|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা : চিকিৎসকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে হইচই। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা, কোঠারি হাসপাতালের ওই চিকিৎসক দেবিকা চট্টোপাধ্যায় আত্মঘাতীই হয়েছেন। তাঁর ঘর থেকে সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে বলে খবর পুলিশ সূত্রে। দক্ষিণ কলকাতার ডায়মন্ড সিটি সাউথের ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে হরিদেবপুর থানার পুলিশ।হরিদেবপুর থানা এলাকার ডায়মন্ড সিটি সাউথের ৩ নম্বর টাওয়ারের ১৪/বি নম্বর ফ্ল্যাটে মা-বাবার সঙ্গেই থাকতেন দেবিকা। ৩৩ বছর বয়সী ওই চিকিৎসক পেশার সূত্রে কোঠারি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে প্রাথমিক ভাবে খবর। পুলিশ জেনেছে, দেবিকার বিয়ে হলেও ডিভোর্স হয়ে যায়। তার পর থেকে সম্ভবত মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। গত কাল রাত ২টো ৪৫ মিনিট নাগাদ হঠাতই বিষয়টি নজরে আসে। তাঁর ঘরের দরজা খোলা ছিল না দেখে মা-বাবার সন্দেহ হয়। তৎক্ষণাৎ ঘর ভেঙে ঢোকেন তাঁরা। তখনই দেবিকার ঝুলন্ত দেহ নজরে আসে। পরিবারের ধারণা, অবসাদেই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। পুলিশও প্রাথমিক ভাবে তাই মনে করছে। আপাতত চিকিৎসকের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর আসল কারণ স্পষ্ট যাবে, বলছেন তদন্তকারীরা। এর মধ্য়েই তদন্ত শুরু করেছে হরিদেবপুর থানার পুলিশ।অভিনেতা থেকে মডেল হয়ে শিক্ষক বা চিকিৎসক, আত্মহত্যার ঘটনা যেন আপাত ভাবে সমাজের বিভিন্ন পেশায় জড়িতদের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ছে। গত ১৭ অগাস্ট কলকাতার হেয়ার স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে হইচই পড়ে গিয়েছিল। বর্ধমানের মেমারিতে তাঁর নিজের বাড়িতেই ঝুলন্ত দেহ মেলে। অবসরের ৩ বছর পরও পেনশন না পেয়ে অবসাদে ভুগছিলেন, অভিযোগ পরিবারের। ২০১৯-এ শিক্ষারত্ন সম্মানে ভূষিত হন শিক্ষক সুনীলকুমার দাস। পেনশনের জন্য অনেক বার বিকাশ ভবনে গিয়েছিলেন, দাবি মৃত শিক্ষকের স্ত্রী-র। পেনশন না পেয়ে অসুবিধা হচ্ছে, জানিয়েছেন একাধিক বার। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে এ ভাবে চলতে থাকায় অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি, জানায় পরিবার। তার পরই চরম পথ।
হরিদেবপুরের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত আত্মহত্যার তত্ত্ব প্রমাণিত নয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই বোঝা যাবে ছবিটা। তবে পুলিশের ধারণা সত্যি হলে তাতে যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ থাকছে। শরীরের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যও যে ভাল ভাবে বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত জরুরি, সেটা ফের বুঝিয়ে দেয় একের পর এক দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। এর পরও আমাদের টনক নড়বে তো?