উদার আকাশ ঈদ-শারদ উৎসব সংখ্যা ১৪২৭ সংগ্রহ করুন সমৃদ্ধ হবে মনের আকাশ

 

    বিশেষ প্রতিবেদন,নতুুন গতি: বহু ভাষা ও বহু ধর্মের দেশ এই ভারত। এই দেশের মূল্যবান সংস্কৃতির টানে বহির্দেশ থেকে বহু মানুষ এখানে এসেছেন এবং এদেশের সংস্কৃতির মেলবন্ধনে বাঁধা পড়েছেন। এখানে অনন্ত সম্প্রদায়ের সহবাস চলছে। সংস্কৃতির কাজ হল এই বহুত্বের মধ্যে সমন্বয় সাধন। তাকে স্মরণে রেখে “উদার আকাশ” যে কাজ করেছে, তা সেই সংস্কৃতির সমন্বয় সাধনের কাজ। এই মুহূর্তে আমাদের দেশে যে সন্ধিক্ষণ চলছে তা সত্যিই ভাবায়। এমন সময়ে উদার আকাশ ঈদ-শারদ উৎসব সংখ্যা প্রকাশ সত্যিই উল্লেখযোগ্য একটি পদক্ষেপ। উদার আকাশ ঈদ-শারদ উৎসব সংখ্যা ১৪২৭ প্রকাশ করেন প্রখ্যাত লেখক ও পুরাণ-রামায়ণ-মহাভারত-গবেষক-শিক্ষাবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী। একটি অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে লেখক তাঁর ঢাকুড়িয়ার বাসভনে এই পত্রিকাটির উদ্বোধন করেছিলেন ১৭ অক্টোবর ২০২০, শনিবার। তাঁর হাতে এই পত্রিকাটি তুলে দেন উদার আকাশ পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমেদ, সহ-সম্পাদক মৌসুমী বিশ্বাস ও রাইসা নূর।

    “উদার আকাশ পত্রিকার ঈদ-শারদ উৎসব সংখ্যার উদ্বোধন উপলক্ষে ১৭ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মাননীয় পুরাণ-গবেষক ড. নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী বললেন, “আমার নিজের সবসময়ের ধারণা যে এই ধরণের পত্রিকা কিম্বা বই-আমি সেটাকে খুব সমর্থন করি। আজকাল ভারতবর্ষে যে মুহূর্তগুলো চলছে এখন, এগুলো আমার কাছে খুব হন্তারক সময় বলে মনে হয়। প্রত্যেকে প্রত্যেকের সঙ্গে হিংসা দ্বেষ-এগুলো নিয়ে তো আছে। কিন্তু ভারতবর্ষ এমনই একটা দেশ যেটা Mutilingual, Multireligious-সেরকম জায়গায় শত শত হাজার হাজার বছর ধরে এখানে সেরকমভাবে চলছে। এখানে যেমন Brahminism ছিল, Buddhism ছিল, তেমনি নাথ সম্প্রদায়েরা ছিলেন, শৈব সম্প্রদায়েরা ছিলেন, আছেন অনন্ত সম্প্রদায়, তাঁরা সহবাস করেছেন। যেখানে তাঁরা বিদেশ থেকে এসেছিলেন তৎকালীন দিনে, তাঁদেরও অনেকদিন এদেশে হয়ে যাওয়ায় আমি মনে করি তাঁরা আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পূর্ণ মিশে গেছেন। আমরাও মিশেছি, তাঁরাও মিশেছেন। এটা দেওয়া নেওয়ার একটা সম্পর্কের মধ্যে দাঁড়িয়েছে। হানাহানি যখন ছিল-সেসব রাজনৈতিক হানাহানি-সে তো থাকেই, যখন তখন সেগুলো উপস্থিত হয়। কিন্তু সংস্কৃতির কাজ হল সেটাই যেটা Ultimately এমন একটা জায়গায় পৌঁছয়-আমরা দেখছি যে একটা No man’s land-এ আসে। আকবর মোগলের সময় দেখেছি আমরা যে হিন্দবিভাষা চালু হয়েছে সেখানে, পার্সিয়ানেট এবং সংস্কৃত এসব মিলে একটা হিন্দবিভাষা চালু হয়েছে এবং It has been a feature of the Mughal core that the ব্রজভাষা যেটা It has been the quote language of the Mughals, কাজেই এটা একটা খুব বড় Important ব্যাপার যে সংস্কৃতির ক্ষেত্রে সব সময়ই কিন্তু দেওয়া নেওয়া হয়। রাজনীতির হানাহানির কথা আমি বলতে পারব না। সেগুলো চলে, সেগুলো চলতে থাকে। কিন্তু তারই অন্তরালে এই যে সংস্কৃতির আদান প্রদান এমন একটা Consolidated জায়গায় এসে দাঁড়ায় যেখানে আমরা একজন আরেকজনকে অস্বীকার করতে পারি না। আমার মনে হয় উদার আকাশ-যেখানে ওরা ঈদ এবং শারদ সংখ্যা করছে একসঙ্গে, সেটা সম্প্রীতির উদাহরণ কথাটা খুব ক্লিশে, আমি মনে করি সাংস্কৃতিক সমন্বয়ের উদাহরণ এটা, এটা আমার কাছে খুব ভালো লাগছে।”

