বাবা মা হীন অনাথ তিন কন্যার দিন গুজরান হচ্ছে কষ্টে, খবর পেয়ে পাশে তৃণমূল নেতা

সফিকুল আলম, নতুন গতি, মালদা: পেটের টানে দিল্লিতে কাজ করতে গিয়েছিলেন মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার কনুয়ার রহমতপুর গ্রামের নিবাসী তিন কন্যার বাবা আবদুল রহমান। দিল্লিতে গাড়ি চালানোর কাজ করতেন তিনি। কিন্তু দূর্ভাগ্য পিছু ছাড়েনি। দু’বছর আগে পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তিনি। তিন মেয়ে কে নিয়ে অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনও রকমে খাবার জোগাড় করত মা আকতারি বিবি। কিন্তু বিধি বাম। কয়েক মাস আগে অসুস্থতার কারণে প্রাণ হারান তিনিও। বর্তমানে মাথার উপর ছায়া বলতে কেউ নেই এই অসহায় সম্বলহীন তিন মেয়ের। খবর পেয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন তৃণমূল-কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান। পরিবারের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারের কাছে কাতর আবেদন জানানো হয়েছে যাতে সরকার এই পরিবারের পাশে দাঁড়ায়। কারণ করোনা পরিস্থিতিতে অনাথ এই তিন মেয়ের দিন গুজরান করায় কষ্টকর হয়ে গেছে।

    বাবা আবদুল রহমান দিল্লিতে ড্রাইভারের কাজ করতেন। নিজে বাড়িও করেছিলেন। বছর দুই আগে অ্যাক্সিডেন্টে প্রাণ হারান আবদুল। তারপর থেকেই পরিবারের ভিত নড়ে ওঠে। তারপরও মা আকতারি বিবি কোনোভাবে অন্যের বাড়িতে কাজ করে দিন গুজরান করত। কিন্তু দু মাস আগে অসুস্থ শরীর নিয়ে তিনিও গত হন। কার্যত তারপর থেকেই অভিভাবকহীন অনাথ হয়ে একবেলা খেয়ে দিন কাটাচ্ছে এই তিন নাবালিকা। বড়ো মেয়ে রেজিনা পারভিন (১৬) বর্তমানে দশম শ্রেণীর ছাত্রী। মেজ মেয়ে নাজিমা খাতুন (১১) পঞ্চম শ্রেণীতে পাঠরত। ছোটো মেয়ে আকসা খাতুন (২) এখনও বড্ডো ছোটো।

    বড়ো মেয়ে রেজিনা পারভিন বলে, “আমরা তিনবোন আছি‌। আমাদের আর কেউ নেই। বাবা মা ছাড়া আর কোনোদিন কেউ ছিলো না। বাবা কয়েক বছর আগে মারা গেছেন, মা কয়েক মাস আগে মারা গেছেন। গ্রামের মানুষজন যা খাবার দেয় তাই খেয়ে বেঁচে আছি। বর্তমানে মা ছাড়া আর কেউ ছিল না। এখন আর কেউ নেই। খাবারটাই জোটেনা, পড়াশোনা কীভাবে করব? ছোটো বোনটা এখনও কলম ধরতে শেখেনি। শেখাবোই বা কিভাবে? তাই সরকারের কাছে আমাদের আবেদন আমাদের তিন বোনের জন্য কিছু সহায়তা করা হোক।

    তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান বলেন, “এখানে তিনটে ছোটো ছোটো বাচ্চা আছে। তাদের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। তাদের বাবা মা নেই। আমি যতটুকু পারলাম সাহায্য করে গেলাম। যারা এতদিন সাহায্য করেছিলেন তাদের কাছে আবেদন যেন আরো কিছুদিন এদের খেয়াল রাখে। বিডিও সাহেবের কাছে যাবো। দেখছি আর কী কী সাহায্য করা যায়।”

    প্রতিবেশী আবদুল জানান, “বাবা দু’বছর আগে দিল্লিতে অ্যাক্সিডেন্ট করে মারা গেছিল। মা কিছুদিন আগে মারা গেল। অত্যন্ত গরীব মানুষ। তিনটেই মেয়ে, আত্মীয় স্বজন বলতেও কেউ নেই। খাওয়া দাওয়ার কিছু সহায়তা গ্রামের লোকেরা করছে কিন্তু পরবর্তী সময়টা কে দেখবে? তাই আমরা সরকারের কাছে আবেদন করেছি।”

    বুলবুল খানের এলাকায় পরিচিতি একজন জননেতা হিসেবেই। সব সময় দেখা গেছে দলমত নির্বিশেষে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে। এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।তবে সাথে রাজ্য সরকারের উচিত অসহায় এই পরিবারের পাশে দাঁড়ানো যাতে স্থায়ী ভাবে তাঁদের সমস্যার সমাধান হয়।