|
---|
নিশির কুমার হাজরা, বীরভূম : বীরভূম জেলার খয়রাশোল ব্লকের বাস্তবপুর গ্রাম আদিবাসী অধ্যুষিত হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা এক প্রকার অবজ্ঞার চোখে দেখেন এলাকার মানুষদের বলে এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ। ওই আদিবাসী গ্রামের উন্নয়ন কতটা হয়েছে তা গ্রামের মধ্যে ঢুকলেই চোখে পড়ে।
কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার যেভাবে সর্বশিক্ষা মিশনের আর্থিক আনুকূল্যে জেলার শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়েছেন, তাতে বিশেষ করে শিশুদের পড়াশুনো স্কুলের পঠন পাঠন প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয় আইসিডিএস প্রকল্প থেকে শুরু করে সবকিছু উন্নত মানের হওয়া বাঞ্ছনীয়! কিন্তু সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় তার উল্টো ছবি আজ দেখা গেল!
ওই গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা তথা স্কুল পড়ুয়াদের অভিভাবকগন সরাসরি বিক্ষোভের সঙ্গে প্রকাশ করেন যে তারা অত্যন্ত গরীব খেতে খাওয়া মেহনতী মানুষ। তাদের বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানোর যথার্থ ক্ষমতা না থাকায় তারা সরকারি স্কুলের সহযোগিতায় বাচ্চাদের শিক্ষা ও উন্নত মেধার আশা করেন। তথাপি ওই গ্রামের একটিমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেই প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক দীর্ঘ একমাস যাবত অনুপস্থিত থাকায় পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে নিয়মিত যায় এবং ঘুরে আসে বাড়ির মধ্যে এসে জানায় আজ ও স্কুলে মাস্টার মশাই আসেননি। স্থানীয় মানুষের অভিযোগের ভিত্তিতে স্কুলের অ্যাটেনডেন্স রেজিস্টার তদন্ত করে দেখা গেল গত জুলাই মাসের ৭ তারিখ থেকে আগস্টের আজ ২৯ তারিখ পর্যন্ত ওই শিক্ষক মহাশয় স্কুলে অনুপস্থিত থেকেছেন। ফলে স্কুলের বাচ্চারা পড়াশুনার বদলে স্কুলের বাউন্ডারির ভেতরে খেলাধুলায় মত্ত থেকে সময় কাটিয়ে রোজ রোজ বাড়ি ফেরা ছাড়া আর কিছুই করার থাকেনা।
এব্যাপারে খয়রাশোল এর ব্লকের এসআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে উনি বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চান। সংবাদমাধ্যমকে জানান ওই স্কুলে একজন শিক্ষক মহাশয় দীর্ঘদিন থেকে অনুপস্থিত রয়েছেন কি কারনে সেটা আমাদের নজরে আসেনি। আমরা বিষয়টা খোঁজখবর নিয়ে দেখছি। খয়রাশোল ব্লকের ভিডিও সংবাদমাধ্যমকে জানান অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত চলছে। বীরভূম জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধুরী জানান এ ধরনের কোনো খবর আমার কাছে নেই। তবে অভিযোগ পেলে ওই স্কুলে সেটা অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে। বীরভূম জেলা শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ জানিয়েছেন কোন কারণে ওই শিক্ষক অনুপস্থিত থেকেছেন কিন্তু তার শারীরিক কোনো অসুবিধার কথা বা কোন ছুটির আবেদন পত্র রয়েছে কিনা সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি। সেরকম হলে শীঘ্র ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে ওই এলাকার ছাত্র-ছাত্রীর অভিভাবকগণকে প্রশ্ন করলে উনারা জানান ওই শিক্ষকের ব্যাপারে আমরা পঞ্চায়েত প্রধান ব্লকের ভিডিও এবং এসআইকে পর্যন্ত লিখিত আবেদন জানিয়েছি। তথাপি ওই স্কুলের শিক্ষক মহাশয় দীর্ঘদিন ধরে গরহাজির থেকেছেন। এখনো পর্যন্ত ওনাকে স্কুলে কোনদিন ছাত্রছাত্রীরা পায় না। ফলে ওই স্কুলের পঠন পাঠন শিকেয় উঠেছে বলে গ্রামবাসী ও ওই স্কুলের পড়ুয়াদের অভিযোগ। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও একজন প্যারাটিচার দিদিমনি পড়ুয়াদের শিক্ষা দানের হিমশিম খাচ্ছেন ওই শিক্ষকের অনুপস্থিতির কারনে।
সংবাদ মাধ্যম ওই শিক্ষক অলক মালের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে ফোনে উনাকে পাওয়া যাইনি বলে সূত্রের খবর।