হাসপাতালে হাসপাতালে বন্ধ পরিষেবা বিক্ষোভের মুখে প্রশাসন

জাকির হোসেন সেখ, ১২জুন, নতুন গতি, কলকাতা: এনআর‌এস কাণ্ডের জেরে সকাল থেকে রাজ্যের সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের আউটডোর বন্ধ থাকায় তীব্র ভোগান্তির শিকার রোগী ও রোগীর আত্মীয়রা। জুনিয়রদের সঙ্গে সিনিয়র ডাক্তাররাও এই প্রতিবাদে অংশ নেওয়ায় চিকিৎসা ব্যবস্থাই ভেঙে পড়ার মুখে। প্রতিবাদীরা প্রথমে এমার্জেন্সি চালু রাখার কথা বললেও শহর ও রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে সেই পরিষেবাও বন্ধ আছে বলে উত্তেজনা ব্যাপক আকার নিয়েছে। কলকাতায় বিভিন্ন হাসপাতালের সামনে রাস্তার ওপর শুয়েপড়েও পথ অবরোধ করতে দেখা গেছে রোগীর আত্মীয়দের।

    এই আন্দোলনের জেরে আজ বুধবার দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের বেশিরভাগ সরকারি হাসপাতালের ইন্ডোর এবং জরুরি বিভাগও কাজ করেনি বলে রোগী ও তাঁদের আত্মীয়রা অভিযোগ করেছেন। ভর্তি থাকা রোগীদের অবস্থার অবনতি হলে রোগীর আত্মীয়দের মরিয়া হয়ে ডাক্তারের খোঁজে ছোটাছুটি করতে দেখা গিয়েছে। মরণাপন্ন রোগীদের অ্যাম্বুলেন্সে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে বলেই অভিযোগ। কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে পরিষেবা না পেয়ে পুলিশকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখিয়েছেন রোগীর আত্মীয়রা।
    এমনকি রাজ্যের কোনো কোনো হাসপাতালে জরুরি বিভাগের বাইরে তালা ঝুলিয়ে জুনিয়ার ডাক্তার ও ইনটার্নরা বিক্ষোভে বসেছেন বলে অভিযোগ। কোথাও আবার রোগী ও তাঁদের আত্মীয়দের জরুরী বিভাগের ধারেকাছে পর্যন্ত ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে কয়েকটি জায়গায় বিক্ষোভরত ডাক্তারদের সঙ্গে রোগীর আত্মীয়দের তীব্র বচসা হয়। যদিও বিক্ষোভরত ডাক্তারদের জয়েন্ট ফোরামের পক্ষে সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করে উল্টে রোগীর আত্মীয়দের বিরুদ্ধেই সঙ্ঘবদ্ধ আন্দোলনকে কলঙ্কিত করার পরিকল্পিত চক্রান্ত বলে পাল্টা অভিযোগ আনা হয়েছে।

    উল্লেখ্য যে,গত সোমবার কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবায় গাফিলতির অভিযোগ নিয়ে অশান্তির জেরে জুনিয়র ডাক্তারদের মারধর করেন রোগীদের আত্মীয়রা। তাতে গুরুতর আহত হন দুই জুনিয়র ডাক্তার। এরই প্রতিবাদে এই আন্দোলন কর্মসূচির ডাক দিয়েছে ডাক্তারদের সাতটি মিলিত সংগঠন।

    বিক্ষোভরত ডাক্তারদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি-দাওয়া বিবেচনা করার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। তা সত্ত্বেও নিজেদের দাবিতে অনড় রয়েছেন ডাক্তাররা।
    চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে রোগী ও রোগীর আত্মীয়দের।
    এরপর প্রশাসন কি ব্যবস্থা নেয় সেদিকে তাকিয়ে আছেন গোটা রাজ্যবাসী।