|
---|
নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: কোনও তৃতীয় বিকল্প নয়৷ বিজেপি-কে হারাতে সরাসরি তাদের সঙ্গে বিরোধী জোটের লড়াই চায় তৃণমূল৷ জাগো বাংলার সম্পাদকীয়তে এ ভাবে বিরোধী জোট নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিল রাজ্যের শাসক দল৷ পাশাপাশি কংগ্রেসের ভুলেই যে বিজেপি-র এত বাড়বাড়ন্ত, সেই অভিযোগও করা হয়েছে তৃণমূলের দলীয় মুখপত্রে৷ ফলে অতীতের থেকে শিক্ষা নিয়েই এবার বিরোধী জোট তৈরি হোক, সেই দাবিই তোলা হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে৷
গত কয়েক দিন ধরেই বিরোধী দলগুলির কয়েকটি কর্মসূচিতে তৃণমূলের অনুপস্থিতি নিয়ে দিল্লির রাজনীতিতে নতুন করে জল্পনা ছড়িয়েছিল৷ কংগ্রেসের নেতৃত্বে কর্মসূচিতে তৃণমূলের আপত্তি আছে, কোনও কোনও মহল থেকে এমন ধারণাও ছড়িয়ে দেওয়া হয়৷ ফলে বিরোধী জোটের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে৷ সেই বিভ্রান্তি দূর করতেই মূলত এ দিন নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিল তৃণমূল৷
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-কে রুখে দিয়ে বিপুল জয়ের পরই বিরোধী ভোট এক জায়গায় নিয়ে আসার ফর্মুলার পক্ষে সওয়াল করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বিরোধী দলগুলিকেও সেই বার্তা দিয়েছেন তিনি৷ এ দিন তৃণমূলের মুখপত্রেও সেই বিজেপি ভোট একত্রিত করার উপরেই জোর দেওয়া হয়েছে৷ মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, রাজ্যে জোট বেঁধে লড়েও শূন্য পেয়েছে কংগ্রেস- সিপিএম৷ সেখানে একাই বিজেপি-কে আটকে দিয়েছে তৃণমূল৷ তা সত্ত্বেও দেশের স্বার্থেই তৃণমূল বিরোধী জোটের পক্ষে বলেও দাবি করা হয়েছে৷ জাগো বাংলার সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, ‘আমরা অবিজেপি, গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির ঐক্যের পক্ষে৷ আমরা ঐক্য চাই বলেই নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে সোনিয়া গান্ধির বাড়ি গিয়ে বৈঠক করেছেন৷ রাহুল গান্ধিও সেখানে ছিলেন৷ সংসদের ভিতরে বাইরে আমাদের বিজেপি বিরোধী ভূমিকা প্রতিষ্ঠিত৷ কিন্তু আমরা চাই একটা নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে ঐক্য হোক৷ আজ হঠাৎ মনে হল একটা ফোনে বলে দিলাম আমরা মিছিল করছি, চলে আসুন, এটা তৃণমূলের ক্ষেত্রে চলবে না৷’
এ দিনও জাগো বাংলার সম্পাদকীয়তে দাবি করা হয়েছে, বিরোধী জোটের নেতৃত্ব নিয়ে তৃণমূল আদৌ ভাবছে না৷ তাদের একমাত্র লক্ষ্য বিজেপি-র জনবিরোধী নীতির অবসান ঘটানো৷
যদিও তৃণমূলের মুখপত্রেও বিজেপি-র বাড়বাড়ন্তের জন্য কংগ্রেসকেই দায়ী করা হয়েছে৷ সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, ‘কংগ্রেস যদি উপযুক্ত বিকল্প হিসেবে লড়াই দিতে পারত,তাহলে গত লোকসভা নির্বাচনেও বিজেপি এত আসন পেত না৷ ফলে বিরোধী জোট গড়ার ক্ষেত্রে অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে৷ আমরা কখনওই কংগ্রেস বাদ দিয়ে জোটের কথা বলছি না৷ বরং কোনও বিকল্প জোট বয়, এবার সরাসরি বিকল্প জোট বিরোধীদের লক্ষ্য হওয়া উচিত৷’
তৃণমূল মনে করে, অতীতে কংগ্রেস কেন নিজেদের ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে অথবা বিরোধী জোট গঠনের ক্ষেত্রে অতীতে কী ফাঁকফোকর ছিল, এবার বিরোধী জোট গঠনের আগে সেগুলি চিহ্নিত করা প্রয়োজন৷নাম না করে দলীয় মুখপত্রের সম্পাদকীয়তে সিপিএম,কংগ্রেসকেও অবশ্য খোঁচা দিতে ছাড়েনি তৃণমূল৷ জাগো বাংলার সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, ‘আমাদের সদিচ্ছার নতুন করে প্রমাণ দিতে হবে না৷ বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপি যখন সবরকম নখ- দাঁত দিয়ে আমাদের আক্রমণ করেছে, তখন অনেকেই তাতে ধুনো দিয়ে আলাদা লড়ে শূন্য পেয়েছে৷ আমরা জানি বিজেপি-কে কীভাবে হারাতে হয়, তাদের সর্বভারতীয় মিলিত শক্তিকে হারাতে হয়৷ ফলে বিরোধী জোট যেমন আমরা চাই, সেরকমই সেই জোটের নির্মাণ ফর্মুলাও তৃণমূল কংগ্রেস জানে৷ আমরা বিরোধী ঐক্য চাই৷ দু’ একটি কর্মসূচিতে থাকা না থাকা দিয়ে উপসংহার টানা উচিত নয়৷’