|
---|
নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক: বিহারে কঠিন লড়াই দিয়েও শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যপূরণ হল না তেজস্বী যাদবের। গভীর রাত পর্যন্ত গণনা শেষে এনডিএ ১২৫ আসনে জিতল। মহাজোট জিতল ১১০ আসনে। আসাদুদ্দিন ওয়েইসির AIMIM জিতল ৫ আসনে, এলজেপি এবং বিএসপি জিতল একটি করে আসনে। অথচ যাবতীয় বুথ ফেরত সমীক্ষা ইঙ্গিত করছিল বিহারে তেজস্বী যাদবের (Tejashwi Yadav) নেতৃত্বাধীন মহাজোট বড় ব্যবধানে জিততে চলেছে। কিন্তু কেন তা সম্ভব হল না? বিশ্লেষকরা সকলে একবাক্যে আঙুল তুলছেন জোটসঙ্গী কংগ্রেসের দিকে। এমনিতেই বিহারে তাদের প্রভাব অস্তমিত। তার উপর প্রথম থেকেই ভোটে তেমন গা লাগায়নি তারা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) যখন দফায় দফায় রাজ্যে প্রচারে এসেছেন, তখন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের টিকি দেখা যায়নি। প্রচারের ফাঁকেই শিমলায় ছুটি কাটাতে চলে গিয়েছেন রাহুল গান্ধী। রাজ্যে একবারের জন্যও আসেননি সোনিয়া বা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী (Priyanka Gandhi)। মহাগঠবন্ধনের সবচেয়ে দুর্বল অংশ হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে কংগ্রেস (Congress)। অনেকেই বলছেন, যোগ্যতার চেয়ে বেশি আসনে লড়ে আসলে কংগ্রেসই তেজস্বীর স্বপ্নকে ডুবিয়ে দিল।
এবারের ভোটে তেজস্বীর রাষ্ট্রীয় জনতা দল লড়েছে ১৪৪টি আসনে। কংগ্রেস ৭০টিতে। বামেদের মিলিত আসন ২৯টি। কংগ্রেস ছাড়া প্রত্যেকটি দলের স্ট্রাইক রেট বা সাফল্যের হার ভাল। সেখানে আসন সংখ্যায় বহু পিছনে চার নম্বরে নেমে এসেছে কংগ্রেস। এতগুলি আসনে লড়াই করেও মাত্র ১৯টি আসন জিতেছে তাঁরা। সেখানে বামেরা মাত্র ২৯ আসনে লড়াই করে জিতেছে ১৮ আসনে। শরদ যাদবের মেয়ে সুহাসিনী শরদ যাদব বা শত্রুঘ্ন সিনহার ছেলে লবের মতো মুখও নিজেদের আসনে পরাজিত। গত লোকসভা নির্বাচনেও আরজেডি(RJD)-কংগ্রেস জোটের ভরাডুবি হয়েছিল। তার পরও আসন রফার ক্ষেত্রে তেজস্বী কংগ্রেসকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে ভুল করেছেন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি, বিহারে চিরদিনই ভোট হয় জাতপাতের সমীকরণে। কংগ্রেসকে আসন ছাড়ার খাতিরে সেই জাতপাতের সমীকরণকেও উপেক্ষা করেছেন লালুপুত্র।
কংগ্রেস বেশি আসন পাওয়ায় মুকেশ সাহানির ভিআইপি পার্টি, জিতন রাম মাঝির হাম এবং উপেন্দ্র কুশওয়াহকে উপযুক্ত সংখ্যক আসন ছাড়তে পারেনি আরজেডি। আর সেকারণেই মহাজোট ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন মাঝি এবং সাহানি। কুশওয়াহা নাম লিখিয়েছেন চতুর্থ ফ্রন্টে। এই তিনটি দল মহাজোটে থাকলে বিহারের সামাজিক সমীকরণ যে অন্যরকম হত তা বলা বাহুল্য। কুশওয়াহা কুরমি ভোট, সাহানি নিষাদ ভোট এবং মাঝি মল্লা, মহাদলিত ভোটের একটা অংশ আরজেডি শিবিরে টেনে আনতে পারতেন। যা জাতপাতের সমীকরণেও অ্যাডভান্টেজ দিত তেজস্বীকে। কিন্তু কংগ্রেসকে আসন ছাড়তে গিয়ে এসবই পণ্ড হয়েছে। কংগ্রেসও আসন ছাড়ার ক্ষেত্রে একেবারেই অনমনীয় ছিল। অথচ, তাঁদের কোর ভোটব্যাংক বলে কিছুই নেই বিহারে। বিহারেই ৭ শতাংশ (এবারে জোটের খাতিরে তারা পেয়েছে ১০ শতাংশ ভোট) ভোটের দল কংগ্রেস। স্বাভাবিকভাবে জাতপাত ভুলে কংগ্রেসের সঙ্গে যাওয়ার সিদ্ধান্তই ডোবাল তেজস্বীকে।