প্রয়াত পিতার ইচ্ছেতে পিতার সংগহে থাকা ২০৪ টি বই জেলা গ্রন্থাগারে দান করলেন শিক্ষিকা সুজাতা বসু

নিজস্ব সংবাদদাতা মেদিনীপুর : প্রয়াত পিতার ইচ্ছেতে, পিতার সংগ্রহে থাকা ২০৪ টি বই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা গ্রন্থাগারে দান করলেন মেদিনীপুরের আবাস এলাকার বাসিন্দা মেদিনীপুর শহরের মিশন গার্লস স্কুলে শিক্ষিকা সুজাতা বসু। বইগুলোর মধ্যে রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সৈয়দ মুজতবা আলী ,তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়দের বিখ্যাত ব্যক্তিত্বেরদের রচনাবলী যেমন রয়েছে তেমনি বাংলা সাহিত্যের গবেষণামূলক কিছু বই, গল্পের বই, বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় বইও রয়েছে। কিছুদিন বইদানের এই ইচ্ছের কথা সুজাতা দেবী তাঁর প্রাক্তন ছাত্রী মনীষিতা বসুকে জানান।মণীষিতা যোগাযোগ করেন মেদিনীপুর কুইজ কেন্দ্রের সম্পাদক সুভাষ জানার সাথে। সুভাষবাবু জেলা গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সম্প্রতি এই বই গুলো জেলা গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

    কর্মসূচিতে বোনকে সুকন্যা নায়েককে সাথে উপস্থিত ছিলেন সুজাতা বসু, ছিলেন সমাজকর্মী সুভাষ জানা, মৃত্যুঞ্জয় সামন্ত প্রমুখ। গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষের পক্ষে বইগুলো গ্রহণ করেন জেলা গ্রন্থাগারিক তনুশ্রী গুইন।উল্লেখ্য সুজাতা দেবীর বাবা ছিলেন মেদিনীপুরের ওল্ড এল আই সি মোড়ের জনপ্রিয় “ছাপালেখা” প্রেসের কর্ণধার মুসা বাবু। দানশীল মুসাবাবু সবার খুব প্রিয় ছিলেন। বিভিন্ন ভাবে তিনি তাঁর সামর্থ্য মতো সমস্যায় থাকা মানুষদের সাহায্য করতেন। সুজাতা দেবী বলেন,বাবা বলতেন “যে বইগুলো বা অন্য কোনো জিনিস তোমার আর কাজে লাগছে না,সেটা অন্য কাউকে দিয়ে দিও,সেটা তাদের কাজে আসতে পারে। পাশাপাশি বলতেন দানের বিনিময়ে প্রতিদানের আশা করো না বরং গ্রহীতাকে বলো সম্ভব হলে সেও যেন পরবর্তী সময়ে আরও দশজনকে সাহায্য করে।” সুজাতা দেবী বলেন, বাবার এই কথাকে মান্যতা দিতেই তাঁর এই উদ্যোগ। পাশাপাশি সুজাতা দেবী এই প্রসঙ্গে সবার উদ্দেশ্যে একটা বার্তা দেন, তিনি বলেন, “এমন অনেকেই আছেন যাদের বাড়িতে আলমারিতে অনেক বই সাজানো হিসেবেই রয়েছে, পড়া হয়ে গিয়েছে অথবা পড়ার সময় নেই বা এই মুহূর্তে বইগুলোর বিশেষ প্রয়োজনীয়তা নেই। যে বইগুলো তাদের প্রয়োজনে লাগছে না,সেই বইগুলোই হয়তো অন্য কারোর কাছে খুবই প্রয়োজনীয় ,খুবই দরকারি।তাঁরা যেন বইগুলো যেভাবেই হোক পাঠকের কাছে পৌঁছে দেন ।সেটা মানবিক দেওয়ালের মাধ্যমে হতে পারে অথবা শহরের লাইব্রেরী অথবা গ্রামীণ পাঠাগারের মাধ্যমে হতে পারে যে ভাবেই হোক বইগুলো যেন অন্যদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। বই- ই-একমাত্র বন্ধু যে সবসময়ই দেয় ,নেয় না কিছুই। তাই বইকে বন্ধু বানানো হোক ।আজকালকার যুগে বইয়ের ব্যবহার একেবারেই সীমিত হয়ে গেছে। শুধু মোবাইলের ব্যবহার বেড়েছে ।তাই সবাইকে বলবো বইকে বন্ধু হিসেবে বেছে নাও। নিজেরাও বই পড়ো আর অন্য কে পড়ার সুযোগ করে দাও”।