|
---|
মসজিদ মাদ্রাসা মক্তব মাজার কবরস্থান সহ যে সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান যা ওয়াকফ বোর্ডের নথিভুক্ত নেই, এক এক গ্রাম বা মহল্লায় নিজস্ব কমিটি দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে। সেই সব মসজিদ মাদ্রাসা কবরস্থান সমূহকে সোসাইটি বা ট্রাষ্ট রেজিষ্টৈশন এ্যাক্টে রেজিষ্ট্রেশন করা যেতেই পারে। সরকারী ভাবে রেজিষ্টৈশন, ডিড ( দলিল ) তৈরীর আগে ও পরে কী করনীয়? লিখেছেন মহিউদ্দীন আহমেদ।
১. গ্রামে এক বা একের বেশী মসজিদ সহ ঈদগাহ, মাজার, কবরস্থান, মাজার, খানকাহ বা মক্তবখানা, জানাজা নামাজের জায়গা এবং মসজিদের নামে জমি জায়গা, স্থাবর – অস্থাবর সম্পত্তি কি কি আছে তা লিপিবদ্ধ করা। ট্রাষ্ট রেজিষ্ট্রেশন করার আগে সব আলোচনা, মসজিদ মক্তব কবরস্থান সহ সব সম্পত্তির বিবরণ মিটিং রেজ্যুলেশন বুকে লিপিবদ্ধ করা দরকার।
২. মসজিদ বা যে কোনো প্রতিষ্ঠানকে ট্রাষ্ট করার আগে ট্রাষ্ট বোর্ড মেম্বার ঠিক করার পাশাপাশি ট্রাষ্টের একটা নামকরন করতে হবে। নামটা মাদার নাম হিসেবে ঠিক করলে ভালো হয়। অর্থ্যাৎ ( উদাহরণ স্বরুপ ) গ্রামের নাম- “মক্কা নগর”, তাহলে “মক্কা নগর জুম্মা মসজিদ কমিটি” এই রকম নাম না রেখে ” মক্কা নগর ইসলামিক ফাউন্ডেশন ” বা “আল মুহাইমিন ( আল্লার নাম) ইসলামিক সোস্যাল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন” এই রকম একটা মাদার নাম ঠিক করা ভালো।
৩. ট্রাষ্টের আওতায় যে সব সম্পত্তি রাখা হবে সেই সব প্রতিষ্ঠানের নাম সহ জায়গার পরিমান কত? দাগ নং, খতিয়ান নং, জে এল নং, শ্রেণী, মৌজার নাম, দলিলে ও রের্কডে মালিকানা সংক্রান্ত নাম তথ্য সব কিছু লিপিবদ্ধ করা। মসজিদ ছাড়াও অনান্য ( কবরস্থান, ঈদগাহ, কৃষিজমি, পুকুর, বাগান) কোথায় কত সম্পত্তি রয়েছে, তার পরিমান, দাগ নং, জে,এল নং, মৌজা, খতিয়ান কত, সেই সম্পত্তির উৎপত্তি কখন এবং কি করে হয়েছে ( দান না ক্রয় ), তার চরিত্র বা শ্রেণী কি, কি ভাবে তা ব্যাবহার হয় ও হবে, পরবর্তী কালে জমি জায়গা বা কোনো সম্পত্তি ক্রয় বা বিক্রয় করা হলে বা কেউ দান করলে ট্রাষ্টের নামেই হবে এবং ট্রাষ্টের উদ্দ্যেশ্য অনুযায়ী তা ব্যাবহার হবে সেই সব তথ্য ট্রাষ্ট গঠন ও পরিচালনার নিয়মাবলীর কমিটির মিটিং রেজ্যুলেশন বুকে উল্লেখ করা হবে। এবং সমস্ত গ্রামবাসী / ট্রাষ্টের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক যুক্ত মানুষদের জানাতে হবে।
৪. জমি জায়গা সম্পত্তি কার নামে এখন রের্কড আছে, সেই সম্পত্তির উৎপত্তি বা উৎস কি? , কেনা হয়েছে না কেউ দান করেছে এবং কোন সময় কেনা বা দান হিসেবে পাওয়া গেছে তা কমিটির রেজ্যুলেশন বুকে লিপিবদ্ধ করা। এবং তার স্বপক্ষে সমস্ত নথিপত্র জোগাড় রাখা।
৫. মসজিদ মাদ্রাসা সহ সব প্রতিষ্ঠান কত বছরের পুরাতন ও তার স্বপক্ষে কাগজপত্র প্রস্তুত রাখা।
৬. গ্রাম গত ভাবে বা মসজিদ কমিটির উদ্যোগে যে ট্রাষ্ট রেজিষ্টৈশন করা হবে তা গ্রামবাসীকে খোলা নোটীশ দিয়ে জানানো এবং এ বিষয়ে কারোর কোনো বক্তব্য, অভিযোগ, পরামর্শ দেবার আছে কি না সে বিষয়ে খোলা নোটীশ দিয়ে অবগত করা। এবং কমপক্ষে ১৫/৩০ দিন সময় দেওয়া বক্তব্য পেশ করার। যাতে পরবর্তী কালে কারোর কোনো অভিযোগ না আসে। এবং সমস্ত বক্তব্য, আলোচনা লিপিবদ্ধ করা।
৭. মসজিদ / মাদ্রাসা সহ প্রতিষ্ঠান গুলির জমি দাতা, গ্রামের যে সব পূর্ব পুরুষ বা যারা জীবিত আছেন বা তাদের ওয়ারিশ দের কাছ থেকে লিখিত আকারে সম্মত্তি আদায় করে নেওয়া যে সব সম্পত্তি ট্রাষ্টে নথিভুক্ত হচ্ছে তাতে তাদের কোনো আপত্তি নেই, ভবিষ্যতেও থাকবে না। বা কোনো বক্তব্য, দাবী দাওয়া থাকলে তা গ্রহন করে আলোচনা করা। মনে রাখতে হবে, মসজিদ মাদ্রাসায় জমি দান করার দলিল এক, আর সেই জমি যখন ট্রাষ্টের আওতায় ডিড হবে সেই ডিড আলাদা। তাই জমিদাতাদের কাছে পুনরায় লিখিত মতামত নেওয়া বাঞ্ছনীয়। প্রয়োজনে জমি দাতারা বা তাদের ওয়ারিশদের মধ্য থেকেও ট্রাষ্টি হবে।
৮. ট্রাষ্ট বডি মেম্বার বা ট্রাষ্টি ৩/৫ জন হতে পারে, তবে ৯/১১ বা ১৩-১৫ জনকে নেওয়া ভালো। ট্রাষ্ট বডি মেম্বারে আলেম, মৌলনা, মুফতী সাহেবরা থাকবেন, যারা মসজিদ সহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পরিচলনায় মুসলিম ল’ বা কোরান হাদীশের বিধান মতো পরিচালনা করার জন্য। পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত, তরুন যুব সমাজকেও প্রাধান্য দিতে হবে। ট্রাষ্ট বডিতে একজন উকিল বাবু থাকলে ভালো হয়। ইংরেজী ভাষা সম্পর্কে জ্ঞান আছে তাদের প্রাধান্য দেওয়া।
৯. উল্লেখ্য, ট্রাষ্ট ডিডের সুনির্দিষ্ট কোনো ফর্ম নেই। যে সব ট্রাষ্ট ডিড একই ভাবে হবে।
১০. ট্রাষ্ট ডিড যিনি লিখবেন তার উপর সব টা ছাড়া ঠিক নয়। উদাহরন স্বরুপ বলা যায়- টেলার মাষ্টার জামা কাটতে পারেন ভালোই। কিন্তু আপনি বাবা / ছেলে না ছেলের দাদুর কার জামা বানাতে দিচ্ছেন সেটা যেমন দেখে নেওয়া হয় সেই রকম ট্রাষ্ট ডিড বা দলিল মসজিদ / ট্রাষ্ট কর্তাদের আগে ভালো করে পড়তে হবে। সব ট্রাষ্টেরই দলিল হবে কিন্তু সব দলিল এক রকম হবে না। সব মসজিদের ডিড ড্রাফট এক হবে না। একেক মসজিদের ট্রাষ্ট ডিড একেক রকম হবে।
১১. ট্রাষ্টের সেটেলর ও ট্রাষ্টি যারা হবেন, বা যাদের করা হবে তাদের নিয়ে গ্রামের মানুষের যেন যুক্তিসঙ্গত কারনে কোনো আপত্তি না থাকে, সর্ব সম্মতিক্রমে করা ভালো। কারন পরবর্তীকালে সেটেলর বা ট্রাষ্টীর নামে কেউ কোনো আপত্তি জানালে বা মামলা করলে সমস্যা হতে পারে। তাই ট্রাষ্ট বানানোর আগে সেটেলর, ট্রাষ্টি ও বোর্ড মেম্বাররা যেন স্বচ্ছভাবমূর্তির এবং সবার গ্রহণযোগ্য হয় সেটা দেখা দরকার।
১২. কোনো একটা মসজিদের নামে ট্রাষ্ট করা ঠিক নয়, তাহলে সেই মসজিদ কে ছোট বা কুক্ষিগত করে রাখা হবে । ভবিষ্যতে ট্রাষ্টের পরিধি বৃদ্ধি করা টা মসৃন হবে না। মসজিদের নামে ট্রাষ্ট হলে অনান্য সম্পত্তি সুরক্ষায় সমস্যা হতে পারে। ট্রাষ্ট রেজিষ্ট্রেশন এ্যাক্ট ১৮৮২ এর নিয়মাবলী অনুসরন করার পাশাপাশি মসজিদ ঈদগাহ সহ সব কিছু ইসলামিক নিজস্ব নীতি ( মুসলিম পার্সোনাল ল’), স্থানীয় নিয়মাকানুন, কমিটির স্থায়িত্ব, অনান্য কার্যকলাপ, সদস্য পরিবর্তন বা বিয়োজন ও সংযোজন সব কিছু পরপর উল্লেখিত হবে ডিডে এবং ডিড রেজিষ্ট্রেশন করার আগে সবাইকে তা জানাতে হবে, যাতে পরবর্তীতে কেউ কোনো আপত্তি করতে না পারে বা কোনো সমস্যা না হয়।
১৩. উপরে উদাহরন স্বরুপ ট্রাষ্টের একটি মাদার নাম নির্ধারন করে ট্রাষ্ট রেজিষ্ট্রেশন করার পর শুধু মসজিদ নয়, তার সঙ্গে মাদ্রাসা, মক্তব, ঈদগাহ, কবরস্থান, মাজার সহ যা যা সম্পত্তি, প্রতিষ্ঠান আছে সবই ট্রাষ্টের অধীন পরবর্তীতে নথিভুক্ত ( দান পত্র) করা দরকার। তার প্রতিষ্ঠাকাল, সম্পত্তির পরিমান, দাগ নম্বর উল্লেখ সহ সম্পূর্ণ বিবরন দরকার।
১৪. ট্রাষ্ট নামকরনের পাশাপাশি যেটাকে অফিস হিসেবে দেখানো হবে এবং মসজিদকেই যদি ট্রাষ্ট হিসেবে রেজিষ্ট্রেশন করা হয় তাহলে ট্রাষ্ট ডিডে মসজিদটি কোন দাগ নম্বরে, কোন মৌজায় অবস্থিত তার পরিমান কত তা সব ট্রাষ্ট ডিডে উল্লেখ থাকবে। না হলে যে নামেই ট্রাষ্ট হোক না কেন, সেটা কোন মসজিদ বা মাদ্রাসাকে কেন্দ্র করে ট্রাষ্ট হচ্ছে তার ভিত্তি পরিস্কার হবে না। এবং নির্দিষ্ট ভাবে দাগ, খতিয়ান নাম্বার সহ ডিডে উল্লেখ না হলে সেই ট্রাষ্ট করাটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ট্রাষ্টের কোন মূল্যই থাকবে না।
এখানে একটা কথা উল্লেখ করতে হয় যে, অনেক ট্রাষ্ট রেজিষ্ট্রেশন করে বলা হয় ট্রাষ্টের সম্পত্তি আছে ১০ বা ২০ হাজার টাকা। ট্রাষ্ট ডিডে এই ধরনের সামান্য অর্থ সম্পত্তি দেখানো মানে সেটা একদম নতুন কাজ শুরু করার একটা ট্রাষ্ট বা সোসাইটি। এই ক্ষেত্রে বলা যায় যে, মসজিদ বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান টিকে আইনী ভাবে সুরক্ষিত রাখার জন্য ট্রাষ্ট করা হচ্ছে এবং করার পর সেই মসজিদ সহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে আইনী বলয়ে সুরক্ষিত রাখতে আরো অনেক করনীয় থাকে। তা কিন্তু হচ্ছে না। এটা যে মসজিদ সহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বহু বছর ধরে রয়েছে তার প্রেক্ষিতে ট্রাষ্ট হচ্ছে না। এই ধরনের “নতুন ভাবে” ট্রাষ্ট করা মানে যে উদ্দেশ্য নিয়ে ট্রাষ্ট করা তা অর্থহীন।
১৫, ট্রাষ্টে অতীত বা বর্তমানের স্থাবর, অ-স্থাবর সম্পত্তির বিবরন সহ জমির শ্রেণী দলিল ও খতিয়ান – রের্কডে ( মসজিদ, বাগান, দো, শালি, কবরস্থান) যাই উল্লেখ থাকুক তা ডিডে উল্লেখ করা ভালো। ভবিষ্যতে সম্পত্তি রক্ষায় আইনী জটিলতা থেকে সুরক্ষিত হবে। একই ভাবে অতীত ও বর্তমানের সম্পত্তির বিবরন যেমন নথিভুক্ত হচ্ছে তেমন আগামী দিনে কোনো সম্পত্তি ক্রয় করা হলে বা কেউ দান করলে ট্রাষ্টকে করবে সেকথা পরিস্কার ভাবে ডিডে উল্লেখ থাকবে।
১৬. ধর্মীয় সম্পত্তির বর্ননার পাশাপাশি মাইয়্যাত সৎকার, কুরবানীর চামড়ার টাকা প্রদান সহ যে সব সমাজসেবামূলক কাজকর্ম করা হয় বা হবে ট্রাষ্ট বোর্ড সমাজের জন্য রক্তদান শিবির, ত্রান বিতরণ, আপদকালীণ সহায়তা সহ পরবর্তীকালে হাসপাতাল বা দাতব্য প্রতিষ্ঠান নির্মান, এ্যাম্বুণেন্স পরিষেবা, মাদ্রাসা বা স্কুল প্রতিষ্ঠা, পত্র পত্রিকা প্রকাশ সহ যাবতীয় জনকল্যাণমূলক কাজের পরিকল্পনা উল্লেখ করা।
১৭. ট্রাষ্ট ডিড করার সময় ইসাদী বা স্বাক্ষী ( উইটনেস) নিজ গ্রামের মানুষ হবেন। বাইরের নয়। সরকারী ভাবে ট্রাষ্ট করার আগে ডিড ভালো করে পড়তে হবে। গ্রামের সমস্ত মানু্ষকে জানানো দরকার যে ডিডে কি কি বলা হচ্ছে। কারন এটা শুধুমাত্র ট্রাষ্টিদের ট্রাষ্ট নয়, এটা সর্বসাধারনের জন্যই।
১৮. সমস্ত সম্পত্তিকে সুরক্ষিত রাখতে ট্রাষ্ট করা হচ্ছে, যখন থেকে ট্রাষ্ট হবে, সেই সময় থেকে নতুন মিটিং রেজ্যুলেশন খাতা, নোটীশ বুক, আয় ব্যায়ের হিসেব সহ সব নতুন করে করা। পুরাতন নথির সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখেই। মনে রাখা দরকার যে, মসজিদ সহ সব ধর্মীয় সম্পত্তি সুরক্ষার জন্য ট্রাষ্ট গঠন করার পরই কিন্তু কাজ শেষ নয়। সব সম্পত্তিকে সুরক্ষিত রাখতে ও স্বচ্ছতার জন্য ট্রাষ্ট বোর্ডকে আরো দায়িত্ববান হতে হবে এবং ট্রাষ্ট পরিচালনায় সব কিছু বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। ট্রাষ্ট রেজিষ্ট্রেশন করার সঙ্গে ইনকাম ট্যাক্স আইন মোতাবেক 12A, 80G রেজিষ্ট্রেশন করা যেতে পারে।
১৯. প্রতিষ্ঠানের আয় ব্যায়ের হিসেব স্বচ্ছ রাখতে রসিদ ছাপা সহ এ্যাকাউন্টস বুক ঠিকঠাক রাখা। এবং শিক্ষিত দায়িত্ববান কাউকে ক্যাশিয়ার হিসেবে নিযুক্ত করা।
২০. ট্রাষ্টের অডিট করাতে হলে কোনো সমস্যা যাতে না হয় তারজন্য হিসেব পত্র সঠিক রাখা।
২১. ট্রাষ্ট বোর্ড মেম্বার ছাড়াও ট্রাষ্টি বোর্ড আলোচনা সাপেক্ষে কত জন অতিরিক্ত সদস্য নিতে পারবেন, এ্যানুয়াল মিটিংয়ের সময়কাল কখন হবে সেটাও উল্লেখ করা।
২২. ডিড এ্যামেন্ডমেন্ট করার দরকার হলে কোন সম্ভাব্য প্রেক্ষিতে হবে সেটাও আলোচনা করে রাখা।
