|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা : দাম বাড়ানোর দাবিতে কলকাতার বাজার-দোকানে পনির সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ীরা। কলকাতার বৌবাজারের পনির ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, জোগান বন্ধ হওয়ায় ঘাটতি শুরু হয়েছে।
নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ থেকে প্রায় আটশো ব্যবসায়ী কলকাতার বাজারে পনিরের জোগান দেন। পাইকারেরা তাঁদের কাছ থেকে পনির নিয়ে বিভিন্ন দোকান-বাজারে পাঠান। কিছু পনির বাইরে রফতানিও হয়। রবিবার থেকে দুই জেলার ব্যবসায়ীরা পনির পাঠানো বন্ধ করেছেন।পনির ব্যবসায়ীদের দাবি, কোনও কারণ ছাড়াই পনিরের দাম কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগে তাঁরা ক্রিম ছাড়া পনির ১৬০ টাকা কেজি ও ক্রিমযুক্ত পনির ২১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতেন। দুই ক্ষেত্রেই ১০ টাকা করে দাম কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। দাম না বাড়ালে তাঁরা জোগান দিতে পারবেন না। কিন্তু কলকাতার পাইকারদের দাবি, লকডাউনের পর পনিরের দাম দু’দফায় ওঠানামা করেছে। তার পরেও পনির ব্যবসায়ীরা এক ধাক্কায় কেজিতে ২০-৩০ টাকা বাড়ানোর দাবি করছেন। তা না মেটাতেই সরবরাহ বন্ধ করেছেন তাঁরা।যা দাম পাচ্ছেন তাতে কেন পনির সরবরাহ করা যাচ্ছে না? ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, গত কয়েক মাসের মধ্যে দুধের দাম কেজিতে পাঁচ টাকা করে বেড়েছে। ফলে ছানা বা পনির তৈরির খরচও বেড়েছে। অথচ কলকাতার বাজারে দাম বাড়ানোর বদলে কমানো হচ্ছে। তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
নদিয়ার কালীগঞ্জের ব্যবসায়ী ভোলানাথ ঘোষ ও রাজু ঘোষের কথায়, “যে দাম দেওয়া হচ্ছে তাতে দুধ তুলে পনির করা ও কলকাতায় যাতায়াতের খরচই উঠবে না। গরু পালনে যে ভাবে খরচ বেড়েছে, সেই মতো চাষিরা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে দুধের। আমরা এমনিতেই লোকসানে চলছি।”দুধ থেকে পনির তৈরি না করলেও অবশ্য বিপদ কিছু কম নয়। কারণ, দুধ চাষিদের আগাম টাকা দিয়ে তাঁরা মৌখিক চুক্তি করে রাখেন। ফলে পনির উৎপাদন বন্ধ রাখলেও দুধ তাঁদের নিতেই হবে।
সেই দুধ নিয়ে তাঁরা কী করবেন?
মুর্শিদাবাদের রেজিনগরের বাসিন্দা সুরজিৎ ঘোষ বলেন, “স্থানীয় যে সব দুগ্ধকেন্দ্র আছে বা এলাকার খোলা বাজারে দুধ বিক্রি করে দিতে হবে।” রেজিনগরেরই আর এক ব্যবসায়ী দেবাশিস ঘোষ বলেন, “দুধ তো বেশি দিন মজুত করে রাখা যাবে না। তাই সমস্যা তো হবেই। তবে অন্য উপায়ও নেই। কলকাতায় পনিরের দাম না বাড়লে লোকসান করে তো আর ব্যবসা করতে পারব না!” বৌবাজের পনির কারবারি দেবু ঘোষ পাল্টা বলেন, “ওঁরা যে দাবি করছেন তা মানা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। বাজারদর যে ভাবে চলবে সেই ভাবেই দাম বাড়ানো হবে।” পনিরের জোগান না এলে কলকাতার বাজারে সমস্যা হবে না? দেবু বলেন, “সমস্যা তো হবেই কয়েক দিন। তবে অন্য কোনও জায়গা থেকে ব্যবস্থার পথওদেখতে হবে।”