    বিশ্বজোড়া করোনাকালীন দুর্যোগের মধ্যে যখন বহু স্বনামধন্য পত্রিকা ছাপাখানার মুখ দেখতে পাচ্ছে না, কিম্বা অনেকেই অনলাইনে পিডিএফ ফর্মাটে দায় সারছেন তখন স্বমহিমায় আরও বৃহৎ কলেবরে দুই বাংলার উল্লেখযোগ্য লেখকদের সঙ্গে নতুন প্রতিভাবানদের লেখা সযত্নে দু’মলাটের মধ্যে তুলে ধরে প্রকাশিত হয়েছে উনিশ বছরের ঐতিহ্যশালী ‘উদার আকাশ’ পত্রিকাটি।

    উভয়বঙ্গের প্রায় ১৬৩ জন সাহিত্য-যোদ্ধার প্রবন্ধ, সাক্ষাৎকার, ভ্রমণ, গল্প, কিতাব চর্চা, কবিতা সহ একাধিক বিষয় নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে উদার আকাশ বিশেষ সংখ্যাটি।

    ৩৩টি প্রবন্ধ, ২১টি গল্প, ৯৪টি কবিতা, ৩টি অনুবাদ কবিতা, ছড়া, একটি সাক্ষাৎকার ও ২টি স্মরণ। এছাড়াও রয়েছে ‘উদার আকাশ’-এর বিগত দুটো সংখ্যা নিয়ে এম. সদর আলীর লেখা পাঠ প্রতিক্রিয়া, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশতজন্মবর্ষ পূর্তি উপলক্ষ্যে ছড়ার মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি, মানবসেবা সংক্রান্ত প্রতিবেদন, আধুনিক বাংলা কবিতা : স্বপ্ন সম্ভাবনা সংক্রান্ত সুবোধ সরকারের তুখোড় আলোচনা। অবশ্য-পাঠ্য লেখাটি সঙ্কলন ও সংযোজনা করেছেন অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়। কবিতার ভুবনে এই আন্তর্জালিক বক্তৃতামালার সমৃদ্ধ প্রয়াস নিঃসন্দেহে এক সার্থক আয়োজন।

