|
---|
শেখ আতিউল্লা , চন্ডীপুর , পূর্ব মেদিনীপুর : স্কুলে চলছিল শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠান শেষ হতেই প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে বচসায় জড়াল পড়ুয়ারা। পরে ওই শিক্ষককে অফিস ঘরে আটকে রেখে হল বিক্ষোভ। স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, পড়ুয়ারা প্রধান শিক্ষকের অফিসে ভাঙচুরও চালায়। শিক্ষক দিবসে এমনই তিক্ত অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকলেন নন্দকুমার থানার মল্লিকচক অমর স্মৃতি বিদ্যাপীঠের শিক্ষকেরা।নন্দকুমার ব্লকে প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত মল্লিকচক অমর স্মৃতি বিদ্যাপীঠ গত বছর ৫০-এ পা দিয়েছে। গত বছর স্কুলের সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়েছিল। এরপর এ বছর ফেব্রুয়ারিতে বর্ষব্যাপী সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের সমাপ্তি অনুষ্ঠান করার কথা জানানো হয়েছিল স্কুলের তরফে। পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ, ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠান হওয়ার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষে তাদের কাছ থেকে চাঁদা নিয়েছিলেন। কিন্তু সেপ্টেম্বর মাস চলে এলেও ওই অনুষ্ঠান হয়নি।বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে স্কুলে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান চলছিল। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে একদল ছাত্র প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চায় সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবের সমাপ্তি অনুষ্ঠান এখনও হল না কেন। এ দিনই ওই অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ ঘোষণা করতে হবে বলে পড়ুয়ারা দাবি করে বলে স্কুল সূত্রের খবর। প্রধান শিক্ষক এ ব্যাপারে জানাতে না পারায় ছাত্রদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়ায়। অনুষ্ঠান শেষে তারা প্রধান শিক্ষকের অফিসে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। স্কুলের দরজাও বন্ধ করে দেয়। ছাত্রদের একাংশ জানাচ্ছে, সমাপ্তি অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ ছাড়াও আরও একটি বিষয়ে তারা ক্ষোভ দেখিয়েছে। তারা জানায়, শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান শুরুর আগে অফিসে শিক্ষকদের সঙ্গে বচসায় জড়ান প্রধান শিক্ষক। সে সময় প্রধান শিক্ষক এক সহ-শিক্ষককে অপমানজনক কথা বলেন বলে অভিযোগ। এ নিয়েও তাদের সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের তপ্ত বাদানুবাদ হয়। বিক্ষোভের সময় পড়ুয়াদের একাংশ প্রধান শিক্ষকের ঘরে ঢুকে টেবিলের কাঁচ ভেঙে দেয় এবং তাঁকে ধাক্কাধাক্কি করে বলে অভিযোগ।বিক্ষোভকারী এক স্কুল পড়ুয়া বলে, ‘‘সমাপ্তি অনুষ্ঠান নিয়ে প্রধান শিক্ষক টালবাহনা করে তা বাতিল করতে চাইছেন। আর এ দিন একজন শিক্ষককে তিনি অপমানজনক কথা বলেছিলেন। তার প্রতিবাদে প্রধান শিক্ষককে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে।’’ ভাঙচুর বা নিগ্রহের অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছে পড়ুয়ারা।এ দিকে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাচ্ছে দেখে খবর দেওয়া হয় নন্দকুমার থানায়। প্রায় ঘণ্টা দুয়েক ধরে আটকে থাকার পরে সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ পুলিশ বিক্ষোভের মাঝ থেকে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে। অন্য শিক্ষককে অপমানজনক কথা বলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক তারাপদ শীট। তিনি বলেন, ‘‘গত বছর স্কুলের সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবের শুরু হয়। এ বছর সমাপ্তি অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক এবং লোকসভা নির্বাচন থাকায় অনুষ্ঠান করা যায়নি।’’ প্রধান শিক্ষকের কথায়, ‘‘দুর্গাপুজোর আগে অনুষ্ঠান করার চেষ্টা হচ্ছিল। কিন্তু এ দিন শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে একাংশ ছাত্র আজকেই দিন ঘোষণা করার দাবি জানায়। আমি তা জানাতে না পারায় ওরা এমন আচরণ করেছে।’’শিক্ষাদীক্ষায় অগ্রণী পূর্ব মেদিনীপুরে শিক্ষক দিবসে এমন ঘটনায় আপাতত বিস্মিত জেলার শিক্ষক মহল। এ ব্যাপারে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) আমিনুল আহসান বলেন, ‘‘বিষয়টি এআইকে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।’’