নান্টু পালের তৃণমূলে ফেরার আগ্রহ দেখানো ঘিরে বিক্ষোভ তৃণমূল কর্মীদের, পরলো বিরোধিতার পোস্টার

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: শিলিগুড়ি পুর নির্বাচনের আগে বিজেপি ছেড়ে সস্ত্রীক নান্টু পাল কি ফের তৃণমূলে ফিরছে? এমন জল্পনা বেশ কয়েকদিন ধরেই চলছে শহরজুড়ে। আর তাতেই আপত্তি জানিয়ে শিলিগুড়ি শহরজুড়ে পোস্টার পড়ল নান্টু পালের বিরুদ্ধে। পোস্টারে স্পষ্ট করে লেখা আছে নান্টু পাল আর মঞ্জুশ্রী পালকে তৃণমূলে আর না। আর এমন পোস্টার ঘিরেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শহরে। গত বিধানসভা নির্বাচনে তাকে প্রার্থী না করে কলকাতা থেকে ওমপ্রকাশ মিশ্রকে শিলিগুড়ি কেন্দ্রে  তৃণমূল প্রার্থী করায় দলের প্রতি ক্ষোভ দেখিয়ে তৃণমূল ছেড়ে কৈলাশ বিজয়বর্গীয়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন শিলিগুড়ির ১১ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের প্রাক্তণ কাউন্সিলার নান্টু পাল ও তাঁর স্ত্রী মঞ্জুশ্রী পাল। সামনেই শিলিগুড়ি পুরসভা নির্বাচন।

    সেই নির্বাচনের আগে ফের তৃনমূলে ফিরতে আগ্রহ দেখিয়েছে নান্টু ও মঞ্জুশ্রী। তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বও তাতে আপত্তি করেনি। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলার চেয়ারম্যান অলোক চক্রবর্তী বলেছিলেন যারা নির্বাচনের আগে দল ছেড়েছিল, তারা যদি ফের দলে ফিরতে চায় তা হলে দলে তাদের স্বাগত। এই প্রেক্ষিতে তৃণমূলও চেয়েছিল ১১ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডে নান্টু পাল ও মঞ্জুশ্রী পালকে টিকিট দিলে তৃণমূলের দুটি আসন একপ্রকার নিশ্চিত। আর এমন সম্ভাবনা তৈরি হতেই তাতে জল ঢেলে দিয়েছে দলের একাংশ। নান্টু পাল ও মঞ্জুশ্রী পালকে যাতে দলে আর ফেরানো না হয় তাঁর জন্য শিলিগুড়ির বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পোস্টার ফেলল তৃণমূলের একাংশ। তৃণমূল কংগ্রেসের নামে ফ্লেক্সে লেখা আছে “গদ্দার নান্টু পাল ও মঞ্জুশ্রী পালকে দলে আর না আর না”।

    এই প্রসঙ্গে নান্টু পাল বলেন, তৃণমূলের নামে লাগানো ফ্লেক্স, সেটা দেখার দায়িত্ব তৃণমূলের। যারা রাতের অন্ধকারে এমন পোস্টার ফেলে, সেই সব স্বার্থানেষী মানুষ তৃণমূলের হতে পারে না। কারণ তৃণমূল পোস্টারের রাজনীতি করেনা। তিনি দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে রাজনীতির সাথে যুক্ত রয়েছেন, মানুষের পাশে থেকে রাজনীতি করেছেন, তাই কে কি বলল, কে কোথায় পোস্টার ফেলল তাতে তাঁর কোন যায় আসে না।

    তবে তিনি ও তাঁর স্ত্রী আজকের দিনেও বিজেপিতে রয়েছেন বলে দাবী করেছেন নান্টু পাল।নান্টু পাল বিরোধী পোস্টার প্রসঙ্গে তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা স্পোকসপার্সণ বেদব্রত দত্ত বলেন, এই পোস্টারের সাথে তৃণমূলের কেও জড়িত নয়। তৃণমূল কর্মীরা এমন জঘন্য কাজ করতে পারেনা। দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কোন তৃতীয় কেও এমন কান্ড ঘটিয়েছে। তবে বিষয়টি তিনি দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। দল  যা সিদ্ধান্ত নেবে তা মেনে চলা হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

    তবে তৃণমূলের একটা অংশ মনে করছে, নিজের রাজনৈতিক সুবিধার্থে বার বার দল পরিবর্তণ করেছে নান্টু পাল। সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর কংগ্রেসের টিকিটের প্রলোভনে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন নান্টু পাল। পরবর্তীতে কংগ্রেসে সুবিধা করতে না পেরে ফের তৃণমূলে ফিরেছিলেন এই পাল দম্পতি। গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে তৃণমূল ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। বিজেপির অবস্থা রাজ্যে খারাপা হতেই ফের তৃণমূলে আসার জন্য পা বাড়িয়েছে নান্টু মঞ্জুশ্রী। এদের
    তৃণমূলে নেওয়া হলে তৃণমূলের নীচু তলার কর্মীদের মনোবলে আঘাত লাগবে। তাই হয়ত এই সম্ভাবনা থেকেই কোন তৃণমূল প্রেমীরা নান্টু পাল বিরোধী পোস্টার ফেলেছে শিলিগুড়িতে।