আজ মাঝেরআইট দরবার শরীফের পীর আল্লামা হজরত মাওলানা মোঃ একেএম হায়দার আলি সাহেবের দাফন কার্য সম্পন্ন হল

নতুন গতি ডেস্ক: কয়েক লক্ষ মানুষের চোখের জলে চিরবিদায় নিলেন রাজারহাট নিউটাউন মাঝেরআইট দরবার শরীফের মেজ সাহেবজাদা পীর আল্লামা হজরত মাওলানা মোঃ একেএম হায়দার আলি সাহেব।
মঙ্গলবার সকালে নিউটাউনের এক বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। তিনি রেখে গেছেন স্ত্রী সহ ৭ ছেলে, ৩ মেয়ে ও অসংখ্য গুনগ্রাহী, ভক্ত মুরিদদের। বুধবার খড়িবাড়ি আন্দুলিয়াতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন কার্য সম্পন্ন হয়। বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। গত ২১ জুলাই ঈদের দিন সকালে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় এবং দীর্ঘ লড়াইয়ের পর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটার কিছু পর ইন্তেকাল করেন বলে জানান মরহুমের মেজ সাহেবজাদা বিশিষ্ট সমাজসেবী একেএম ফারহাদ সাহেেব।
উল্লেখ করা যায় মরহুমের পূর্বপুরুষরা কলকাতার কানখুলিতে আছেন। মরহুম পীর একেএম হায়দার আলি সাহেবের দাদুজান হলেন পীর আহমদ আলি হামিদ শাহ জালালী (রহ:)। তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র পীর মাহমুদ বাখত বাখতিয়ারী (রহ:)। তাঁর আব্বাজানের নির্দেশে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছে দিতে তিনি কানখুলি ছেড়ে রাজারহাট নিউটাউনের মাঝেরআইট গ্রামে বসবাস শুরু করেন। পীর সাহেবের শুভ আগমনে ওই এলাকা লোকমুখে মাঝেরআইট পীরডাঙ্গা দরবার শরীফ হিসাবে পরিচিত লাভ করে এবং সেখানে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সারা বছর প্রচুর সংখ্যক মানুষের সমাগম হয়।
অত্যন্ত গুনিজন,প্রখ্যাত বাগ্মী বক্তা মরহুম একেএম হায়দার আলি সাহেব ধর্মপ্রচারের জন্য রাজারহাট থেকে কয়েক কিমির দূরত্ব খড়িবাড়ির আন্দুলিয়া গ্রামে বসবাস শুরু করেন। যা আন্দুলিয়া জালালীবাগ দরবার শরীফ নামে পরিচিত লাভ করে। মরহুম পীর একেএম হায়দার আলি সাহেব দ্বীনের খিদমতের পাশাপাশি প্রাইমারী স্কুলে শিক্ষকতা করতেন।শিক্ষার প্রসারে মক্তব, মাদ্রাসা ও মসজিদ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। ফুরফুরা সিলসিলার খিদমতে তাঁর নিবেদিত প্রাণ ছিলো।সহজ সরল ভাষায় তিনি ওয়াজ নসিহত করে ইসলামের খিদমত করে গেছেন এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ দূরীকরণে অগ্ৰগণ্য ভুমিকা পালন করতেন। হায়দার সাহেবের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন রাজনৈতিক জগতের প্রতিনিধি এবং ফুরফুরা শরীফের পীরসাহেব ও পীরজাদারা। পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাতে হাজির ছিলেন ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী,মেহেরাব সিদ্দিকী, ইমরান সিদ্দিকী,সাহিম সিদ্দিকী,সহ আরও অনেকেই। রাজনৈতিক জগতের বিধায়ক নারায়ন গোস্বামী, বীনা মন্ডল,তাপস চট্টোপাধ্যায়,হাজী নুরুল ইসলাম, মফিদুল হক সাহাজি প্রমুখ।
মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়ার আবেদন জানিয়েছেন পীরজাদা মাসুম বাখতেয়ারি,একেএম ফারহাদ,মুস্তাক আহমেদ রাকিবুল আজিজ, মিরাজুল কাদির,সাহিদ মুনির, মনজুরুল মাসুদ সহ পরিবারের সকলেই।
এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবী তথা মরহুমের মেজ সাহেবজাদা জনাব একেএম ফারহাদ জানান প্রত্যেক বছর আব্বা হুজুরের স্মরণে দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। আমাদের বিপদের দিনে আন্দুলিয়াবাসীরা যেভাবে সহযোগিতা করেছেন তা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।