বোটে এসডিও, কোনও বোটে এসডিপিও। কেউ ত্রাণ শিবিরে যেতে চান শুনলেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এদিন ঘাটালের ঘাটালের ভগিরথপুর-ঘোলসাই এলাকা থেকে এক সন্তানসম্ভবাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে এনডিআরএফ। বিভিন্ন জায়গায় ত্রাণসামগ্রীও পৌঁছে দেন উদ্ধারকারীরা। মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে মানুষের অভিযোগ থাকবেই। ত্রাণের কোনও অভাব নেই। আমাদের সরকার, আধিকারিক এবং দলের লোকজন সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমি পুরো পরিস্থিতি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাব।’