|
---|
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ সন্তানের মতো ভাগ্নেকে মানুষ করছিলেন মামি। সেই ভাগ্নের সঙ্গে মামির বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের মিথ্যে অপবাদ দেয় শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। সহ্য করতে না পেরে কীটনাশক পান করে প্রথমে আত্মঘাতী হয় ভাগ্নে। পরে ভাগ্নের মৃত্যুর খবর পেয়ে আত্মঘাতী হন মামিও। ভাগ্নের মৃত্যুর জন্য মামিকে দায়ী করা হয়। তা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছেন নেন তিনিও একই পরিবারের দু’জনের মৃত্যুতে চাঞ্চল্য মোথবাড়ি থানা এলাকায়। স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির ৪ জনের নামে অভিযোগ দায়ের। ঘটনার পর থেকে পলাতক অভিযুক্তরা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত মামি প্রতিমা মন্ডল(২৩) ও ভাগ্নে টোটন মন্ডল(১৫)। মোথাবাড়ি থানার গঙ্গাপ্রসাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের আম্রিতলার কুট্টিটোলা গ্রামে বাড়ি তাঁদের। ননদ গীতা মন্ডলের ছেলে টোটন। গীতা দীর্ঘদিন ধরে মা টুনটুনি মন্ডলের বাড়িতে থাকেন। খুব ছোট অবস্থায় টোটনকে নিয়ে গীতা বাপের বাড়ি চলে আসেন। তাই টোটনকে পুত্রসম পালন করতে থাকেন প্রতিমা। প্রতিমার স্বামী অভিযুক্ত শিবু মন্ডল মজুরের কাজে মুম্বাইয়ে রয়েছে। ভাগ্নের মৃত্যুর খবর পেয়ে সে রওনা দিয়েছে। প্রতিমা ২ ছেলে-মেয়ে। মেয়ে বছর আটেকের পল্লবী ও ছেলে বছর তিনেকের রাজ। নিজের ছেলেমেয়ের সঙ্গে ভাগ্নে টোটনকেও বড় করে তুলছিলেন তিনি। এদিকে দিন পনেরো আগে ভাগ্নের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের মিথ্যে অপবাদ দেয় শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। এমনকী প্রতিমাকে মারধরও করা হয়। এ ক’দিন ধরে চলে মানষিক ও শারীরিক নির্যাতন। মামির ওপর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে টোটন সোমবার সকালে কীটনাশক পান করে। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মালদা মেডিক্যালে নিয়ে আসা হয়। দুপুরের দিকে তার মৃত্যু হয়। এদিকে ভাগ্নের মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হয় প্রতিমাকে। ওপার থেকে স্বামী ফোনে গালিগালাজ করতে থাকে। এমনকী বাড়িতে এসে তাঁকে দেখে নেওয়ার কথা বলতে থাকে। অন্যদিকে, শাশুড়ি-সহ ভাসুর, জা মিলে ভাগ্নের মৃত্যুর জন্য তাঁকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে থাকে। সহ্য করতে না পেরে হাসপাতাল চত্বরেই কীটনাশক পান করেন তিনি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতাল চত্বরে পড়ে থাকতে দেখে সিভিক ভলেন্টিয়াররা তাঁকে ভর্তি করেন। সন্ধের দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত প্রতিমার দিদি রাখি চৌধুরি অভিযোগ করে বলেন,‘বোন ছেলের মতো ভালবাসত তাঁর ভাগ্নেকে। তাদের সম্পর্কটাকে ভাল চোখে দেখে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। মিথ্যে অপবাদ দিয়ে গন্ডগোল বাধাতে চেয়েছিল ওরা। এই ঘটার জেরে দু দুটি মৃত্যু ঘটল পরিবারে। ওদের মৃত্যুর জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই দায়ী।’ থানায় স্বামী শিবু-সহ শাশুড়ি টুনটুনি মন্ডল, ভাসুর টিঙ্কু মন্ডল ও জা কবিতা মন্ডলের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনার পর থেকে পলাতক অভিযুক্তরা বলে জানিয়েছে মোথাবাড়ি থানার পুলিশ।