|
---|
নিজস্ব প্রতিবেদক:- মেলা মানেই মিলনক্ষেত্র। তবে এই মিলন ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় প্রাপ্তবয়স্করা নিজেদের পসরা নিয়ে দোকান করেন আর সেখানে মেলায় আসা মানুষজনেরা কেনাকাটা করেন। কিন্তু বীরভূমে এমন এক মেলার আয়োজন করা হয় যেখানে খুদেরাই হলেন বিক্রেতা এবং খুদেদের নিয়েই এই মেলার আয়োজন। এমন অভিনব মেলার আয়োজন হয়ে থাকে প্রতিবছর বোলপুরে। বোলপুরের এই মেলায় খুদেরা বাড়ি থেকে নানান ধরনের খাবার তৈরি করে নিয়ে এসে বিক্রি করে।এই মেলার শুরুটা হয়েছিল আজ থেকে ৩৯ বছর আগে। শান্তিনিকেতন ঘেষা সুভাষপল্লী মাঠে এই মেলার আয়োজন হয়। আবার কত বছর পর্যন্ত এই মেলার যে চেহারা ছিল সেই চেহারার আমূল পরিবর্তন হয়েছে এই বছর। কারণ যে জায়গায় এই মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে সেই জায়গা আগে ছিল পঞ্চায়েত এলাকাভুক্ত। সাধারণ মানুষের অন্যতম আকর্ষণের এই মেলায় অংশগ্রহণকারীদের বাড়ি থেকে আলো নিয়ে আসতে হতো। অনেক সময় লণ্ঠনের আলো জ্বেলেও হয়েছে এই মেলা। কিন্তু এই বছর এই এলাকা বোলপুর পৌরসভার দু’নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় স্থানীয় কাউন্সিলরের উদ্যোগে ঢালাওভাবে সাজানো হয়েছে এই মেলাকে। বৈদ্যুতিক আলো ছাড়াও খুদেদের দোকান করার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা করে দেওয়া হয়েছে এবং মেলা প্রাঙ্গণ ঘিরে রাখা হয়েছে।এবারের এই মেলায় ১০০ জনের বেশি খুদেরা অংশগ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন এলাকার কাউন্সিলের চন্দন মন্ডল। তিনি জানিয়েছেন, আগেও এই মেলার আলাদা আকর্ষণ থাকলেও সেই ভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে হতো না। এই বছর থেকে আমি এখানকার কাউন্সিলর হওয়ার পর মেলাটিকে সাজিয়ে-গুছিয়ে করার উদ্যোগ নিই। কারণ এই মেলায় অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে রয়েছে খুদেদের বেচাকেনা এবং আনন্দ। এই মেলার বিশেষত্ব হলো, এখানকার যেসকল খাবারের দোকান বসানো হয়ে থাকে সেগুলির বিক্রেতা প্রত্যেকেই খুদে। কেউ ঘুঘনি নিয়ে, কেউ আবার কাটলেট, আলু কাটা, চাট ইত্যাদি নিয়ে এই মেলায় বিক্রির জন্য বসে। অর্থ উপার্জন এখানে বড় বিষয় নয়, কেবলমাত্র ছোটদের আনন্দের জন্যই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়।যেখানে অন্যান্য মেলাতে প্রাপ্ত বয়স্কদের দোকান করে খাবার অথবা জিনিসপত্র বিক্রি করতে দেখা যায় সেই জায়গায় এখানকার খুদেরা এমন অভিনব মেলায় অংশগ্রহণ করে থাকে। সুভাষ পল্লীর মাঠে দোল পূর্ণিমার তিনদিন পর থেকে তিন দিনের জন্য প্রতিবছর এই মেলার আয়োজন হয়। এই মেলার প্রতিটি দিন মেলায় অংশগ্রহণকারী খুদেদের বাড়ি থেকে নানান ধরনের খাবার তৈরি করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তারপর সেই খাবার খাবার নিয়ে খুদেরা এই মেলায় বিক্রি করতে বসে। অন্ততপক্ষে এই মেলার দৌলতে তিনদিনের জন্য এই খুদেরাই হয়ে ওঠে দোকানের মালিক।