    ২৫৬ পৃষ্ঠার উদার আকাশ ঈদ-শারদ উৎসব সংখ্যায় পরতে পরতে রয়েছে সাহিত্য-রসে টইটম্বুর প্রয়াস। সাহিত্য সংস্কৃতির বিকাশ অব্যাহত রাখতে ভাঙড় এলাকার ঘটকপুকুর থেকে নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে পত্রিকাটি। উদার আকাশ প্রকাশন উদার জীবনের অন্বেষণে পাঠককে সমৃদ্ধ করেছে ইতিমধ্যেই। ঈদ-শারদ বিশেষ সংখ্যায় কলম ধরেছেন বহু প্রখ্যাত কবি, সাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক। এই সংখ্যা যাদের লেখায় সমৃদ্ধ হয়েছে তাঁরা হলেন প্রবন্ধে ফারুক আহমেদ, বাসব চৌধুরী, চন্দ্রপ্রকাশ সরকার, খাজিম আহমেদ, জয়ন্ত ঘোষাল, সুমন ভট্টাচার্য, মনিরুল ইসলাম, মীরাতুন নাহার, মইনুল হাসান, জহির-উল-ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, তৈমুর খান, আবু রাইহান, আবেদা সুলতানা, সাইফুল সেখ, মনিরুদ্দিন খান, গোলাম রাশিদ, প্রদিতি রাউত প্রমা, শেখ মকবুল ইসলাম, বাহারুল হক, রিফাত আহমেদ, খন্দকার মাহমুদুল হাসান, মোহাম্মদ শামসুল আলম, শান্তনু মন্ডল, শান্তনু প্রধান, শুভেন্দু মন্ডল, সৈয়দ মাজহারুল পারভেজ, সুজাউদ্দিন সেখ, শিবরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, একরামূল হক শেখ, অরূপ চন্দ্র প্রমুখ।

    ইতিহাস গবেষক জাহিরুল হাসান-এর একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সম্পাদক ফারুক আহমেদ। সদ্য প্রয়াত ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে স্মরণ বিভাগে আলোকপাতও করছেন সম্পাদক।

    এই সংকলনে কবিতা লিখেছেন সুবোধ সরকার, জহর সেনমজুমদার, নাসের হোসেন, মুহম্মদ মতিউল্লাহ্, পাবলো শাহি, তুষার ভট্টাচার্য, গোলাম রসুল, সৌমিত বসু, অংশুমান কর, এবাদুল হক, তাজিমুর রহমান, আবদুস শুকুর খান, গৌরীশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়, পিয়াস মজিদ, কামরুল বাহার আরিফ, রাজন গঙ্গোপাধ্যায়, নরেশ মন্ডল, আশিস সান্যাল, অমল কর, হান্নান আহসান, আসাদুল্লা আল গালিব, নাসিম-এ-আলম, সুব্রতা ঘোষ রায়, হীরক বন্দ্যোপাধ্যায়, নাহার আহমেদ, সুখেন্দু বিকাশ মৈত্র, চৈতি চক্রবর্তী, দীনমহম্মদ সেখ, কুশল চক্রবর্তী, আজহারুল ইসলাম, রুচিরা চক্রবর্তী, সেখ ওয়াসিম গুল, সায়নী চক্রবর্তী, নাফিসা খান, মোনালিসা রেহমান, শিল্পী মাহমুদা, মো: আমানুল্লা মোল্লা, মো: হুমায়ুন কবীর, মৃগাঙ্ক গুহ, মৌমিতা ঘোষ, রোকেয়া দীপা, আযাদ কামাল, প্রবীর ঘোষ রায়, কাশিনাথ মজুমদার পিংকু, নিলুফা ইয়াসমিন, আরফিনা, বাদল মেহেদী, সৌরভ আহমেদ সাকিব, চন্দ্রলেখা কর্মকার, ফিরোজ আলি আবির, আনোয়ার কামাল, নিজামুদ্দিন মন্ডল, সোনালী ঘোষ, বিবেকানন্দ বসাক, শেলী সেনগুপ্তা, মনিরুল ইসলাম, নিয়াজুল হক, ইলা দাস, মো: আব্দুল হাফিজ, জালালউদ্দিন আহম্মেদ, দর্পণা গঙ্গোপাধ্যায়, অয়ন চৌধুরী, আবদুর রব খান, পিনাকী চট্টোপাধ্যায়, মিঠুন মন্ডল, এস হজরত আলি, বিশ্বজিৎ মন্ডল, তাহমিনা কোরাইশী, সৈকত ঘোষ, মাহমুদ কামাল, মহম্মদ বাকীবিল্লাহ মন্ডল, মোহিনীমোহন সরকার, রবীন্দ্রনাথ রায়, প্রদীপ গঙ্গোপাধ্যায়, পার্থ রাহা, ঝুমা সরকার, সোমা মজুমদার, রাজকুমার শেখ, মুজিবর রহমান, রতন বোস, লোকমান হোসেন পলা, সংঘমিত্রা মুখার্জি, দেবাশিস সাহা, নুরুল আমিন বিশ্বাস, লিটন রাকিব, অশোক পাল, নাহারফরিদ খান, হাসনাইন সাজ্জাদী, কুশল ভৌমিক, সরকার মাহবুব, চৈতালী বসু, গৌর নস্কর, প্রিয়াঙ্কী দাস, রাজু মন্ডল, নূপুর পান্ডে, সোহিনী রায়, সরফরাজ আলি, এম এ ওহাব, তরুণ কুমার চৌধুরী প্রমুখ।

