|
---|
নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক: গত কয়েক দিন ধরেই সংবাদের শিরোনামে পরিমণি। মাদক যোগ ও মধুচক্র চালানোর অভিযোগ উঠেছে অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে। যার জেরে মাদক আইনের আওতায় গত বুধবার পরিমণিকে গ্রেফতার করেছে ব়্যাব। এরপর জলও গড়িয়েছে অনেকটা। অভিনেত্রীর সঙ্গে ‘একান্তে সময় কাটানোর’ অভিযোগে অপসারিত করা হয়েছে এক তদন্তকারী পুলিশ অফিসারকে। সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটা সিসিটিভি ফুটেজেই বিপাকে পড়েন ঢাকার গুলশন বিভাগের এক এডিসি মহম্মদ গোলাম শাকলায়েন। এবার সেই প্রেক্ষিতেই বিস্ফোরক মন্তব্য তসলিমা নাসরিনের। বলছেন, “বাংলাদেশে তো প্রেম করাও অপরাধ।” শুধু তাই নয়, বাংলাদেশকে ‘তালিবানি রাজত্বের’ সঙ্গেও তুলনা করেছেন লেখিকা।
প্রেম, যৌনতা, নারী স্বাধীনতা নিয়ে তসলিমা বরাবার পুরুষতান্ত্রিক সমাজের চোখে চোখ রেখে কথা বলেছেন। পরিমণি-কাণ্ডেও তার অন্যথা হয়নি। অতঃপর সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখিকার সাফ মন্তব্য, “পুলিশের এক কর্মকর্তা এক সুন্দরী নায়িকার প্রেমে পড়েছেন বলে অফিসিয়ালি শাস্তি পাচ্ছেন। প্রেমের চেয়ে ভয়াবহ অপরাধ এখন আর কিছু নেই বাংলাদেশে। যৌনতার মতো নিকৃষ্ট জিনিসও আর কিছু নেই। তালিবানি রাজত্বের জন্য দেশটা অনেকদিন থেকেই একটু একটু করে তৈরি হয়েছে। এখন শুধু বাকি আছে, সব মেয়েদের গায়ে বাধ্যতামূলক বোরখা চড়ানো। আর প্রেম, ভালোবাসার কোনও গন্ধ পেলে মেয়েটিকে মাটিতে অর্ধেক পুঁতে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলা।” এক্ষেত্রে অভিনেত্রী যে বাংলাদেশের মানুষের ধ্যান-ধারণাকেই বিঁধেছেন, তা বোধহয় আর আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
এখানেই থামেননি তসলিমা। তুলোধনা করেছেন হাসিনার দেশের গণমাধ্যমগুলিকেও। লেখিকার অভিযোগ, বাংলাদেশের মিডিয়া অভিনেত্রী পরিমণিকে খাটো করে দেখাচ্ছে। যারজন্যে সেই দেশের জনগণেরও পরিমণির বিরুদ্ধে জনমত গড়ে উঠছে। কিন্তু অভিনেত্রীর অপরাধটা কোথায়? কীসের শাস্তি পাচ্ছেন পরিমণি? প্রমাণ ছাড়াই কেন একজন মেয়েকে অপরাধী হিসেবে ঘোষণা করা হচ্ছে? এহেন নানা প্রশ্ন তসলিমা দিন কয়েক ধরেই ছুঁড়ে আসছেন।
আরেকটি ফেসবুক পোস্টে লেখিকার মতামত, “বাংলাদেশ চালায় মিডিয়া। মিডিয়া যদি বলে এই মেয়েটা খারাপ, তাহলে লক্ষ কোটি বুদ্ধিহীন দু’পেয়ে জীবের কাছে সে খারাপ। মিডিয়া যদি বলে ওই পুরুষটা ভাল, তাহলে লক্ষ কোটি নির্বোধ মানুষের কাছে সে ভাল। ব্রেনলেসদের যুক্তি বুদ্ধি থাকে না, বিচার বিবেচনা থাকে না। এরা হল ভেড়ার মতো। প্রথম ভেড়াটি হল মিডিয়া, প্রথম ভেড়াটি যেদিকে যায়, পেছনের ভেড়াগুলো সেদিকে যায়।”
বাংলাদেশের মিডিয়া এবং জনসাধারণকে ভেড়া বুদ্ধিহীন আখ্যা দিয়ে তসলিমা নাসরিন আরও জানান যে, “ভেড়ারা এভাবেই ধর্ম মানে। প্রথম ভেড়া বলল, আল্লাহ আছে, পেছনের লক্ষ কোটি ভেড়া অনুকরণ করে বলে- আল্লাহ আছে। ভেড়ার পাল থেকে কেউ জিজ্ঞেস করে না, আল্লাহ আছে তার প্রমাণ দেখাও। ব্রেনলেসদের গাইড করা খুব সহজ, কারণ ব্রেনলেসরা কোনও কিছুর প্রমাণ চায় না। কোনও কিছুর গভীরে গিয়ে কোনও কিছু বোঝার ক্ষমতা এদের নেই।” যদিও পরিমণি-কাণ্ডে তসলিমা নাসরিনের এমন মন্তব্যে নেটিজেনদের একাংশ সমর্থন জানালেও বেজায় চটেছেন বাংলাদেশি নেটজনতার সিংহভাগ। তাঁরা উল্টে লেখিকাকেই ভর্ৎসনা করেছেন এমন মন্তব্যের জন্য।