|
---|
লুতুব আলি, বর্ধমান, নতুন গতি : কীর্তি আজাদের সমর্থনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোড শোয়ে জনস্রোত। প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ বর্ধমান লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেসের পদপ্রার্থী। এই কেন্দ্রে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে লড়াই করছেন বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। এই দুই হেভি ওয়েট প্রার্থীর জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ হেভি ওয়েট নেতা-নেত্রীরা পূর্ব বর্ধমান ও পশ্চিম বর্ধমানের জনসভা ও রোড সভা করে আলোড়ন ফেলে দিয়েছেন। ৫ মে বর্ধমানের স্পন্দন কমপ্লেক্স থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোড শো ছিল চোখে পড়ার মত। সেদিন বিকালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পন্দন কমপ্লেক্সের মাঠে হেলিকপ্টার থেকে নেমেই তিনি অংশ গ্রহণ করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে স্বাগত জানানোর জন্য রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক খোকন দাস, পূর্ব বর্ধমান জেলার যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রাসবিহারী হালদার সহ অন্যান্য দলীয় নেতৃত্বরা হাজির ছিলেন। আদিবাসী লোগো নৃত্যশিল্পীরা মুখ্যমন্ত্রীকে রঙিনভাবে স্বাগত জানান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিন কয়েক আগে পূর্বস্থলীর সমুদ্রগড়, পূর্ব বর্ধমানের রায়নাতে নির্বাচনী জনসভা করেছেন। এই জনসভা গুলিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন চলতি লোকসভা নির্বাচনে বিরোধীরা যতই অপপ্রচার করুক তৃণমূল কংগ্রেস নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার প্রায় প্রতিদিনই রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তুলোধোনা করে ছাড়ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের কন্যাশ্রী, লক্ষী ভান্ডার, কৃষক বন্ধুসহ একগুচ্ছ কর্মসূচি দিল্লি কেন সারা পৃথিবীকে পথ দেখাচ্ছে। এই কর্মসূচি গুলির অধিকাংশ কেন্দ্র সরকার কর্তৃক প্রথম পুরস্কার ছিনিয়ে আনছে। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে গত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস পদপ্রার্থী মমতাজ সংঘমিতা বিজেপির পদপ্রার্থী সুন্দর সিংহঅহলুয়ালিয়ার কাছে পরাস্ত হন। এই কেন্দ্রে গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির তেমন কোনো প্রচার না থাকাতেও তৃণমূল কংগ্রেস হেরে যান। চলতি লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস আশাবাদী দেশের প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজাদকে প্রার্থী করানোয় এই কেন্দ্রে নিশ্চিতভাবে তৃণমূল কংগ্রেস জয়লাভ করবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দুজনেই এই কেন্দ্রটি নিয়ে একনাগাড়ে লেগে আছেন। এই কেন্দ্রের দিলীপ ঘোষের নাম ঘোষনার অব্যবহিত পরই দিলীপ ঘোষ বর্ধমানের ঘাঁটি গেড়ে আছেন। প্রায় প্রতিদিনই তিনি মর্নিং ওয়ার্ক, চা চক্রে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে চলেছেন। পদ্ম শিবিরও আশাবাদী এই কেন্দ্রে দিলীপ ঘোষ নিশ্চিত ভাবে জয় লাভ করবেন। বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে প্রাক্তন ক্রিকেটার, প্রাক্তন সাংসদ, ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার কীর্তি আজাদ তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্যদিকে রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ বিজেপির লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির পদপ্রার্থী। সিপিআইএমের টিকিট এই কেন্দ্রে লড়াইয়ের ময়দানে নেমেছেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সুকৃতি ঘোষাল। বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে মূলত ত্রিমুখী লড়াই হলেও প্রকৃতপক্ষে কনটেস্ট হবে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে বলে ওয়াকিবহল-মহলের ধারণা। বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রে ঘাসফুলের পদপ্রার্থী শর্মিলা সরকার, পদ্ম ফুলের পদপ্রার্থী অসীম সরকার, কাস্তে হাতুড়ির পদপ্রার্থী নীরব খাঁ। ওয়াকিবহাল মহলের প্রাথমিক সমীক্ষা বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্র ও বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।