    একটি দীর্ঘ কবিতা লিখেছেন লালমিয়া মোল্লা।

    এছাড়া ছড়ায় বিদ্যাসাগর স্মরণ করেছেন আনসার উল হক, স্বপন পাল, ইভা চক্রবর্তী, জ্যোতির্ময় সরদার, চন্দন নাথ।

    সাধারণ ছড়া বিভাগে আছেন পঞ্চমী গোল ও শঙ্কর কুমার চক্রবর্তী।

    অনুবাদ কবিতায় আছেন অমিতাভ চক্রবর্তী ও কবিরুল ইসলাম কঙ্ক।

    অসাধারণ ভালো গল্প লিখেছেন মঈন শেখ তাঁর গল্পের নাম ফসল, মাসউদ আহমাদ, দীপক সাহা, কুমারেশ চক্রবর্তী, সামশুল আলম, অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৈয়দ রেজাউল করিম, রোকেয়া ইসলাম, সোনিয়া তাসমিন খান, অংশুমান রায়, দেবাশিস মজুমদার, সৈয়দ মাজহারুল পারভেজ, শামসুন নাহার, তানবির কাজি, কুশল মৈত্র, রফিকুল নাজিম, মোশারফ হোসেন, হারাধন চৌধুরী, প্রত্যুষা সরকার, তুহিনা মন্ডল, মনসুর আলী গাজী। গল্প বিভাগ পাঠক দ্বারা সমাদৃত হয়েছে।

    বিবিধ বিভাগে মানব সেবায় শিস্-এর ভূমিকা নিয়ে লিখেছেন মৌসুমী বিশ্বাস, সংস্কৃতি সংবাদ পরিবেশন করেছেন রিন্টু আহমেদ।

    ওয়েবনিয়ার-এ উদার আকাশ আন্তর্জাতিক আন্তর্জালিক বক্তৃতামালায় ‘আধুনিক বাংলা কবিতা : স্বপ্ন ও সম্ভাবনা’ নিয়ে সুন্দর বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন কবি সুবোধ সরকার।

    পত্রিকাটির প্রচ্ছদ, ইলাস্ট্রেশন ও অঙ্গসজ্জা নিপুণ হাতে করেছেন প্রখ্যাত শিল্পী সারফুদ্দিন আহমেদ। অঙ্গসজ্জায় আর একজন সহযোগী ছিলেন গৌরগোপাল ভৌমিক।

    উদার আকাশ প্রকাশন উদার জীবন অন্বেষণে আত্মপ্রকাশ। ইতিমধ্যে পাঠক দ্বারা সমাদৃত হয়েছে উদার আকাশ পত্রিকা ও প্রকাশনের বহু উল্লেখযোগ্য প্রয়াস। উদার আকাশ পত্রিকার বিশেষ সংখ্যাটি দুই বাংলার মানুষের মনে দাগ কাটলে আমাদের প্রয়াস সার্থক। জানালেন, সম্পাদক ফারুক আহমেদ। মিশ্র সংস্কৃতি আমাদের অর্জিত বৈভব এবং কাশফুলে বারুদের গন্ধ আমাদের ভাবায় এই বিষয়ে সম্পাদকীয় লেখা হয়েছে।

    উদার আকাশ ঈদ-শারদ উৎসব সংখ্যা ১৪২৭ সংগ্রহ করতে কল করুন ৭০০৩৮২১২৯৮ এই সংখ্যাটির মূল ১৫০ টাকা।