|
---|
নুরউদ্দিন: দক্ষিণ ২৪ পরগনা : ইতিমধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের ২১শে জুলাই প্রস্তুতি সভা তুঙ্গে। ৩২ বছর আগে ২১শে জুলাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা কর্মসূচি ঘিরেই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল ধর্মতলা। পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মীর। সেই আঘাত এখনো দগদগে। তখন তৃণমূলের জন্ম হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী। আজকের জেনারেশনকে ২১ জুলাইয়ের গুরুত্ব বোঝেনা। সেই সময় ১৯৯৩ সাল। রাজ্যের ক্ষমতায় জ্যোতি বসু সরকার। সিপিএমের বিরুদ্ধে ছাপ্পা রিগিংয়ের মত অভিযোগ নিয়মিত শোনা যেত বিরোধীদের মুখে। সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী পক্ষের অন্যতম লড়াকু মুখ। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার জন্য সচিত্র পরিচয় পত্রের দাবিতে একুশে জুলাই মহাকরণ অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন লড়াকু মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ধর্মতলায় একুশে জুলাই সকাল ১০টা থেকে মহাকরণ অভিযানের জন্য জমায়েত শুরু হয়। কলকাতার পাঁচটি জায়গা থেকে যাত্রা শুরু হয়। এগোতে থাকেন যুব কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা। পুরো ভাগে ছিলেন মমতা নিজে। বিভিন্ন মিছিলে ছিলেন সৌগত রায়, শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মদন মিত্ররা। মহাকরণে পৌঁছানোর আগে পাঁচ দিক থেকে ব্যারিকেড করে তাদের আটকে দেয় পুলিশ। তাতেই ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়। শুরু হয় ধস্থাধস্তি। পুলিশের সঙ্গে সংঘাত বেঁধে যায় যুব কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের। পুলিশি বাঁধা ঠেকাতে শুরু হয় ইট পাথর বৃষ্টি। বিক্ষোভকারীদের হটাতে পাল্টা কাঁদানে গ্যাসের সেল ছোড়ে পুলিশ। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয় মেয়ো-রোড রোডের মোড়ে। সারা কলকাতা অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। সেই সময় পুলিশের দিকে বিক্ষোভকারীরা এগোতে থাকে। তখন পিছু হটতে শুরু করে পুলিশ। তারপর গুলি চালাতে শুরু করে পুলিশ বাহিনী। আর তাতেই প্রাণ যায় ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মীর। কার নির্দেশে পুলিশ সেদিন গুলি চালিয়েছিল সেই প্রশ্নের উত্তর অ আজও মেলেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াইয়ে শামিল হওয়া ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মী রক্ত ঝরিয়েছিল, তেরোটি তরতাজা প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল পুলিশের গুলিতে। আজও সেই একুশে জুলাই ভোলেনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভলেনি তৃণমূল কর্মীরাও। তাই একইভাবে প্রাসঙ্গিক একুশে জুলাই পালন করে আসছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেইমতো আর কয়েকদিন পরে একুশে জুলাই, ইতিমধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে একুশে জুলাই ধর্মতলা চলো প্রস্তুতি সভা শুরু হয়েছে। একইভাবে শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার ক্যানিংয়ে বর্ধিত শোভা করা হয়। এই সভাতে উপস্থিত ছিলেন মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ বাপি হালদার, জয়নগর লোকসভার সাংসদ প্রতিমা মন্ডল, সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার সভাপতি জয়দেব হালদার। সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা, এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রত্যেকটি বিধানসভার বিধায়ক এবং যুব তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা।