যোগীরাজ্যে লখিমপুর খেরিতে মৃতের পরিবারের মুখোমুখি তৃণমূলের প্রতিনিধিদল

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের যে এলাকায় মন্ত্রীর পুত্রের গাড়ি কৃষকদের পিষে মেরেছে, সেই লখিমপুর খেরিতে এই মুহূর্তে রয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের পাঁচ সাংসদ। তৃণমূল সাংসদরা দুটি দলে ভাগ হয়ে পৌঁছেছেন। একটি দলে রয়েছেন সুস্মিতা দেব এবং কাকলি ঘোষ দস্তিদার। অন্য একটি দলে রয়েছেন দোলা সেন, প্রতিমা মন্ডল এবং আবীররঞ্জন বিশ্বাস। সোমবার সকাল ছ’টায় কলকাতা থেকে বিমানে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা হন তৃণমূল সাংসদরা। আটটা নাগাদ দিল্লি বিমানবন্দরে পৌঁছান তাঁরা। এরপর সড়কপথে লাখিমপুরের উদ্দেশে রওনা হন তাঁরা।

    পথে ১২/১৩টি জায়গায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এবং প্রশাসনের তরফে পথ আটকানো হয় তৃণমূল সাংসদের। তৃণমূলের একটি দল পৌঁছলেও অন্য একটি দলকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। ওই দলে রয়েছেন সুস্মিতা দেব ও কাকলি ঘোষদস্তিদার।

    যদিও দীর্ঘ সময় পর সোমবার রাতেই লখিমপুর খেরিতে পৌঁছয় প্রতিনিধি দল। সোমবার রাত লখিমপুরে কাটিয়ে আজ, মঙ্গলবার সকালে মৃত কৃষকদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান তৃণমূল সাংসদরা।  সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ ভগবন্তপুর গ্রামে মৃত কৃষক লভপ্রীত সিংয়ের(১৯) বাড়িতে পৌছায় তাঁরা।

    সকাল সাড়ে ন’টা পর্যন্ত সেখানে ছিলেন তাঁরা। এরপর সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ ধারারা মহকুমার লাভারি গ্রামে পৌঁছন তাঁরা। রবিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রর ছেলে আশিস মিশ্রর গাড়িতে পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫৭ বছর বয়সি নিশাত্তর সিংয়ের। দুপুর সাড়ে বারোটা পর্যন্ত সেখানে ছিল তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। এরপর তাঁরা আবার লখিমপুর খেরি উদ্দেশে রওনা হন।

    উল্লেখ্য, রবিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ছেলের গাড়িতে পিষে কৃষকদের মৃত্যুতে তোলপাড় গোটা দেশ। ওই ঘটনার জেরে এখনও পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী লখিমপুর খেরি যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁকে আটক করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। সিতাপুরে একটি গেস্ট হাউসে ৩০ ঘণ্টার বেশি আটকে রাখা হয় তাঁকে। এই ঘটনায় রাজনৈতিক চাপানউতোর আরও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়।

    আগেই এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, কৃষক আন্দোলনের চেহারা দেখে ভয় পেয়েছে যোগী আদিত্যনাথ সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “রাম–রাজ্য নয়, উত্তরপ্রদেশে কিলিং রাজ চলছে।”মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটে লিখেছেন, “তৃণমূলের ৫ সাংসদের প্রতিনিধিদল যাচ্ছে লখিমপুর খেরিতে। কৃষকদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে যাচ্ছেন তাঁরা। কৃষক ভাইদের প্রতি বিজেপি’র শত্রুর মতো আচরণ অত্যন্ত দুঃখজনক। কৃষকদের প্রতি আমাদের সবসময় নিঃশর্ত সমর্থন থাকবে।”

    মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই লখিমপুর খয়েরি ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকারের ভূমিকার নিন্দা করার পাশাপাশি কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর সেই বার্তা নিয়েই আজ মৃত কৃষকদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করলেন তৃণমূলের ৫ সাংসদ।

    যে গাড়িগুলি কৃষকদের পিষে দিয়েছে, তার একটি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রের ছেলে আশিসের বলে দাবি করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। স্বভাবতই চরম বিপাকে পড়েছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার।