|
---|
বাবলু হাসান লস্কর, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা :
দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা নাইলনের জাল সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগারকে নিজ এলাকায় রাখতে যথেষ্ট। রাজ্য সরকার বারে বারে দরবার করছেন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সুন্দরবনের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা নিক তারা। সুন্দরবনের বাঘ প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে ঠিকমতো থাকতে পারে তার জন্য কেন্দ্রের উদ্যোগী হওয়া উচিত, রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের এমনি মন্তব্য। বিশেষ করে খাদ্যের অভাবে বাংলাদেশের সুন্দরবন থেকে আসা রয়েল বেঙ্গল টাইগার পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবনে আসায়, খাদ্য এবং খাদকের সামাঞ্জস্যের ঘাটতি। ঠিকমতো খাদ্য না পেয়ে লোকালয়ে আসার প্রবণতা বাড়ছে। বিশেষ করে দিনের পর দিন জঙ্গল লাগোয়া এলাকাগুলি বসতি স্থাপনের জন্য এমনি সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে, এমনি ধারণা বিশেষজ্ঞদের। সুন্দরবনে ৬২ কিলোমিটার লোহার ফ্রেম দেওয়া অ্যালুমনিয়ামের ফেন্সিং নেটের ব্যবস্থা করলেও অচিরেই সুন্দরবন লাগোয়া দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী একশো দিনের কর্মীরা কর্মসংস্থান হারাবে। প্রতিনিয়ত জালের তদারকি ও ম্যানগ্রোভ তৈরি সহ দিনের-পর-দিন ফেন্সিং নেটের তদারকি সহ ম্যানগ্রোভ অরণ্য স্থাপনে এলাকার দরিদ্র জনসাধারণের একশো দিনের কাজের মাধ্যম দিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে অপরিসীম উদ্যোগ। কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ কর্পোরেট কোম্পানির হাতে সুন্দরবনের দায়িত্ব তুলে দিলে অচিরেই ধ্বংস হতে চলবে সুন্দরবন। বিশেষ করে অ্যালুমনিয়ামের ফেন্সিং নেট কিংবা কংক্রিটের ঢালাই এর উপরে অক্সিজেনের ঝালাইয়ের ঝলকানিতে সুন্দরবনের পশু পাখিদের পরিবেশগতভাবে ক্ষতির দিক উঠে আসবে। তার উপর এই মুহূর্তে প্যানডেমিক সিচুয়েশনে দিনের-পর-দিন কর্মসংস্থানের সংকুলান,তার পরে ও মাল্টিমিডিয়া কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া সুন্দরবনের সৌন্দর্যায়ন অচিরেই ধ্বংসপ্রাপ্ত হতেই চলবে এমন মত পোষণ করছেন এলাকাবাসী । দিনের পর দিন যারা সুন্দরবনকে বাঁচিয়ে রেখেছে সেই গাঙ্গেয় সুন্দরবন এলাকার নদী মাতৃক সুন্দরবনের বাসিন্দাদের জীবন-জীবিকা টান পড়বে। জন্মসূত্রে যারা নদীর উপরে নির্ভরশীল তাদের কর্মসংস্থান হারাতে বসবে এবং তাদের পরিবার-পরিজনকে নিয়ে এই মুহূর্তে অন্যত্র যাওয়ার রাস্তা মিলবে না। বর্তমানে বন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ভাবছেন অ্যালুমিনিয়ামের নেট দিয়ে কিলোমিটারের পর কিলোমিটার সুন্দরবন ঘিরলে বাঘ লোকালয়ে আসার প্রবণতা কমবে। সুরক্ষিত থাকলেও পরমুহূর্তে সমস্ত নষ্ট হয়ে যাবে কারণ গাঙ্গেয় সুন্দরবন এলাকার আবহাওয়া অচিরেই তা ধ্বংস প্রাপ্ত হবে বিশেষ করে নোনা জল- লবণাক্ত আবহাওয়া খুব তাড়াতাড়ি স্টেনলেস স্টিল কিম্বা অ্যালুমিনিয়াম তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। সে ক্ষেত্রে নাইলনের ফেন্সিং নেট অনেক মজবুত এবং শক্তিশালী দীর্ঘস্থায়ী নাইলনের ফিশিং নেট। লোহার ফ্রেম দেওয়া অ্যালমনিয়ামের ৬২ হাজার কিলোমিটার জাল তৈরিতে দেড়শো কোটি টাকা খরচ। একসাথে বিশাল অঙ্কের খরচ হতেই পারে আর তার থেকেই প্রতিনিয়ত সামান্য খরচে সুন্দরবনের সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান। দিনের-পর-দিন চলতেই থাকে কর্মদিবস সৃষ্টি হয় আর সেক্ষেত্রে অ্যালুমিনিয়ামের হলেই কাজ হারাবে সুন্দরবন লাগোয়া জনবসতি পূর্ণ পরিবারের মানুষরা। অপরদিকে কোটি কোটি টাকার ব্যবসায়ীরা মুনাফা লুটতে থাকবে এই কাজের মাধ্যম দিয়ে।