২৩. ডিড তৈরীর আগে বারবার দেখা দরকার যে ডিডে কি কি উল্লেখ থাকছে। প্রয়োজনে অভিজ্ঞ আইনজীবির পরামর্শ নেওয়া দরকার। এই ট্রাষ্ট করার আগে কমকরে ৩-৪ মাস ধরে সমস্ত কাগজপত্র ঠিক রা সহ যাবতীয় কাগজপত্র ঠিক করার প্রক্রিয়া চালাতে হবে। অন্যের কথায় তারাহুরো করা ঠিক নয়।
২৪. ট্রাষ্ট ডিডে চ্যারিটেবল কাম রিলিজিয়াস কথা টা উল্লেখ রাখা। আবেগ প্রবনিত হয়ে শুধু মসজিদকে সামনে রেখে, মসজিদের নামে ট্রাষ্ট করে দিলেও যে মসজিদ সুরক্ষিত থাকবে তা নয়। মসজিদের স্থিতি, প্রতিষ্ঠাকাল সহ মসজিদের কাগজপত্র সঠিক আছে কিনা তাও উল্লেখ রাখা দরকার।
২৫. ট্রাষ্ট ও ভ্যালুয়েশন- ট্রাষ্ট করার জন্য ভ্যালুয়েশন সাধারণত প্রয়োজন হয়, বিশেষ করে যদি আপনি ট্রাস্ট রেজিস্ট্রেশনের সময় সম্পত্তির বিস্তারিত বিবরন ডিডে উল্লেখ করতে চান এবং তা সরকারি নথিতে আনতে চান। তাহলে ভ্যালুয়েশন প্রয়োজন হবে। ভ্যালুয়েশন প্রয়োজন হয় তার কারন- সম্পত্তির প্রকৃত বাজারমূল্য নির্ধারণ করার জন্য। এবং ট্রাষ্ট রেজিস্ট্রেশনের সময় স্ট্যাম্প ডিউটি এবং রেজিস্ট্রেশন ফি নির্ধারণের জন্য। ভবিষ্যতে কোনও আইনি বা কর সংক্রান্ত জটিলতা এড়ানোর জন্য।
যদি ট্রাস্ট ডিডে সম্পত্তির ট্রান্সফার স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে। যদি কোনও জমি বা সম্পত্তি সরকারি দলিলে ট্রাস্টের নামে করতে হয়। এক্ষেত্রে বিস্তারিত জানতে ও ট্রাষ্ট রেজিষ্ট্রেশন করার আগে অভিজ্ঞ আইনজীবির সঙ্গে আলোচনা করে কাজটা করা ভালো।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইসলামিক ধর্মীয় সম্পত্তি যেমন মসজিদ, মাদ্রাসা, মাজার, ঈদগাহ, কবরস্থান, এই সব সম্পত্তি যদি ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে কেউ আনতে চায় তাহলে ওয়াকফ আইন অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন ও ভ্যালুয়েশন করতে হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে সাধারণত কমার্শিয়াল ভ্যালুয়েশন না হলেও, একটা ভিত্তিমূল্য দেখানো হয়।
ট্রাস্ট ডিড তৈরির সময়, সম্পত্তিগুলির বিবরণ সহ মূল্য উল্লেখ করলে সমস্ত সম্পত্তি সুরক্ষিত রাখতে ও আইনী জটিলতা থেকে বাঁচাতে ভবিষ্যতে সুবিধা হয়।
মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান, ঈদগাহ, মাজার সহ যে সব সম্পত্তি ওয়াকফ বোর্ডে নথিভুক্ত নেই, কিন্তু নিজ নিজ এলাকায় নিজস্ব কমিটি দ্বারা পরিচালিত হয়, এবং ঐ সমস্ত সম্পত্তির আইনী রক্ষাকবচ দিয়ে বর্তমান ও ভবিষ্যত্যের জন্য সুরক্ষিত রাখার স্বার্থে ট্রাষ্ট বোর্ড গঠন করে, ট্রাষ্ট রেজিষ্ট্রৈশন এ্যাক্ট মোতাবেক রেজিষ্ট্রেশন করানোর আগে খুব সর্তকর্তা অবলম্বন করতে হবে। সামাজিক স্বার্থে এই পরামর্শমূলক তথ্য তুলে ধরা হলো।