বার শ্রীরামপুর বাস টার্মিনাস ভবনের অব্যবহৃত জায়গায় বেসরকারি উদ্যোগে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ তৈরির কথা উঠল

নিজস্ব সংবাদদাতা : আশ্বাস ছিল, হোটেল-রেস্তরাঁ তৈরি হবে। সন্ধ্যায় শহরবাসীর বিনোদনের জায়গা হয়ে উঠবে শ্রীরামপুর বাস টার্মিনাস ভবন ও সংলগ্ন চত্বর। সাড়ে চার বছরেও তা হয়নি। এ বার শ্রীরামপুর বাস টার্মিনাস ভবনের অব্যবহৃত জায়গায় বেসরকারি উদ্যোগে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ তৈরির কথা উঠল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখেই শোনা গিয়েছে এই প্রস্তাবের কথা। শ্রীরামপুরে ওই ভবন তৈরি করেছে হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স (এইচআরবিসি)। শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তার চেয়ারম্যান।গত বুধবার হিন্দমোটরের টিটাগড় ওয়াগন কারখানায় এক অনুষ্ঠানে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বক্তব্য পেশ করার সময় মুখ্যমন্ত্রী জানান, কল্যাণ তাঁকে বলছিলেন, শ্রীরামপুরে এইচআরবিসি-র একটি ভবন পড়ে রয়েছে। মঞ্চে থাকা একটি শিল্পগোষ্ঠীর কর্তাকে তিনি বলেন, তাঁরা শ্রীরামপুরের ওই ভবনে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ করতে পারেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ওই সংস্থার তরফে আজ, শনিবার জায়গাটি পরিদর্শন করা হতে পারে। ওই সংস্থার একাধিক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ কল্যাণ বলেন, ‘‘আমরা হোটেল-রেস্তরাঁ করার কথা বলেছিলাম ঠিকই। কিন্তু তা হয়নি। তবে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের থেকে ভাল কী আর হতে পারে! ওখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি হলে ছেলেমেয়েরা উপকৃত হবেন। তাঁদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে। ওই সংস্থা শিক্ষাক্ষেত্রে সফল। তারা এগিয়ে এলে একটি ভাল মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি হতে পারে এখানে। তবে, গোটা বিষয়টি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।’’বাস দাঁড়ানোর জায়গা-সহ পাঁচ তলা ওই ভবন তৈরি করতে ৫৫ কোটি টাকারও বেশি খরচ হয়েছে। বাস টার্মিনাসের উদ্বোধন হয় ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে। দুই থেকে পাঁচ তলায় ঝাঁ-চকচকে বিশাল হল। সেগুলি বন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কথা ছিল দোতলায় বাসের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রীদের বসার জন্য পরিপাটি ব্যবস্থা, আধুনিক মানের শৌচাগার, বাসকর্মীদের বিশ্রামের জায়গা থাকবে। ক্যান্টিন চলবে। বাস সিন্ডিকেটকে একটি করে ঘর দেওয়া হবে। তিন, চার এবং পাঁচ তলা বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার হবে ভবনের খরচ তোলার জন্য। রেস্তরাঁ-সহ বিনোদনের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু, হয়নি। ক্যান্টিন কিছু দিন চলে বন্ধ হয়ে যায়। দুই থেকে পাঁচতলা বন্ধই।বাস টার্মিনাসের উদ্বোধনে এসে তৎকালীন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী (এখন বিজেপিতে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা) কল্যাণের আর্জির প্রেক্ষিতে আশ্বাস দিয়েছিলেন, এখান থেকে দিঘা পর্যন্ত জৈব-শৌচাগারযুক্ত বাতানুকুল ভলভো বাস চলবে। পরবর্তী সময়ে পুরী এবং বিহার পর্যন্ত বাস চালু হবে। সে সব আশ্বাস এখন শীতঘুমে। শুধু শ্রীরামপুর-দিঘা সাধারণ সরকারি বাস চলে। সেই সময় শ্রীরামপুর থেকে যত রুটের বাস চলত, তার অধিকাংশই বন্ধ। টার্মিনাসে বাস রাখার জায়গা রয়েছে। নেই বাস। ওই চৌহদ্দির একাংশে পুরসভার আবর্জনার গাড়ি রাখা থাকে। অভিযোগ, পানীয় জলের সমস্যা মেটেনি। শৌচাগারঅপরিষ্কার থাকে।অনেকেরই বক্তব্য, ওই ভবনের পড়ে থাকা জায়গা কাজে লাগুক। সে ক্ষেত্রে এই জায়গার চেহারা বদলে যাবে। পরিকাঠামোগত যে সব সমস্যা রয়েছে, তা-ও দূর হবে।